আমি নতুন কিছু পড়তে ভালবাসি
পিতার সম্পদে নারী-পুরুষের সমানাধিকার দেয়ার প্রস্তাব রেখে "নারী উন্নয়ন নীতি'২০১১"এর খসড়া মন্ত্রীসভা অনুমোদন করেছে। গত ৭মার্চ'২০১১ তারিখে সচীবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রীসভার বৈঠকে এটি অনুমোদিত হয়। মন্ত্রীসভায় জাতীয় নারী নীতি'২০১১ এর যে খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে তাতে পারিবারীক, সামাজিক পর্যায় ও কর্মেক্ষেত্রে সমানাধিকার নিশ্চিত করার ঘোষনা রয়েছে। উপার্জন, উত্তরাধিকার, ঋণ, ভূমি ও বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রনের অধিকার রাখা হয়েছে।
এই আইনের ফলে এখন পিতার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার হিসেবে ছেলে-মেয়ে সমান ভাগ পাবে।
অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে যে বিধান ছিল তা এখন লন্ড-ভন্ড হয়ে যাবে। কুরআনে বলা আছে মৃত পিতার সম্পত্তিতে মেয়ে যা পাবে তার দ্বীগুন পাবে ছেলে। অর্থাৎ একজন পিতার যদি একজন ছেলে আর দুইজন মেয়ে থাকে তাহলে দুইজন মেয়ে যা পাবে ছেলে একাই তা পাবে। কিন্তু এই নারী নীতি যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই সমান অংশের ভাগ পাবে। অথচ কুরআনে সম্পূর্ণ এর বিপরীত বিধান দেয়া আছে।
আর বর্তমান সরকার বলেছেন যে তাঁরা কুরআন বিরোধী কোন আইন করবেন না।
পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ১১ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন "আল্লাহ তায়ালা (তোমাদের উত্তরাধিকারে) সন্তানদের সম্পর্কে (এ মর্মে) তোমাদের জন্যে বিধান জারি করছেন যে, এক ছেলের অংশ হবে দুই কন্যা সন্তানের মতো, কিন্তু (উত্তরাধিকারী) কন্যারা যদি দু'য়ের বেশি হয় তাহলে তাদের জন্যে (থাকবে) রেখে যাওয়া সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ, আর (সে) কন্যা সন্তান যদি একজন হয়, তাহলে তার (অংশ) হবে (পরিত্যক্তসম্পত্তির) অর্ধেক, মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্যে থাকবে (সে সম্পদের) ছয় ভাগের এক ভাগ, (অপর দিকে) মৃত ব্যক্তির যদি কোন সন্তান না থাকে এবং পিতা-মাতাই যদি হয় (তার একমাত্র) উত্তরাধিকারী, তাহলে তার মায়ের (অংশ) হবে ছয় ভাগের এক ভাগ, (মৃত্যুর) আগে সে যে ওসিয়ত করে গেছে এবং তার (রেখে যাওয়া) ঋণ আদায় করে দেয়ার পরই (কিন্তু এসব ভাগ-বাটোয়ারা করতে হবে), তোমরা জানো না তোমাদের পিতা-মাতা ও তোমাদের সন্তান-সন্ততির মধ্যে কে তোমাদের জন্যে উপকারের দিক থেকে বেশী নিকটবর্তী, (অতএব) এ হচ্ছে আল্লাহর বিধান, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সকল কিছু সম্পর্কে ওয়াকেফহাল এবং তিনিই হচ্ছেন বিজ্ঞ, পরম কুশলী। "
কুরআনের এই বিধান কে উপো করে একটি মুসলিম দেশে যে নারী নীতি হতে যাচ্ছে তা যে কেউই মেনে নেবে না তা সরকারের বোঝা উচিত। কারন কুরআন সকল মুসলমানের অন্তরের সাথে সম্পর্কিত। এই আইন বাস্তবায়ন করতে গেলে আবার হিতে বিপরীত না হয়ে যায় সেই চিন্তা সরকারের থাকা দরকার।
