আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থ্রিডি মডেলিং এ্যান্ড এনিমেশন



শুরুর কথা একজন থ্রিডি মডেলার এবং এনিমেটর হতে হলে প্রথমে থ্রিডি বা থ্রি ডাইমেনশন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে হবে। একেবারে শুরুতে আমি প্রাথমিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি। পাঠকদের আগ্রহ থাকলে পরবর্তী পোস্ট থেকে কীভাবে সহজে থ্রিডি মডেল তৈরি করে তা এনিমেট করা যায় সেই বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে জানাবো। আপনার সামনে রাখা সাধারণ মানের কম্পিউটার দিয়েই আপনি কম দৈর্ঘের একটা এনিমেটেড মুভি যদি বানাতে পারেন তাহলে সমস্যা কোথায়? তাছাড়া, মডেল তৈরি ও এনিমেট করা শিখলে টিভি বিজ্ঞাপনের কিছু কাজও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে করতে পারবেন। মন্দ কী? আপনাদের আগ্রহ থাকলে আমি এগুলো পুরোপুরি ব্যবহারিক পদ্ধতিতে শেখানোর চেষ্টা করবো।

আগ্রহ না থাকলে এখানেই ইতি। থ্রি ডাইমেনশন বা থ্রিডি পরিবেশ থ্রিডি বা থ্রি ডাইমেনশন বা ত্রিমাত্রা_ যেভাবেই বলা হোক না কেন, এর মূল অর্থটা হলো, কোন বস্তু বা জিনিসের তিনটি মাত্রা থাকতে হবে। মাত্রাগুলো হলো দৈর্ঘ্য (Length), প্রস্থ (Width) আর উচ্চতা (Height)। থ্রি ডাইমেনশনাল সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে যেগুলোকে চিহ্নিত করা হয় X, Y এবং Z অক্ষের সাহায্যে। মনে করা যাক, আমাদের সামনে রয়েছে একটা দেয়াল_ সেই দেয়ালে সাঁটা আছে একটা রঙ ঝলমলে পোস্টার।

পোস্টারের বিষয়বস্তু একটা মোবাইল ফোন সেটের বিজ্ঞাপন। এটা একটা রঙিন ছবি হতে পারে। আমি ছবিটির দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পেলাম মোবাইল ফোনের সামনের অংশটি প্রদর্শিত হয়েছে। এবার আমি উক্ত ছবিটির পেছন দিকটা দেখতে চাইলাম। কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়।

কারণ ছবির পেছন দিকটা বলতে বোঝায় এই পোস্টারের উল্টো পিঠ অর্থাৎ সাদা কাগজ। এই ছবি দেখে আমরা স্কেল বা রুলার দিয়ে দৃশ্যমান মোবাইলটির উচ্চতা (Height) আর প্রশস্ততা (Width) বা প্রস্থের মাপ বের করতে পারি। কিন্তু পুরুত্ব বা ঘনত্ব বা দৈর্ঘ্যের (Length) মাপ বের করতে পারি না। যেহেতু এখানে ছবিটির শুধু উচ্চতা আর প্রশস্ততার মাপ নেয়া সম্ভব। সুতরাং এখানে মাত্রা আছে দুটো।

তাই অনায়াসে বলা যায় ছবিটি দ্বিমাত্রিক। এই কারণে আমি মোবাইল সেটটির পুরুত্ব বা ঘনত্ব কিংবা দৈর্ঘ্যের মাপ বের করতে পারব না। যদি এই মোবাইল সেটটি বাস্তবে আমার হাতে থাকতো তখন সেটা সম্ভব হতো। কারণ তখন আমি সেটার দৈর্ঘ্য (Length), প্রস্থ (Width) আর উচ্চতা (Height) এই তিনটি মাত্রা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে পেতাম। আমাদের বাস্তব জগত বা চারপাশের পরিবেশটা ত্রিমাত্রিক।

কারণ, দৃষ্টিসীমার মধ্যে অনেক বস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা দেখা বা পরিমাপ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব। তবে, আমরা শুধু সেইসব বস্তু বা জিনিসকে ত্রিমাত্রিক বলতে পারি যেগুলোর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চতা সম্পর্কে আমরা জানি বা জানার সুযোগ রয়েছে। যেমন একটি বস্তু আমরা হাতে নিয়ে তার সবগুলো তল বা পাশ দেখতে পারি। কিন্তু একটি ছবি হাতে নিয়ে তার সবগুলো পাশ দেখা সম্ভব নয়। কারণ, ছবিটি দ্বিমাত্রিক।

এক্ষেত্রে আমরা কল্পনার আশ্রয় নিয়ে ছবিটির অপর পাশ বা গভীরতা সম্পর্কে ধারণা করতে পারি। এই কারণে তৈরিকৃত থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক বিষয়গুলোকে বলা হয় কল্পনার সার্থক বাস্তবায়ন। মনে করা যাক, কম্পিউটারের কোন গ্রাফিক্স সফটওয়্যার ব্যবহার করে একটি মানুষের মডেল বা ছবি তৈরি করা কিংবা অংকন করা হয়েছে। এখানে মানুষটি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষের ছবিটি যদি দ্বিমাত্রিক হয় অর্থাৎ কম্পিউটারের থ্রি ডাইমেনশনাল সফটওয়্যার ব্যবহার করে তৈরি করা না হয়_ তাহলে আমরা কম্পিউটারটিকে ঘুরিয়ে পেছন দিকটা সামনের দিকে আনার পরও উক্ত মানুষের ছবির পেছন দিকটা দেখতে পাব না।

রেজাল্ট যা পাওয়া যাবে তা হলো মনিটরের পেছন দিকটা দেখতে পাবো। এক্ষেত্রে আমরা কম্পিউটারের পেছন দিকটা দেখতে পাচ্ছি_ কিন্তু ছবিটির পেছনের দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু, কম্পিউটারে তৈরিকৃত ছবিটি যদি ত্রিমাত্রিক বা থ্রি ডাইমেনশনাল কোন সফটওয়্যারে তৈরিকৃত হতো তাহলে কম্পিউটারের পর্দায় এই ছবিটিকে ঘুরিয়ে তার পেছন বা যে কোন পাশ দেখা সম্ভব হতো। ঠিক এভাবেই থ্রি ডাইমেনশনাল সফটওয়্যারে তৈরিকৃত কোন মডেলকে অনায়াসে যে কোন আঙ্গিকে দেখা বা দৃশ্যমান করা সম্ভব। একজন সার্থক মডেলার হতে হলে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে গোড়াতেই ভাল ধারণা রাখতে হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.