আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার দুষ্টামি বেলার বান্দর কাহীনি - ০২

এতটুকু বুঝি জীবনের কাছে আবেগ নস্যি। দুষ্টামি বেলায় বয়স যখন চার হতে যাচ্ছে তখন বিবিসি বাংলার মতই কড়কড়ে বাংলা বলতাম যে যা বলত তাই কপি করর্তাম উল্টা করেই তাকে বলতাম(বিশেষ করে অপরিচিতদের)। তখন বড়বোন আর কাজীন-রা মিলে স্কুলে যেত এটা দেখে আমার খুব ইচ্ছা হত ওদের সাথে স্কুলে যাওয়ার, এই জন্যে ওরা স্কুলে যাওয়ার সময় খুব জ্বালাতন করতাম ছেলের এই স্কুল প্রেম দেখে আম্মা আপুকে বলল আমাকে ওদের সাথে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন? কিন্তু আমার বোন তার পাজী ভাইকে সঙে নিতে রাজী হয় না কিন্তু আপুর একটা বান্দবী বলল নিয়ে চল আমরা সবাই মিলে দেখে রাখব এটা শুনার সাথে সাথেই বোনের হাত ছেড়ে তার বান্দবীর হাত ধরে বসলাম মনে মনে বললাম আহারে দুনিয়ার সব মেয়েগুলার দিল যদি এমন হত। স্কুলে গিয়েতো মনে হচ্ছে মেয়েদের ফ্যাক্টরিতে গেলাম(প্রাথমিক ও উচ্ছ মাধ্যমিক বিদ্যালয় একই সাথে ছিল)বড় আপুরা দেখি নাক টিপে-গালে ছুয়ে আদর শুর করল এত আদর দেখতো আমি খুশিতে মনে মনে গান ধরলাম(জন্ম আমার ধন্য ওগো গার্লস স্কুলে এসে, আপুরা আমায় নাক টিপিয়ে-গাল ছুয়ে দেয় অধিক ভালবেসে)চলমান গানের মধ্যেই বেরসিক দপ্তরি ঘন্টা বাজালো আর সাথে সাথে সবাই ক্লাসের দিকে দৌড় দিল আমার দু নয়ন ওই সময় এই ঘন্টার শব্দ কোনদিক থেকে আসতেছে সেটা দেখতে ছিলাম , দেখলাম এক লোক বারান্দায় ঝুলানো গোলাকার একটা থালার উপর অনবরত হাতুড়ী পেটাচ্ছে তার পর হাতুড়ীটি পাশে রাখা চেয়ারের উপর রেখে চলে গেল। এ দিকে আমাকেও আমার বোনরা টেনে ক্লাসের মধ্যে নিয়ে গেলো ক্লাস টিচার আসল রুল কল শুরু করল সবাই দেখি একের পর এক ইয়েস ম্যাম বলতে লাগল এটা দেখে কিছুক্ষন পর আমার মধ্যেও উত্তেজনা এসে পড়ল আমিও কয়েক জনের রুল কল দিয়ে দিতে থাকলাম এমন সময় ম্যাডাম হাজীরা খাতা থেকে চোখ তুলে বললেন একই রুল কল দুজন দাও কেন? কোন দু-জন ইয়েস ম্যাম বলছ দাড়াও যার রুল সে দাড়ালো সাথে আমাকেও দাড় করিয়ে ম্যাডাম জিজ্ঞেস করে এই ছেলে তুমি কে? তোমাকে-তো ছিনলাম না.. আমি উল্টাইয়া বললাম এই মেয়ে তুমি কে? তোমাকে-তো ছিনলাম না।

