যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
একটা প্রায় প্রাগৈতিহাসিক স্বপ্ন ছিলো ক্যারিবিয়ান কোনো দ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার। জানতাম ইহজনমে সম্ভব নয়। অথচ কাকতালীয়ভাবে ক্যারিবিয়ার থেকেও দূরে দক্ষিণ আমেরিকার একেবারে শেষ প্রান্তের দেশ পাবলো নেরুদার চিলিতে যাবার সৌভাগ্য হলো গত বছর। আগে মানে দশ বছর আগে হলে এমন সুযোগের ঘ্রাণ পেলেও একটা লাফ দিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলতাম। লম্ফন ছাদ স্পর্শ করতো বলে।
কিন্তু এখন তেমন কিছু ঘটলো না। ধরে নিয়েছিলাম যাওয়া সম্ভব আলটিমেটলি হবে না। পাসপোর্ট নেই, চিলির এ্যাম্বাসী নেই, সবচেয়ে বড় কথা নতুন অফিসে সহজে ছুটি পাবো কিনা তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই।
ফলে ঠিক এক বছর আগের মে মাসের ৪ তারিখ যখন দুবাই থেকে ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে এমিরেটসের ফ্লাইট সকাল দশটার একটু পরে আকাশে চড়ল এবং চোখের সামনে দেখলাম অপসৃয়মাণ দুবাইকে - কেবল তখনই মনে হলো, হু - তাহলে যাচ্ছি! আফ্রিকা ছাড়িয়ে, আটলান্টিক ছাড়িয়ে। দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়িয়েও বলা যায়।
কারণ চিলি তো সেই শেষ প্রান্তে!
প্রকৃতপক্ষে দুবাইয়ে পৌঁছেও মনে হয়নি সত্যিই ভিসা ছাড়া এক-খন্ড পত্রের উপরে নির্ভর করে দুবাই ইমিগ্রেশন প্লেনে উঠতে দিবে। সে পত্রখানি আবার স্প্যানিশে রচিত এবং যার বর্ণমালাও জীবনে দেখি নাই। তবে জিয়ার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ততক্ষণে আমি নিজেকে স্প্যানিয়ার্ড বানিয়ে ফেলেছি। দেখলাম, কেউ-ই যখন জানে না, তখন অনায়সে অনুবাদক হওয়া যায়। ইমিগ্রেশন জিজ্ঞেস করা মাত্র সেই দুর্বোধ্য পত্রখানি গরগর করে অনুবাদ করে দিলাম।
চিলির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে যে তারা আমাকে অন এরাইভাল ভিসা দেবার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। লেখাটা হয়তো তেমনই ছিলো, যদি পড়ে শোনাতে বলতো - প্লান করেছিলাম বাংলায় একটা কবিতা আবৃত্তি করে শোনাবো। নিশ্চিত ছিলাম ওতেও চলতো।
যখন আরবের মরুভূমি পার হয়ে লোহিত সাগরের উপরে বিশাল মেঘের রাজ্যে হারিয়ে গেলো প্লেন - এক চোট দীঘল হাসির সাথে আমিও যেন হারিয়ে গেলাম আকাশের গহীন গভীরে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।