good
স্বৈরতন্ত্র, গণতন্ত্র এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটে-পুটে খাবার সুবিধার্থে চোর-লুটেরা শ্রেণী কর্তৃক উদ্ভাবিত ও প্রবর্তিত কিছু মতবাদ ও পদ্ধতি। প্রকৃতপক্ষে জনগণকে বোকা বানিযে় রেখে জনগণের সম্পত্তি চুরি করে খাবার জন্য এগুলো একই generic group-এর কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন নামের এক একটি কৌশলমাত্র। কার্যক্ষেত্রে, এগুলোর মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই।
যে সিস্টেমে একজনমাত্র লোক রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটে-পুটে খাবার সুযোগ পায় তাকে স্বৈরতন্ত্র বলে। অন্যদিকে, গণতন্ত্র হচ্ছে সেই সিস্টেম যে সিস্টেমে লুটপাটের সুযোগটা ৩০০ বা তার থেকে কিছু বেশী পরিমাণ লোকের নিকট অবারিত হয়।
তামাকে কর না বসাতে ২০০ এমপির তদবির স্বৈরতন্ত্রে জাতি (বা, জনগণ) একজন লোক কর্তৃক ধর্ষিত হয়। গণতন্ত্রে জাতি গণধর্ষিত (gang raped) হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও গণতন্ত্রের ক্যানভাসারগণ কর্তৃক সুগার-কোটেড মিষ্টি বডি় গেলানো পাবলিক সন্তুষ্ট থাকে এই আত্মতৃপ্তিতে যে,‘‘একটু ধর্ষণ করছে করুক না, এরপরেও ক্ষমতার চাবিরগোছাটা তো আমার হাতেই রযে়ছে। ’’
বাস্তবে ক্ষমতার চাবিরগোছাটা রাজার ধনভান্ডারের প্রহরী বা দ্বাররক্ষীদের মত জনগণের কাছে থাকে ঠিকই, কিন্তু জনগণ যে চাবিটা যতন করে পাহারা দিযে় রাখে সে চাবি দিযে় খুলে ধনভান্ডারের ভিতরে প্রবেশের অধিকারও কোনোদিন পায়না, ধনভান্ডারের ধন উপভোগ করবার ভাগ্য তো পরের কথা। কি লাভ দেশে গণতন্ত্র এলে? কি লাভ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ভোট দিলে? কি লাভ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় এলে? আগেও যেমন লুটপাট হযে়ছে, এখনও তেমন হচ্ছে।
লুটপাটের শিকারই যখন হব, ধর্ষণের শিকারই যখন হব তখন সে লুটপাট, সে ধর্ষণ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির দাবীদাররাই করছে নাকি অন্যরা করছে তা দেখে আমাদের কি লাভ? নাকি ভিলেন অপেক্ষা নায়ক ধর্ষণ করলে কষ্ট কম পাওযা় যায় ? (নায়ক যদি ধর্ষণ করে তবে সে আর নায়ক থাকে কি? সেও তো আরেক ভিলেন হযে় যায়। ) কি লাভ এমন গণতন্ত্র দিযে়? গণতন্ত্রের শত্রূ বলে ঘোষিত ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীনের আমলে ৮৭০০০ হাজার পরিক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১টি টাকাও খরচ না করে সম্পূর্ণ মেধার উপর ভর করে সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরীতে ঢুকেছিলাম। আর স্বাধীনতা আর গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির দাবীদার বর্তমান সরকারের আমলে নিযো়গ পরীক্ষায় কি হচ্ছে? কিছু পরীক্ষার প্রশ্ন আগেই ফাঁস হযে় যাচ্ছে (যেমনঃ রুপালি ব্যাংক-এর সিনিয়র অফিসার নিযো়গ পরীক্ষা, অফিসার নিযো়গ পরীক্ষা, কাস্টমস ইন্সপেক্টর নিযো়গ পরীক্ষা) । আবার কিছু পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এমন