আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাকাশ নিয়ে চলচ্চিত্র

বুকের ভেতর বহু দূরের পথ...
গত ১২ এপ্রিল উদযাপিত হলো মহাকাশ বিজয়ের পাঁচ দশক। ১৯৬১ সালের সেই দিনে অজানা ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে মহাশূন্যে প্রথমবারের মতো পাড়ি জমিয়েছিল মানুষ। মহাকাশ জয়ের এক দশকের মধ্যেই মানুষ অবতরণ করে চন্দ্রপৃষ্ঠে। আর আজ মহাকাশ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে মানুষ স্বপ্ন দেখছে পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে বসতি গড়ার। এত রোমাঞ্চকর একটি বিষয় আর তা হলিউডের রূপালি পর্দায় উঠে আসবেনা তা কেমনকরে হয়! গত ৫০ বছরই হলিউড বাস্তবতা আর কল্পনার মিশেল ঘটিয়ে উপহার দিয়েছে মহাকাশবিষয়ক দুর্দান্ত কিছু চলচ্চিত্র।

সেরকম ছয়টি চলচ্চিত্র নিয়ে এ আয়োজন- ২০০১-এ স্পেস ওডিসি (১৯৬৮) ২০০১ সাল আমরা পেরিয়ে এলেও ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ঘটনা নিয়ে এ ছবি তৈরি হয় আরও প্রায় ৪৫ বছর আগে। চাঁদের পৃষ্ঠদেশে একখণ্ড শিলা খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। একটি প্রজন্ম এ শিলার রহস্য উদঘাটনে জীবনবাজি রাখেন। আর এ অভিযানে তাদের প্রধান শত্রু তাদের নিজস্ব সৃষ্টি- কম্পিউটার। বিশ্বনন্দিত সায়েন্স ফিকশন লেখক আর্থার সি ক্লার্কের সাড়া জাগানো 'ওডিসি' সিরিজের এ পর্বটি রূপালি পর্দায় তুলে ধরেন ক্যামেরার জাদুকর স্ট্যানলি কুবরিক।

আর্থার আর কুবরিক দু'জনে মিলেই ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেন। ছবিটি ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বিভাগে অস্কার জেতে। স্টার ট্রেক সিরিজ ১৯৬৬-৬৯ সালের জনপ্রিয় টিভি সিরিজ স্টার ট্রেক সর্বপ্রথম রূপালি পর্দায় আসে ১৯৭৯ সালে। এখন পর্যন্ত এ চলচ্চিত্রটির ১১টি পর্ব নির্মিত হয়েছে। ১২তম পর্বটিও নির্মাণাধীন।

১৯৮৭-৯৪-এ সময়ের মধ্যে আবারও টিভি সিরিজটির সিক্যুয়াল নির্মিত হয়। স্টার ট্রেক_ দি নেক্সট জেনারেশন নামে সিরিজটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। স্টার ওয়ারস সিরিজ জর্জ লুকাসের এ সিরিজটি মহাকাশ নিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। ১৯৭৭ সালে সিরিজটির প্রথম পর্ব 'স্টার ওয়ারস : এ নিউ হোপ' মুক্তি পায়। এরপর একে একে মুক্তি পায় 'দি এম্পায়ার স্ট্রাইকস ব্যাক' [১৯৮০] এবং 'রিটার্ন অব দ্য জেড আই' [১৯৮৩]।

১৯৯৯ সালে এসে চলচ্চিত্রটির প্রিক্যুয়েল 'দি ফ্যান্টম মেনেস' নির্মিত হয়। এরপর ২০০২ সালে 'অ্যাটাক অব দ্য ক্লোনস' এবং ২০০৫ সালে সিরিজটির শেষ পর্ব 'দি রিভেঞ্জ অব দ্য সিথ' মুক্তি পায়। এলিয়েন সিরিজ একটি গ্রহে পৃথিবীর এক নভোযানের আরোহীরা এলিয়েন কর্তৃক আক্রান্ত হয়। তাদের রুখতে ও নভোচারীদের সাহায্যার্থে বিজ্ঞানীরা আরেকটি দল পাঠায়। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এ সিরিজটি বিভিন্ন সময়ে পরিচালনা করেন রিডলি স্কট, জেমস ক্যামেরনসহ অনেকে।

১৯৭৯ সালে রিডলি স্কট পরিচালিত এলিয়েন ছবির পোস্টার ১৯৮৬ সালে জেমস ক্যামেরন পরিচালিত এলিয়েনস ছবির পোস্টার অ্যাপোলো ১৩ (১৯৯৫) চন্দ্র বিজয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় তিন নভোচারী। যাত্রাপথে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চাঁদে অবতরণ সম্ভব হয়না। উল্টো তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। শুরু হয় তাঁদের পৃথিবীতে ফিরে আসার যৃদ্ধ। একটা সময়য় মনে হয় নভোচারী দল আর ফিরে আসতে পারবেনা।

টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এ চলচ্চিত্রটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। জিম লোভেল ও জেফ্রি ক্লাজার রচিত ‌'লস্ট মুন' বইটি অবলম্বনে এ সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রটি তৈরি করেন রন হাওয়ার্ড। চলচ্চিত্রটি ৯টি বিভাগে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে ২টি বিভাগে জিতে নেয়। জিম লোভেলের ভূমিকায় টস হ্যাঙ্কস ছাড়াও চলচ্চিত্রটিতে বিলি প্যাক্সটন, কেভিন বেকন, এড হ্যারিসের মত তারকারা অভিনয় করেন। ওয়াল-ই (২০০৮) পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য এ অজুহাতে মানুষ মহাশূন্যে পাড়ি জমায়।

যাওয়ার সময় ওয়াল-ই নামের আবর্জনা সরানোর জন্য ব্যয়বহুল একটি রোবটকে ফেলে রেখে যায়। এ রোবটই একদিন মহাশূন্যে পাড়ি জমায়। মানুষের মানবিক দিক যে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে দুটো যন্ত্রমানব দিয়ে সে বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে অস্কারজয়ী এই অ্যানিমেটেড ছবিতে। (২১ এপ্রিল ২০১১ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।