সরকারের কেউ কেউ আবার বলছেন যে কুরআনের বিধানের সাথে এই আইন সাংঘর্ষিক নয়! অথচ তারা এর সঠিক কোন ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন না। ইতোমধ্যে তো এই আইনের প্রতিবাদে কোন কোন ইসলামী দল হরতালেরও ডাক দিয়েছেন, এরপরও যদি সরকার সঠিক ব্যাখা না দেন তাহলে দেশে যে সমস্যা তৈরী হবে এর দায়ভার কিন্তু সরকার কিছুতেই এড়াতে পারবেন না। তাই সরকারের উচিত হবে অতি দ্রুত একটা খোলা-মেলা সিদ্ধান্ত জনগনকে জানিয়ে দিয়ে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসা।
উপরে যে কুরআনের আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে তাতে আল্লাহ স্পষ্ট করে উত্তরাধিকারের ব্যাপারে কথা বলেছেন। এখানে তার আর ব্যাখ্যার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
এখন কথা হলো যেই আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করলেন তিনি মানুষের সমস্যা সম্পর্কে বেশি বোঝেন নাকি আমরা নিজেরাই নিজেদের ব্যাপার বেশি বুঝি। আমরা যদি আল্লাহর চেয়ে বেশি বা ততখানি বুঝতাম তাহলে নিত্য আইন পরিবর্তন করতে হতো না, এক আইন তৈরী করেই কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে রেখে দিতাম। যেহেতু মানুষের জ্ঞান স্বল্প এবং মানুষ সামনে যা আছে তাই নিয়ে চিন্তা করেই একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, ভবিষ্যতের কোন জ্ঞানই মানুষের নাই তাই সেখানে অনেক ভুল থেকে যায়, কয়েকদিন পরে সেটাকে বাতিল করে অন্য একটা আইন তৈরী করার জন্য উঠে-পড়ে লেগে যায়। কিন্তু আল্লাহ যেহেতু ভবিষ্যতেরও জ্ঞান রাখেন এবং তিনি কুরআনে যা লিখে দিয়েছেন তা সবসময়েই বর্তমান (অতিত বা ভবিষ্যৎ নয়) তাই তাঁর বিধান মত চললে সকল সমস্যারই সমাধান হতে বাধ্য। আল্লাহ কুরআনে যত কথাই বলেছেন তা সবই বিজ্ঞান সম্মত এবং আমাদের উপকারের জন্যই।
এমন একটা বিষয়ও কুরআনে খুঁজে পাওয়া যাবে না যেটা আমাদের জন্য অপকারী বা তিকর। আমরা হয়তো না বুঝে কুরআনের কিছু কিছু অংশের বিরোধীতা করে বসি, সেটা আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতা। আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতার জন্য তো আর কুরআনকে বা আল্লাহকে দোষারোপ করা মুদ্ধিমানের কাজ নয়। এই উত্তরাধীকারের ক্ষেত্রেও হয়েছে তাই। আল্লাহ কুরআনে যেটা বলেছেন সেটা আমাদের উপকারের জন্যই বলেছেন যে দুই মেয়ের সমান এক ছেলে পিতার সম্পত্তির ভাগ পাবেন।
এখন আসুন একটু বিশ্লেষন করে দেখি যে আল্লাহ যেটা বলেছেন তা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত (আমার ছোট্ট মাথায় যে চিন্তাটুকু এসেছে তার আলোকেই বলার চেষ্টা করছি)।
ধরুন আমার একজন বোন আছে অর্থাৎ আমার বাবার দুই ছেলে-মেয়ে। আমরা একসাথেই বড় হয়ে উঠছি। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমাদের বাবা আমাদেরকে লালন-পালন করেছেন, লেখা-পড়া শিখিয়েছেন, বড় করে তুলেছেন। এই সময়ের মধ্যে আমরা উভয়েই অনেকটা অসহায় ছিলাম বা বলতে গেলে পিতার উপর নির্ভরশীল ছিলাম।