উদ্ভট প্রশ্ন দিযে় ভরে রাখা হচ্ছে যে, যারা আগে থেকে চ্যানেল করে প্রশ্নপত্র কিনতে না পারছে তারা ছাডা় অন্য কারো পক্ষে সে প্রশ্নে answer করে ৩০/৪০ পাওযা়ই কঠিন হযে় যাচ্ছে। যার জ্বলন্ত উদাহরণ, বিমানে জুনিয়র ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে সাম্প্রতিক নিযো়গ পরীক্ষা (http://www.somewhereinblog.net-এ ‘লুলু পাগলা’র ব্লগে গেলে এ প্রশ্নপত্রটি পেতে পারেন;---এমন আজব এমন উদ্ভট প্রশ্ন দিযে় প্রায় পুরোটা প্রশ্নপত্র ভরে রাখা হযে়ছে যে, যা দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে যে লোক আগেই নিযে় নেযা় হযে়ছে।
) তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রশ্ন এমনভাবে করা হচ্ছে যে, S.S.C., H.S.C. পরীক্ষার মত তাতে সবাই ৮০-এর উপরে করে নাম্বার পাচ্ছে। (যেখানে প্রধানমন্ত্রী নিজে অভিযোগ করেন, তাদের ছেলেরা যেন না টেকে সেজন্য ইচ্ছাকরে নাকি পরীক্ষার প্রশ্ন কঠিন করা হচ্ছে সেখানে এমন প্রশ্ন না করে উপায় কি ?) ফলে দশ হাজার পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষা দিলে প্রায় ছয় হাজারই মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাক পাচ্ছে। লিখিত পরীক্ষার নাম্বার কাছাকাছি হওযা়য় এরপর মৌখিক পরীক্ষার সময় দলীয় প্রার্থী বা পছন্দের প্রার্থীদের টাকা নিযে় নিযো়গ দেযা় অত্যন্ত সহজ হচ্ছে।
যেমন, BIWTA-তে সহকারী পরিচালক পদে আবেদন করেছিল প্রায় ৭০০০-এর মত। লিখিত পরীক্ষায় ৮০%-এর বেশী উপস্হিত হয়নি।
তাতে ৫৬০০-এর মত পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেযা়র কথা। অথচ প্রায় ২৭০০-এর মত পরীক্ষার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য টেকানো হযে়ছে। Bankers Recruitment Committee-তে আমার ছোটভাই ২০০৮-এ পরীক্ষা দিযে় চাকরি পেযে়ছিল। সেখানে ৮৭০০০-এর মত প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিলেও VIVA-এর জন্য ডাকা হয় ৩০০০-এরও কিছু কম প্রার্থীকে। BIWTA-তে সহকারী পরিচালক পদে ৬টি ক্যাটাগরীতে প্রতিটিতে ৬জন করে সর্বোচ্চ মোট ৩৬টির মত পোস্টে নাকি নিযো়গ দেযা় হতে পারে।
৩৬টি পদের ১০গুণ টেকালেও VIVA- এর জন্য ৩৬০ জন প্রার্থীর বেশীজনের টেকার কথা নয়। অথচ টেকানো হযে়ছে প্রায় ২৭০০-এর মত পরীক্ষার্থীকে। অর্থাৎ যে নাম্বার পর্যন্ত না টেকালে নিজেদের প্রার্থী বা দলীয় প্রার্থীরা VIVA কার্ড পাবেনা সেই নাম্বার পর্যন্ত টেকানো হযে়ছে। (অদূর ভবিষ্যতে এমনভাবে প্রশ্ন করা হবে যে, লিখিত পরীক্ষার অংশ নেযা় সবাই ১০০তে ১০০ করে পাবে; কোনো প্রার্থীই বাদ পড়বেনা VIVA-র ডাক পাওযা় থেকে। যে দেশে মন্ত্রী আর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা দলীয়করণের প্রকাশ্যে ঘোষণা দিযে় লোক নিযো়গ শুরু করে সেদেশে এর থেকে ভাল কী আশা করা যেতে পারে? )
