আকার বা আকৃতিতে বিএনপি দলীয় হলেও প্রকৃত অর্থে একটি জাতীয় সরকার গঠনের চিন্তা আছে বিএনপির। দলটি ক্ষমতায় গেলে বিএনপির দলীয় কাঠামোর মধ্যে নেই এমন নেতৃস্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে রাষ্ট্র পরিচালনায় কাজে লাগাতে চায়। এজন্য শাসনতান্ত্রিক কাঠামো পরিবর্তন করে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের পক্ষে তারা। পাশাপাশি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ফজলে হাসান আবেদের মতো ব্যক্তিকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। অনুরোধে রাজি হলে এ দুজনকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ বা বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে।
এছাড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পাশাপাশি প্রশাসনকে প্রকৃত অর্থে বিকেন্দ্রীকরণের ইচ্ছা রয়েছে দলটির। পাশাপাশি অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ন্যায়পাল নিয়োগ, সরকারি কর্মকর্তাদের ওএসডির বিধান বাতিলসহ ইতিবাচক নানা উদ্যোগ রয়েছে দলটির বিবেচনায়।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতায় যেতে পারলে পরিবর্তনের রাজনীতির উচ্চাভিলাষী এমন বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপির ভেতরে এখন কাজ চলছে। দেশে-বিদেশে দলীয় সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী একটি বুদ্ধিজীবী গ্রুপ এ সংক্রান্ত একটি খসড়া তৈরিতে হাত দিয়েছে। এছাড়া সুশাসনের বিষয়ে কাজ করে পেশাগত এমন দুএকটি সংস্থারও পরামর্শ নেয়া হচ্ছে।
সূত্রের দাবি, খালেদা জিয়ার নির্দেশনাতেই এ সংক্রান্ত কাজ এগোচ্ছে। ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম বছরে এসব পরিকল্পনা সামনে রেখে সভা-সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে জনমত যাচাই করা হবে। আর জনমত পক্ষে গেলেই কেবল এসব বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে বাস্তবায়ন নিয়ে দলের বড় অংশের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। কিছু ইস্যুতে ইতিমধ্যে দলের মধ্যে বিতর্কও শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, পরিবর্তনের রাজনীতি বিএনপি অবশ্যই শুরু করতে পারবে। তিনি বলেন, দেশের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে তাদের অভিজ্ঞতাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় কাজে লাগানো হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ জানান, নতুন ধরনের সরকার ব্যবস্থা বলতে বিএনপি চেয়ারপারসন প্রতিহিংসার রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও বিরোধী দলকে নিষ্পেষণ বন্ধ ও বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ না করার কথা বুঝিয়েছেন।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে দলের সিনিয়র একজন সংসদ এগুলোকে অলীক স্বপ্ন বলে অভিহিত করে বলেন, আমরা এক কক্ষই সামলাতে পারছি না আবার দ্বিকক্ষ!
তবে খালেদা জিয়ার পরিবর্তনের রাজনীতির এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত একজন বুদ্ধিজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সংস্কারের এসব বিষয় নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বিএনপি নেত্রীর দফায় দফায় আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত তার যে মনোভাব তাতে আশাবাদী হওয়ার মতো ব্যাপার আছে।
তার মতে, শেষ না করতে পারলেও এসব উদ্যোগ শুরু করে যেতে চান খালেদা জিয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।