সকল মৌলিক লেখার সত্ত্ব লেখকের ।
মহাকাশ সম্পর্কে আমার ভাবনা
(কবিতা লেখা বাদ দিয়ে, ক’দিন ধরে মহাকাশ সম্পর্কে ভাবছিলাম। ষ্টিফেন হকিং এর “ব্রীফ হিষ্ট্রি অব টাইম” বইটির কিছুটা অংশও এর মাঝে আবার পড়া হলো। এই ক’দিনে আমার মাঝে যে ধারনা জন্ম নিলো তা নিয়ে এই পোষ্ট। এ সম্পর্কে যারা আমার চেয়ে আরো ভালো ধারনা রাখেন, অবশ্য আওয়াজ দেবেন, নিজস্ব ওপিনিয়ন জানাবেন।
)
আইনষ্টাইনের অপেক্ষবাদ কে মেনে নিলে মানব জাতির পক্ষে এমন কোন স্পেস শীপ তৈরি করা কোনদিন সম্ভব হবেনা যে স্পেস শীপের গতি আলোর গতির চেয়ে বেশি হবে। কেননা পদার্থ বিদ্যার নিয়মানুসারে আলোর গতির চাইতে আর কোন দ্রুত গতি হতে পারেনা। আর আলোর গতি হচ্ছে প্রতি সেকেণ্ডে এক লাখ ছিয়াশি হাজার মাইল।
আমাদের পৃথিবীর Escape Velocity বা মুক্ত গতি হচ্ছে প্রতি সেকেণ্ডে সাত মাইল। অর্থাৎ প্রতি সেকেণ্ডে সাত মাইল বেগে যদি কোন বস্তু উর্ধ্বে নিক্ষেপ করা হয় সেটা আর কখনো পৃথিবীতে ফিরে আসবেনা।
আমরা চাইলে প্রতি সেকেণ্ডে সাত মাইল গতির কোন যান দিয়ে পৃথিবীর বাইরে ভ্রমন করতে বেরুতে পারি। তবে সে যান সূর্য্যের নিকঠতম নক্ষত্র Proxima Centauri তে পৌঁছতে লাগবে কয়েক হাজার বছর। মহাবিশ্বের দূরে কোথাও যাবার চিন্তা করা বৃথা।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সৌরজগতের বাইরের অন্য কোন নক্ষত্রের চারিদিকে ঘুর্নায়মান কোন গ্রহে যদি যেতে চাই, সেটা কি কখনো সম্ভব হবে? না সম্ভব হবেনা, কোনদিন ও সম্ভব হবেনা। কারন আলোর গতি সম্পন্ন কোন শীপ কখনো তৈরি করা সম্ভব হবেনা।
যদি কখনো আমরা আলোর গতি সম্পন্ন কোন স্পেস শীপ তৈরি করতে পারি আর সেটা যদি এই পৃথিবী থেকে লাঞ্চ করতে যাই। সেই স্পেস শীপ লাঞ্চের সময় নিউটনের তৃতীয় সুত্র অনুসারে যে পিছু ধাক্কা দিয়ে যাবে, তাতে পৃথিবী সম্পূর্ণ কক্ষচ্যুত হয়ে যাবে।
সূর্য্যের নিকঠতম নক্ষত্র Proxima Centauri র দুরত্ত্ব হচ্ছে সাড়ে চার আলোক বর্ষ। আর ১০ আলোক বর্ষের ভেতর কোন নক্ষত্রের সঙ্গি কোন গ্রহই নেই। কমপক্ষে ৫০ আলোক বর্ষের ভেতরে কোন বাস যোগ্য গ্রহের খোঁজ পাবার আশাও করা যায়না।
আমরা যদি আলোর গতি সম্পন্ন কোন স্পেস শীপ তৈরি করে ও ফেলি আর সেটা লাঞ্চ করতেও সক্ষম হই সেই যান নিকঠবর্তী কোন গ্রহে পৌঁছতে সময় লাগাবে ৫০ বছর। তার মানে পুরো একটা সক্ষম জীবন। সক্ষম জীবন মানে, জীবনে বেশির ভাগ মানুষ ৫০ বছরের বেশি সক্ষম থাকেনা।
এই পর্য্যন্ত বিজ্ঞানীদের মেনে নেয়া সিদ্ধান্ত মতে Observable universe এর সীমা ৯৩ বিলিয়ন আলোক বর্ষের কাছাকাছি অর্থাৎ সেখানে আলোর গতিতে যেতে লাগবে ৯৩০০ কোটি বছর। তাহলে এই যে বছরের পর বছর ধরে কার্ল সাগান বা অন্যান্য বিজ্ঞানীদের যে স্বপ্ন দেখানো লেখা পড়ে আসছি অথবা আইজাক আসিমভের মতো সায়েন্স ফিকশন লেখকদের লেখা পড়ে আসছি, তার কি কোন বাস্তব ভবিষ্যত নেই? উত্তর হবে না।
মানব জাতি শত শত বছর পরে এই সৌরজগত কোন প্রকারে পেরুতে পারলেও মিল্কিওয়ে গ্যলাক্সির একটা স্পাইরাল রিং এর ক্ষুদ্র একটা অঞ্চলেও পৌঁছতে পারবেনা।
সৈয়দ নূর কামাল
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।