আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি।
পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। বাঙ্গালীর সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নববর্ষের ঐতিহ্যে লালিত হয়ে আসছে দীর্ঘকাল ধরে। এইদিনে বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফুটে ওঠে গ্রাম বাংলার রুপ লাবণ্যে চিত্র। তেমনি নববর্ষ উপল্েয আরেক চিত্র দেখা যায় ত্রিপরা আদিবাসীদের মাঝে।
উৎসবের আমেজে বাংলা নববর্ষের আগমেণে ত্রিপুরা আদিবাসীরা পালন করে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। যার নাম বৈসু উৎসব বা হারি বৈসু। ওইদিন ত্রিপুরা নারীরা ১০৮ প্রজাতির লতাপাতা ও ফলমূল সংগ্রহ করে বাড়িতে রান্না করে নিজেদের পাশাপাশি অতিথিদেরও আপ্যায়িত করে থাকে।
বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭ হাজার ত্রিপুরা আদিবাসী বসবাস করছে। বৈশাখের আগমণে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বাংলা সালের চৈত্র মাসের শেষদিন এরা বৈসু উৎসব পালন করে থাকে।
বলতে গেলে এই উৎসব তাদের জন্য একটি প্রধান উৎসব।
হারি বৈসুর দিনে ত্রিপুরা আদিবাসীরা পুরোনো বছরের সব গ্লানি ভূলে গিয়ে নতুনের আহ্বানে মেতে ওঠে। ত্রিপুরা আদিবাসীর নারী পুরুষ সকলেই ওইদিন রঙ বেরঙের পোষাক পরিধান করে থাকে। নারীরা দলে দলে দালক (শাবসবজি) সংগ্রহের জন্য লাংগা (ঝুড়ি) নিয়ে হাসিখুশিতে মনের আনন্দে ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ে। দালক সংগ্রহের জন্য তাদের গ্রামের আশেপাশে ঝোপঝারে খোঁজতে থাকে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও ফলমূল।
ওইদিন অল্প অল্প করে মোট ১০৮ প্রজাতির লতাপাতা ও ফলমূল সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে একসাথে রান্না করে থাকে। পরে ঘরোয়া পরিবেশে অতিথিদের সাথে বসে সকলে একসাথে তা খেয়ে থাকেন।
১০৮ প্রজাতির দালকের মধ্যে ত্রিপুরা আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় যেমন মুইচিং (বাজরাং পাতা), ওরাই, সামছাতা (থানকুনি পাতা), কেংকু ঢেকি শাক), থাবুচুক বিলাই (শিমুল আলু পাতা), গানডুরই (বন ডুগি) ইত্যাদি। শুধুমাত্র হারি বৈসু’র দিনেই তারা এসব রান্না করে খেয়ে থাকেন। তাদের বিশ্বাস বনৌঔষধি হিসেবে হারি বৈসুর দিনে দালক খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ মতা বৃদ্ধি পায়।
হারি বৈসুর দিনে ত্রিপুরা আদিবাসীদের যাদের আত্মীয় স্বজন হারিয়েছেন অর্থাৎ সেই মৃত ব্যাক্তিদের শেষ বিদায় অনুষ্ঠান করে থাকেন। তাদের আত্মীয় স্বজন এবং সমাজের বৃদ্ধ ব্যাক্তিরা ওই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। কতর বৈসু অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে নারী পুরুষ উভয়েই সকালে স্নান করে পবিত্র হয়ে কানে ফুল পড়ে আর হাতে ফুল নিয়ে ছোটবড় সবাই শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।