কিছুদিন পরে আমার বোনটির বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারনে সে শ্বশুর বাড়িতে চলে গেল। তার বিয়ের সময়ে সে তার স্বামীর নিকট থেকে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের দেনমোহর পেল, বাবার নিকট থেকে সোনা-রুপা যা পাওয়ার তা পেল, মায়ের নিকট থেকেও কিছু পেল আর আত্মীয়-স্বজনের নিকট থেকে অনেক উপঢৌকন তো পেলই। এরপর আমার বিয়েতে আমি আমার স্ত্রীকেও সেই একই নিয়মে নির্দিষ্ট অঙ্কের দেনমোহর দিলাম কিন্তু আমার বোনের মত কিছুই পেলাম না। যদি আমার বোন বিয়ের সময় পেয়ে থাকে সব মিলিয়ে ন্যুনতম দুই ল টাকা, সেখানে আমাকে উল্টো খরচ করতে হল দুই ল টাকা। এক্ষেত্রে আমি আমার বোনের চেয়ে ন্যুনতম দুই ল টাকা কম পেলাম, আর আমার বোন আমার চেয়ে পেল দুই ল টাকা বেশি।
এখন আমার বোন চলে গেল তার শ্বশুর বাড়িতে। আরা আমি আমার স্ত্রী সহ থেকে গেলাম আমার নিজের বাড়িতে বা বাবার বাড়িতে। আমার বোন তার শ্বশুর বাড়িতে চলে যাওয়ার কারনে সে কিন্তু আমাদের পিতা-মাতার সকল দায়ভার থেকে মুক্ত হয়ে গেল আর আমার উপর সকল দায়ভার চেপে বসলো। এখন আমাদের পুরো সংসারটা আমাকেই দেখতে হবে। আমি যেহেতু আমার বাবার বাড়িতে থাকি সেহেতু বাবা-মার সকল প্রকার দেখাশোনা আমাকেই করতে হবে।
কিন্তু বিনিময়ে আমি আমার বাবার নিকট থেকে আমার বোনের চেয়ে তেমন কিছুই বেশি পাব না। যা বেশি পাওয়ার তা হলো ঐ এক টুকরা জমি। আর বাবার যদি জমি না থেকে থাকে তাহলে তো আরও কঠিন অবস্থা। এ অবস্থা থেকে কিন্তু আমি আমার বাবা-মায়ের সেবা করা থেকে দূরে থাকতে পারবো না। আর এ অবস্থায় যদি আমার বোন আমাদের বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন তাহলে তার ও তার স্বামীর উপযুক্ত সেবা তো আমাকে করতেই হবে।
অথচ এর বিনিময়ে আমাকে কিছুই দেওয়া হবে না। অর্থাৎ কোন বিনিময় ছাড়াই আমাকে তাদের সেবা করে যেতে হবে।
একদিকে আমাকে আমার পিতা-মাতার সার্বিক দিক দেখতে হচ্ছে, দেখতে হচ্ছে আমার স্ত্রী-ছেলে-মেয়েদের, আরও দেখতে হচ্ছে আমার ও আমার বোনের শ্বশুর বাড়ি থেকে আসা সকলের উত্তম সেবার ব্যাপারে। আর আমার বোনকে এগুলোর তেমন কিছুই দেখতে হচ্ছে না। যতটুকু দেখার তা দেখছে তার স্বামী।
অর্থাৎ আমার বোনের বিয়ের পর সে সকল দায়-দায়িত্ব থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত। আর আমার বিষয়টা তার সম্পূর্ণভাবে উল্টো। আমি সকল দায়ভারে যুক্ত। এরপরও কথা থেকে যায়। আল্লাহ না করুন কোন কারনে যদি আমার বোন তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা হয়ে যায় আর সে আমার বাড়িতে চলে আসে তাহলে তার সকল ব্যয়-ভার তো আমাকেই বহন করতে হবে।
আর তার যদি কোন ছেলে-মেয়ে থেকে থাকে তাহলে তাদেরও দেখা-শোনার ভার আমার উপরই এসে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মজার বিষয় হলো এর জন্য আমি তাদের নিকট থেকে বিনিময়ে কিছুই পাব না।
এতন থেকে অনেক প্যাচালই পাড়লাম। এখন মূল কথায় আসি। সরকার যেহেতু আইন করতে যাচ্ছেন যে পিতার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা ভাই বোন সম্পত্তির সমান অধিকার পাব, সেহেতু আমার বোনের বিয়ের পর সে তার শ্বশুর বাড়িতে যেতে পারবে না।