এটা শুনে পুরো ক্লাস হাসিতে ফেটে পড়ল সবার হাসি দেখে ম্যাডাম ও হাসতে শুরু করলেন। কিছুক্ষন পর আবার সে ঘন্টা বাজল সাথে সাথে এই ম্যাডাম চলে গেলেন। এরপর আসলেন একজন বুড়ো শিক্ষক উনি বোর্ডে কি লিখে এটার উত্তর সবাইকে লিখতে দিয়ে আরামে ঝিমাইতে শুরু করলেন:, আবার সেই ঘন্টার আওয়াজে বুড়ো শিক্ষক চমকে উঠলেন জানতে চাইলেন সবার লেখা হয়েছে কিনা? এর পর আবার অন্য শিক্ষক আসলেন কিন্তু আমার ধ্যান-জ্ঞান তখন ঘন্টা নিয়েই ছিল কি এমন আছে যার আওয়াজ শুনেই সবাই ক্লাসে আসে আবার স্যার রা ক্লাস থেকে চলে যায় ভাবতে ভাবতে আবার ঘন্টা বাজল সবাই দোড়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেল বিরতিতে সব মেয়ে গুলো কত খেলাদুলা শুরু করল আর আমি আস্তে আস্তে ঘন্টার কাছে গিয়ে দেখলাম কিভাবে এটা বাজানো যায় দেখলাম খুব সহজ চেয়ারের উপর রাখা কাঠের হাতুড়ী দিয়ে মারলেই হবে তবে আমাকে চেয়ারের উপর উঠে দাড়াতে হবে খুব ইচ্ছে ছিল হাতে কলমে করে দেখার কিন্তু এত মেয়েদের সামনে সাহশ হচ্ছিল না। বিরতির পর আবার ঘন্টা বাজল ক্লাস শুরু হল এবার একজন ম্যাডাম আসলেন অনেক সুইট ম্যাডাম আমার মাথায় হাত দিয়ে আদর করলেন, নাম জানতে চাইলেন আমিও আবার তার নাম জিজ্ঞেস করতে ভুলি নাই ম্যাডাম আমার কথা শুনে মুগ্ধ ঘন্টা বাজার পর আমার বোনদের কাছ থেকে আমাকে চেয়ে নিলেন গল্প করার জন্য। ম্যাডামের সাথে অফিস রুমে গেলাম আরো দুইটা স্যার ছিল ওখানে সবাই মিলে এটা সেটা জিজ্ঞেস করা শুরু করল কিন্তু আমার মনে তখনো নিজ হাতে ঘন্টা বাজানোর খায়েশ আকু-পাকু কর্তেছিল।

তাঁদের সাথে গল্পে আমার অনীহা দেখে তারা নিজেরাই নিজেদের কোন বিষয় নিয়া ক্যাচাল শুরু করলেন, এদিকে আমি অফিস রুম থেকে বের হয়েই দেখি একটু দুরেই ঘন্টাটা ঝুলানো হাতুড়ীটি চেয়ারের উপর রাখা এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখি কেউ নেই(মনে মনে বলিলাম আমি পাইলাম মোক্ষম সুযোগ পাইলাম) আর দেরি না করেই চেয়ারের উপর উঠে কাঠের হাতুড়ী দিয়া ক্লান্তিহীন ভাবে গোলাকার পিতল খন্ডটির উপর মারতে লাগলাম আহা কি সুন্দর আওয়াজ হচ্ছে, এদিকে লম্বা ঘন্টার আওয়াজ শুনে সব মেয়েরা বই খাতা নিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে দৌড় দিল এটা দেখেতো আমি আরো হাসতে ছিলাম এরই মধ্যে দপ্তরী-আর শিক্ষকদের দৌড়া-দৌড়ি শুরু হয়ে গেল বিনা নোটিশে ২ ঘন্টা আগে স্কুল কিভাবে ছুটি হয়?? অবশেষে হাতুড়ী হাতে আমায় দেখে কিছু সময়ের জন্য তারা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়লেন (হয়তবা মনে মনে বাহ বাহ দিয়েছিল ২ ঘন্টা আগে সবার ছুটি মঞ্জুর করায়)আর আমি বিজয়ী সৈনিকের মত চেয়ার থেকে নেমে বোনদের খুজতে লাগলাম। আমার দুষ্টামি বেলার বান্দর কাহীনি : ০১ Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.