উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরার সাবেক রাজপরিবারের বাসস্থান আগরতলার উজ্জয়ন্ত প্যালেস। নাম বদল করে ত্রিপুরা রাজ্য মিউজিয়াম রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্যটির সরকার। আদিবাসী ও বাঙালিদের পাশাপাশি নাম পরিবর্তনের এই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন রাজপরিবারের বর্তমান উত্তরাধিকারী। বৃহস্পতিবার তিনি ঘোষণা করেছেন প্রাসাদের নাম বদল হলে তিনি নিজে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন।
আগরতলার কেন্দ্রে ১১২ বছরের পুরণো রাজপ্রাসাদ উজ্জয়ন্ত প্যালেসে কয়েকদিন পর থেকেই চালু হবে ত্রিপুরা রাজ্য মিউজিয়াম।
ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে মিউজিয়ামের নতুন প্রাঙ্গনের। কিন্তু ওই রাজপ্রাসাদটিকে ত্রিপুরা রাজ্য মিউজিয়ামে পরিচয় দেওয়ার সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে সেখানে।
প্রথমে ত্রিপুরার উপজাতিদের রাজনৈতিক সংগঠন আই এন পি টির প্রধান ও প্রাক্তন জঙ্গী নেতা বিজয় রাঙ্খল আর বৃহস্পতিবার রাজপরিবারের বর্তমান উত্তরাধিকারী প্রদ্যোৎ মানিক্য দেববর্মন নিজেই বামফ্রন্ট সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
আগরতলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের রাজপ্রাসাদ ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে ১৮৯৯ থেকে ১৯০১ সালে উজ্জয়ন্ত প্যালেস তৈরী করেন তৎকালীন মহারাজ রাধাকিশোর মাণিক্য। তখন থেকেই এই প্রাসাদ-ই ছিল প্রায় ৮০০ বছরের পুরণো মাণিক্য রাজপরিবারের শাসনকেন্দ্র।
ওই প্রাসাদের নামকরণ করেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। পরিবারের উত্তরাধিকারী প্রদ্যোৎ মানিক্য দেববর্মন বলছিলেন উজ্জয়ন্ত প্যালেসের নাম বাদ দেওয়া হলে ত্রিপুরার ঐতিহ্যও মুছে যাবে।
এদিকে, রাজ্য সরকার অবশ্য বলছে, তারা প্রাসাদের নাম বাদ দিচ্ছে না। যে উচ্চশিক্ষা দপ্তর মিউজিয়ামটির দায়িত্বে রয়েছে, তার সচিব কিশোর আম্বুলি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন যে ত্রিপুরা রাজ্য মিউজিয়াম, উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ– এইভাবেই ভবনটির পরিচয় দেয়া হবে।
বিশ্লেষকেরা অবশ্য এই বিতর্কের মধ্যে রাজনীতির আভাসও দেখছেন।
রাজপরিবারের সদস্যরা সক্রিয় কংগ্রেস নেতা। তাই বামফ্রন্ট সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য একাংশের।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।