কারন আমি একাই আমার বাবা-মায়ের সেবা করবো কেন। সম্পত্তির ভাগ আমি যা পেয়েছি সেও তাই পেয়েছে। অতএব বাবা-মায়ের সেবা সে যতটুকু করবে আমিও তাই করবো, বেশি করার তো কোন প্রশ্নই উঠে না। আমি যেভাবে কাজ-কর্ম করে আমার পিতা-মাতার দেখ-ভাল করবো, তেমনি আমার বোনেরও সেই একই ভাবে কাজ-কর্ম করে পিতা-মাতার দেখ-ভাল করতে হবে। আর সে যদি তার শ্বশুর বাড়িতে চলে যায় তাহলে কখনই আর সে আমার বাড়িতে আসতে পারবে না।
আর আসলেও সাথে খাবার-দাবার নিয়ে আসতে হবে। আর সে যদি কখনও তালকপ্রাপ্তা বা বিধবা হয়ে যায় তাহলে পিতার নিকট থেকে পাওয়া সম্পত্তি ব্যবহার করার মাধ্যমেই সে তার সংসার পরিচালনা করবে, কখনই আমার বাড়িতে এসে উঠতে পারবে না। তার ছেলে-মেয়েদের দেখা-শোনার দায়িত্বও আমি নিতে পারবো না বা নিবো না।
এককথায় পিতার সম্পত্তিতে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা হলে ভাই-বোনের মধ্যে আর ভাল বলে কোন সম্পর্ক থাকবে না। বিশেষ করে পিতা-মাতার ইন্তেকালের পরে ভাই-বোনের সম্পর্কটা সম্পূর্ণরুপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
বর্তমানে আমাদের সমাজ যত সুন্দরভাবে চলছে তখন আর এই সুন্দর স্বাভাবিকভাবেই থাকবে না। একজনের সাথে আরেকজনের সম্পর্ক হবে হিংসার। কেউ কারো ভাল দেখতে পারবে না। আমরা ভাই বোন উভয়ই চাইবো যে কাকে কতটুকু ঠকিয়ে বড়লোক হওয়া যায়। বলতে গেলে একটা অরাজক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটবে।
এছাড়া কুরআন বিরোধী এই আইন বাস্তবায়ন হলে আমার বোন আরও বেশি ঠকবে। আমার পিতা স্বাভাবিকভাবেই তখন তাঁর সম্পত্তি আমাকেই বেশি দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কারন পিতা-মাতা যখন বৃদ্ধ হয়ে যাবেন তখন তাদের দেখা-শোনার জন্য আমাকেই এগিয়ে আসতে হবে। আর যেহেতু আমি তাঁদের সেবা করবো আর আমার বোন তাঁদের কোন কাজেই আসতে পারবে না এবং পিতা-মাতা বুঝবেন যে মেয়েকে তো বিয়ে দিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি, তাকে দেখা-শোনার দায়িত্ব তার স্বামীর কিন্তু আমার ছেলেকে তো দেখা-শোনার কেউ নাই তখন স্বাভাবিকভাবেই আমার পিতা তার সম্পত্তিটা আমাকে লিখে দেওয়ার চেষ্টাই করবেন। এছাড়া আমিও চেষ্টা করবো কিভাবে আমার পিতার নিকট থেকে সম্পতিটা লিখে নেওয়া যায়।
বোঝাই যাচ্ছে যে কুরআন বিরোধী এই আইন বাস্তবায়ন হলে আমাদের সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে যাবে।
এই আইন না করে যদি এমন আইন করতো যে, কুরআনে উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টনের যে পদ্ধতি আল্লাহ বাতলে দিয়েছেন ঠিক সেভাবে সম্পদের বন্টন করতে হবে আর পিতা যদি ছেলেকে গোপনে বা ছেলে যদি পিতার নিকট থেকে জোর করে সম্পত্তি লিখে নেয় আর এটা যদি প্রমানিত হয় তাহলে কোন অবস্থাতেই তা ঠিক থাকবে না বরং সেটা অটোমেটিক বাতিল হয়ে গিয়ে কুরআনের আইন অনুয়ায়ী আবারও বন্টন করতে হবে। তাহলে আর কেউই তার বোনকে ঠকানোর সাহস করবে না। কিন্তু আমাদের সরকার করতে যাচ্ছেন সম্পূর্ণ উল্টোটা!
