মৃত্যুপরবর্তী জীবন ও স্বর্গ সম্পর্কিত বিশ্বাসকে রূপকথা আখ্যা দিয়েছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং।
হকিং-এর বিবেচনায় এসব হচ্ছে মৃত্যুভীতিতে আক্রান্ত মানুষের বানানো গল্প।
বিখ্যাত ও আলোচিত গ্রন্থ 'অ্যা ব্রিফ হিস্টোরি অব টাইম'র লেখক স্টিফেন হকিং স¤প্রতি লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশিত হয়।
দূরারোগ্য মটর নিউরন রোগে আক্রান্ত ৬৯ বছর বয়সী হকিং বলেন, "যে মুহূর্তে মস্তিষ্কের কার্যক্রম থেমে যায় সেই মুহূর্ত থেকে আর কিছুই থাকে না"।
হকিং ২১ বছর বয়স থেকে ওই রোগে ভুগছেন।
তিনি বলেন, "অল্প বয়সে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আমি ৪৯ টি বছর পার করেছি। মৃত্যু ভয়ে আমি ভীত নই, কিন্তু দ্রুত মারা যাওয়ার কোন তাড়াও আমার নেই। এমন অনেক কিছুই আছে যা মৃত্যুর আগেই আমি করতে চাই"।
"আমি মস্তিষ্ককে কম্পিউটার হিসেবেই বিবেচনা করি, যার যন্ত্রাংশগুলো নষ্ট হয়ে গেলে কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
নষ্ট কম্পিউটারের কোন পরকাল নেই, কম্পিউটারের জন্য কোন স্বর্গও অপেক্ষা করছে না; পরকাল-স্বর্গ এগুলো অন্ধকারকে ভয় পায় এমন লোকদের জন্য তৈরি রূপকথা", বলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে হকিং মৃত্যুপরবর্তী জীবনের ধারণা বাতিল করে দেন। মৃত্যু নিয়ে ভীত না হয়ে জীবনের সামর্থ্যকে পরিপূর্ণরূপে বিকশিত করে এর অর্থপূর্ণ ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
কি উদ্দেশ্যে আমরা বেঁচে থাকবো- এমন প্রশ্নের উত্তরে হকিং বলেন, "আমাদের কর্মদ্যোগের মহান তাৎপর্য অনুধাবনের চেষ্টা করা উচিত"।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বিজ্ঞানের সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলেন।
যেমন ডিএনএ'র অপরূপ নিখুঁত দ্বিসূত্রক (ডাবল হেলিক্স) গঠন অথবা পদার্থ বিজ্ঞানের মূলগত প্রশ্নগুলোর বিস্ময়।
"বিজ্ঞান ধারণা দেয় শূন্য (কিছু না) থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন ধরনের মহাবিশ্ব তৈরি হচ্ছে। এর কোনটায় আমরা থাকব এটা একটা সম্ভাবনার ফলাফল", বলেন তিনি।
হকিং বলেন আধুনিক মহাশূন্য ভিত্তিক যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি'র প্ল্যাঙ্ক মিশন হয়তো এই মহাবিশ্বের প্রাথমিক মুহূর্তগুলো উন্মোচিত করতে পারবে। আর এর ফলে এটিও জানা যাবে কিভাবে আমাদের এ মহাবিশ্ব নিঃসীম মহাশূন্যের মাঝে স্থান করে নিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।