আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির একচোট।

জানতে ভালোবাসি,...তাই প্রশ্ন করি...

‘বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু ৬৪ জেলায় বিচারকেরা সময়মতো এজলাসে বসছেন কি না, কী পরিমাণ মামলা তাঁরা নিষ্পত্তি করছেন, তা কে তদারক করছেন? বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ নিরসনের জন্য বিচার বিভাগ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ’ গতকাল শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে বিচারপতিদের জন্য তৈরি নতুন বহুতল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এ প্রসঙ্গে বিচার বিভাগের নানা সংকটের কথা তুলে ধরেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, বিচার বিভাগ হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটার মতো স্বাধীনতা পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন এবং আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি তাঁর দুই পাশে ছিলেন। অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী মামলাজটসহ বিচার বিভাগের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিচারকেরা ঢাকায় চলে আসার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাঁসফাঁস করতে থাকেন। ছুটি কাটিয়ে তাঁরা রোববার ফিরে গিয়ে দুপুর ১২টার আগে কাজ শুরু করতে পারেন না। ’ সময়মতো কাজ করলে প্রতিদিনই একেকজন বিচারক এক ডজন মামলার বিচার সম্পন্ন করতে পারতেন।

সমন জারি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিন মাসেও সমন জারি করা হয় না। আমরা বলব, এক সপ্তাহের মধ্যে সমন জারি করতে হবে। সমন জারির পর দুই মাসের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করতে হবে। ’ আইনমন্ত্রীর পর বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটার মতোই স্বাধীনতা পেয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মাননীয় আইনমন্ত্রী, আগে আপনার ঘর সামাল দেন। আপনার দায়িত্ব আগে পালন করেন। বিচারকেরা অবশ্যই তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ভবিষ্যতে করবেন। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের জাজ সাহেবদের গাড়ি নেই। রাস্তার মধ্যে গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়, গাড়ি ঠেলতেও হয়...এটা কি আইনমন্ত্রী জানেন? যাঁরা এসি রুমে বসে কাজ করেন তাঁরা বিচারকদের কষ্ট বুঝতে পারবেন না উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে গাউন গায়ে তাঁদের কাজ করতে হয়।

ঢাকার আদালতে চারজন ম্যাজিস্ট্রেটকে এক কক্ষে বসতে হয়। চারজন ম্যাজিস্ট্রেটকে একটি বাথরুম ব্যবহার করতে হয়। এসবের জবাব কে দেবে? প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আইনমন্ত্রী অনেক কথাই বললেন। কিন্তু আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকা ৩ লাখ ৫৫ হাজার মামলা থেকে কমিয়ে দুই লাখ ৯১ হাজারে নামিয়ে আনলাম, সে কথা তো তিনি বললেন না। আইনমন্ত্রী কি জানেন আমাদের বইপত্রের অপ্রতুলতা আমি কত কষ্ট করে সমাধান করেছি?’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের যে কোনো গাফিলতি নেই তা ঠিক না।

আমাদেরও গাফিলতি আছে। এ জন্য আমি আমার বিচারপতি বন্ধুদের বারবার বলেছি, খালি রুল ইস্যু করলে হবে না। রুল ইস্যুর অর্থ হচ্ছে, একটি নতুন মামলার সৃষ্টি হলো। নতুন মামলার নিষ্পত্তি কে করবে, আপনাদেরই করতে হবে। ’ তিনি বলেন, ‘মাননীয় আইনমন্ত্রী যাই বলুন না কেন, আমাদের জজ সাহেবরা অত্যন্ত পরিশ্রম করেন আমি নিজে দেখেছি।

তবে একজন হয়তো দুজনের কাজ করতে পারেন। ১০ জনের কাজ তো আর করা সম্ভব নয়। আপনি ম্যানপাওয়ার (লোকবল) বাড়ান। সুযোগ-সুবিধা বাড়ান। বিচারকদের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

অন্তত দ্বিগুণ করতে হবে। আর না হলে কোনো দিনই এ মামলাজট শেষ করা সম্ভব না। ’ আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যে মামলাজটের কথা বললেন তা কোনো দিনই সমাধান হওয়ার নয়। সময় দেখলে হবে না। ন্যায়বিচার করতে হবে, ইনসাফ করতে হবে।

শুধু সাফ করলে হবে না। ’ কে যে ভাই উচিত কথাটা বললো বুঝলাম না। আপনারা কেউ একটু ক্লিয়ার করবেন আমাকে। প্ররথম আলুতে পড়েন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.