আল্লাহ যেহেতু আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন সেহেতু তিনিই জানেন যে কিভাবে কি করলে আমাদের চলার পথ সহজ হবে। সম্পত্তি কিভাবে বন্টন করলে কেউই ঠকবে না বরং সবাই সন্তুষ্ট থাকতে পারবে।
এখন আমরা যদি সেই বন্টন নীতি বাদ দিয়ে আমাদের মনগড়া নীতি বাস্তবায়ন করতে যাই তাহলে তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবেই। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যে বা যারাই আল্লাহর কথামত চলবেন তারাই শান্তিতে থাকতে পারবেন। আর যারা আল্লাহর কথামত চলবেন না তারা অশান্তিতেই থাকবেন। আল্লাহর কথামত চলার কারনে সাগর-নদীতে বা বনে-জঙ্গলে অথবা আসমানের কোটি কোটি নত্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। তারা সকলেই আল্লাহর কথামত নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সু-শৃঙ্খল ভাবেই দিনাতিপাত করছে।
আমরাও যদি আমাদের আল্লাহর দেওয়া বিধান কুরআনুল কারীম অনুযায়ী চলি তাহলে আমরাও সুখে-শান্তিতে যে থাকতে পারবো তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। অতএব সরকারের উচিত এমন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে কুরআনের বিধানকেই বাস্তবায়ন করা। এমন চিন্তা শুধু আমি নই বরং সরকারের ভিতরে বা বাইরে অর্থাৎ বর্তমান ও সাবেক অনেক কর্ম-কর্তারাও মনে করছেন। তারা স্পষ্ট করেই বলেছেন যে সরকার কুরআন বিরোধি এমন কাজ করলে খুব বড় ধরনের ভুলই করবেন।
কিছুদিন পূর্বে একটি জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সরকারের একজন সাবেক সচিবের একটা লেখা ছেপেছিলেন।
সেখানে সেই সচিব সরকারের এই আইনের অসাড়তা তুলে ধরে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে এই আইন বাস্তবায়ন হলে মেয়েরাই বেশি ঠকবে। আর কুরআনের আইন বাস্তবায়ন হলে মেয়েরাই জিতবে। তাঁর লেখার শিরোনাম ছিলো "ইসলামে আর্থিক সুবিধা পুত্রের চেয়ে কন্যার বেশি। "
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, উপরের আলোচনা থেকে মনে হয় এটা স্পষ্ট যে, সরকার যে নারী নীতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন তাতে পুরুষরা নয় বরং নারীরাই ঠকবে বেশি। আশা করি সরকার সকল দিক বিবেচনা করে এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন।
সর্বশেষ পবিত্র কুরআনের একটা আয়াতের মাধ্যমে আজকের লেখার ইতি টানবো। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন " (হে নবী!) আপনি বলে দিন, আমার নিজের ভাল-মন্দের মালিকও তো আমি নই, তবে আল্লাহ তায়ালা যা চান তাই হয়। যদি আমি অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতাম, তাহলে আমি (নিজের জন্য সে জ্ঞানের জোরে) অনেক ফায়দাই হাসিল করে নিতে পারতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করতে পারতো না, আমি তো শুধু (একজন নবী, জাহান্নামের) সতর্ককারী ও (জান্নাতের) সুসংবাদবাহী মাত্র, শুধু সে জাতির জন্যে যারা আমার উপর ঈমান আনে। -সূরা আল আ'রাফ, আয়াত ১৮৮। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।