মিসরে সেনাসমর্থিত সরকারের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে নতুন করে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকেরা। গতকাল সোমবার সকালে বিক্ষোভকারীরা কায়রোতে সেনা গোয়েন্দা সদর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দর অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান। তাঁরা দেশজুড়ে নিরাপত্তা ভবন ঘেরাও করতেও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে সেনাসমর্থিত সরকার সীমা লঙ্ঘন করলে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী ‘চূড়ান্ত ও কঠোর পদক্ষেপ’ নেবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুর বেসামরিক নাগরিকদের গ্রেপ্তারে সেনাবাহিনীকে অনুমতি দিতে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা দিয়েছেন।
মিসরের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ৩ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। তাঁকে পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানী কায়রোর নাসর সিটির রাবা আল-আদাউইয়া মসজিদের পাশে টানা অবস্থানসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভ করছে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যসহ মুরসির সমর্থকেরা। শনিবার পুলিশের গুলিতে কায়রোতে মুরসির অন্তত ৭২ জন সমর্থক নিহত হন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই মসজিদের কাছ থেকে বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। ওই আহ্বান উপেক্ষিত হওয়ার পর জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষদ গত রোববার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারের বাইরে কিছু করার চেষ্টা করলে তারা ‘চূড়ান্ত ও কঠোর পদক্ষেপ’ নেবে।
এই পরিষদের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুর ও সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষদের ওই সতর্কবাণীর পর মুরসির সমর্থক ইসলামপন্থী গ্রুপগুলোর জোট অ্যান্টি-ক্যু অ্যালায়েন্স এক বিবৃতিতে সোমবার রাতে দেশজুড়ে নিরাপত্তা ভবন ঘেরাও করতে বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানায়। বিবৃতিতে তারা মিসরীয়দের বিভিন্ন রাস্তা ও চত্বরে নেমে ‘রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের ছিনতাই হয়ে যাওয়া স্বাধীনতা ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার’র এবং ‘অভ্যুত্থানের বুলেটে নিহত শহীদদের অধিকার’ আদায়ের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়। এ ছাড়া মঙ্গলবার একসঙ্গে ‘১০ লাখ লোকের বিক্ষোভ’ অনুষ্ঠিত হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়। অ্যান্টি-ক্যু অ্যালায়েন্সের আহ্বানের পর গতকাল সকালেই মুরসির সমর্থকেরা কায়রোতে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সদর দপ্তর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ও বিমানবন্দর রোডের দিকে আলাদা মিছিল নিয়ে অগ্রসর হয়।
সেনাবাহিনীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে: অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুর বেসামরিক নাগরিকদের গ্রেপ্তারে সেনাবাহিনীকে অনুমতি দেওয়ার কর্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, রাবা আল-আদাউইয়া মসজিদের কাছে অবস্থান নেওয়া মুরসির সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এএফপি, বিবিসি ও আল জাজিরা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।