পাচঁ-ছয় হাজার প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষায় থেকে যদি VIVA-এর জন্য ২৭০০-ই টেকে বা টেকানো হয় তাহলে কি লাভ এমন লোক দেখানো প্রহসনের লিখিত পরীক্ষা নিযে়? সমস্ত আবেদনকারীর শুধু মৌখিক পরীক্ষা নিযে় টাকার বিনিমযে় সরাসরি পছন্দের বা দলীয় প্রার্থীদের নিযো়গ দিলেই কি বেশী ভালো হত না? কি লাভ এভাবে শুধু শুধু হয়রানি করে? সচিবালযে়র দুটি নির্ভর যোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছি যে, কাদের নেযা় হবে সেটা নাকি ইতিমধ্যেই চূডা়ন্ত করা হযে় গেছে।
তাই সিদ্ধান্ত নিলাম প্রহসনের VIVA পরীক্ষাই আর দিতে যাবনা।
শালার একটা সরকারও জনগণের সরকার হলোনা। সবচেযে় দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির দাবীদাররাও জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসে অন্যদের মতই প্রথম ছুরিটা জনগণের গলায়ই বসায়। হায়,আমরা কি এমন একটা সরকারও পাবনা, যে সরকারের আমলে কোনোরকম আর্থিক লেনদেন ছাডা়, কোনোরকম তদবির ছাডা় শুধু মেধার ভিত্তিতে গরীব-ধনী সকলের ছেলেরা চাকরি পাবে? (কযে়কদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে নির্লজ্জভাবে এক মিটিংযে় বলেছিলেন যে, কোনো প্রার্থীর পক্ষে সুপারিশ করাকে বা ডিও লেটার দেযা়কে তিনি অন্যায় বলে মনে করেন না। মাননীয় মন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন--আপনারা কার চাকরি ডিও লেটার দিযে় কাকে দিতে চান? সরকারি একটা শূন্যপদের মালিক দেশের ষোল কোটি জনগণ; ষোল কোটি জনগণের তাতে অধিকার আছে মেধা, যোগ্যতা ও নির্ধারিত বয়সের ভিত্তিতে টিকলে তাতে নিযো়গ পাবার।
সরকারি চাকরি কি আপনার বা আপনাদের পৈত্রিক সম্পত্তি যে যাকে ইচ্ছা তাকে দিযে় দিবেন,নাকি এভাবে দেযা়র কোনো অধিকার আপনাদের আছে?) আমরা কি এমন একটা সরকারও পাবনা, যে সরকারের আমলে মন্ত্রীদের ডিও লেটারের ভিত্তিতে একটা ছেলেরও চাকরি হবে না, বরং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো মন্ত্রী (বা সচিব) কর্তৃক ডিও লেটার দেযা় হযে়ছে বা সুপারিশ করা হযে়ছে এমন প্রমাণ পাওযা় গেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা সচিবের চাকরি চলে যাবে? আমরা কি এমন একটা গণতন্ত্র পাবনা, যে গণতন্ত্রে কোনো সরকার তার দেশের কোটি কোটি মানুষের অধিকার গণিমতের মালের মত নিজেরা ভাগাভাগি করে নিবেনা বা টাকার বিনিমযে় বিক্রি করে দিবে না? বোধ হয় না। কেননা আমরা যে বিভক্ত হযে় রযে়ছি, আমাদের যে বিভক্ত করে রাখা হযে়ছে বাংগালী আর বাংলাদেশীতে, জয় বাংলা আর বাংলাদেশ জিন্দাবাদের কুটকৌশলে । যতদিন পর্যন্ত না আমরা লুটেরাদের লুণ্ঠনের সুবিধার্থে উদ্ভাবিত এইসমস্ত কুটকৌশল চিনতে পারব, এইসমস্ত কুটকৌশল ছিডে় বেরিযে় এসে এক হতে পারব ততদিন আমরা লুণ্ঠিত হতেই থাকব।
সূত্র: কি লাভ দেশে গণতন্ত্র এলে? কি লাভ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ভোট দিলে?
সমাধান:গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার চরম ব্যর্থ, এই মুহূতে খিলাফত প্রতিষ্ঠার করা দরকার,যা এদেশের জনসাধারণ মুক্তি আনবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।