নারীমুক্তি
আন্দোলনের
সংক্ষিপ্ত কালপঞ্জি
১৪৩১ - ৩০ মে ফ্রান্সের ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে পুরুষ বেশে যুদ্ধ করার অপরাধে ১৯ বছর বয়সী জোয়ান
অব আর্ককে ডাইনী বলে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
১৭৭৯ - ফরাসী বিল্পবের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ।
- ইংল্যান্ডের মেরি ওলষ্টোনক্রাফট লিখিত নারী মুক্তি আন্দোলনের প্রথম মহা ইশতেহার ‘নারীর অধিকারের ন্যায্যতা’ (ঠরহফরপধঃরড়হ ড়ভ ঃযব ৎরমযঃং ড়ভ ড়িসবহ) প্রকাশিত হয়। একে নারী স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা বলা হয়।
১৭৯৩ - ফরাসী বিপ্লবের পর ‘মানুষের অধিকার’ এর ঘোষণা পত্র যখন করা হয় তখন ওল্যাম্ন দ্য গুৎজ
নামক একজন ফরাসী নারী বলেছিলেন: ‘নারীদের যদি ফাঁসী কাষ্ঠে যাবার অধিকার থাকে তবে পার্লামেন্টেই বা তাদের অধিকার থাকবে না কেন?’ সেই বৎসর ওল্যাম্ন এর ফাঁসী হয়েছিল।
১৮১৮ - রাজা রামেেমাহন রায় কলিকাতায় ‘সহমরণ প্রথা’ (স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকেও স্বামীর সঙ্গে চিতায়
পোড়ানো) বাতিলের প্রথম উদ্যোগ নেন।
১৮২৫ - ইংল্যান্ডে নারীর অধিকারের পক্ষে প্রথম পুরুষ দার্শনিক উইলিয়ম টমসন এর বই ‘মানবজাতির
অর্থেক, নারীর আবেদন, মানব জাতির অপর অর্ধেক, পুরুষদের দুরহংকারের বিরুদ্ধে’ প্রকাশিত হয়।
১৮২৯ - ভারতে লর্ড বেন্টিংক সতীদাহ প্রথা বাতিল করে আইন পাশ করেন।
১৮৩০ - ইংল্যান্ডে চার্চিস্ট আন্দোলনে ব্যাপক সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ।
১৮৩৬ - ইংল্যান্ডে ‘রিফর্ম বিল’ এর মাধ্যমে নারীদের শিক্ষার অধিকার দেওয়া হয়।
১৮৩৭ - আমেরিকায় প্রথম দাস প্রথা বিরোধী নারী সম্মেলন। এর মধ্য দিয়ে মার্কিন নারীরা রাজনীতি
করার অধিকার ও সুযোগ পায়।
১৮৩৮ - এঞ্জেলিনা ইগ্রিসকে এবং সারাহ এম গ্রিমকে-প্রথম যুগের মার্কিন বিরোধী নারীসংগ্রামী এই দুই
নিগ্রো বোন নারী পুরুষের সাম্যের পক্ষে প্রচারণা চালান।
১৮৪৮ - প্রথম নারী অধিকার সম্মেলন আমেরিকার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়। ৩০০ এর মতো নারী ও পুরুষ
এতে অংশ নেন।
১৮৪৯ - কলকাতায় প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক নারী শিক্ষার সূচনা। জে ই ডি বেথুন ভিক্টোরিয়া গালর্স স্কুল স্থাপন
করেন। পরে এটি বেথুন স্কুল নামে পরিচিত হয়।
১৮৫৫ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ প্রচলনের উদ্যোগ নেন।
১৮৫৭ - বিধবা বিবাহ আইন পাশ হয়।
ভরতের বৃটিশ বিরোধী সিপাহী বিদ্রোহকে অভিজাত নারীরা অংশগ্রহণ করে। ৮ মার্চ যুক্ত রাষ্ট্রের নিউউয়র্ক শহরের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকরা বিপদজ্জনক ও অমানবিক কর্মপরিবেশ, স্বল্প মজুরী এবং দৈনিক বার ঘন্টা শ্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পুলিশ এই মিছিলে হামলা চালায় এবং অনেক নারী আহত ও নিহত হন।
ইংল্যান্ডে ‘বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের বিল’ এর মাধ্যমে নারীর অনেক অধিকার আইনগত স্বীকৃতি লাভ করে।
১৮৬০ - ৮ মার্চ- নিউইয়র্ক শহরের কারখানার নারী শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে
নিজস্ব ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সমর্থ হয়।
১৮৬৫ - জন স্টুয়ার্ট মিল ইংল্যান্ড পার্লামেন্টে সদস্য হবার পর নারীর ভোটাধিকারের উপর প্রস্তাব উত্থাপন
করেন।
১৮৬৬ - ফ্রান্সে প্রথম নারী অধিকার সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন মারিয়া দেসরাইসমে। আন্তর্জাতিক নারী
শ্রমিকদের প্রথম কংগ্রেসে নারীর কাজের অধিকার (যে অলিখিত ভাবে নিষিদ্ধ ছিল)
দাবি র সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৮৬৯ - জন স্টুয়ার্ট মিল নারী অধিকারের পক্ষে বিখ্যাত বই ‘নারীর অধীনতা’ (ঞযব ঝঁনলবপঃরড়হ ড়ভ
ড়িসবহ) রচনা করেন।
নারীর ভোটাধিকারের দাবি তে আমেরিকায় ‘জাতীয় ভোটাধিকার সংঘ’ ও ‘মার্কিন নারী ভোটধিকার সংঘ’ গঠিত হয়।
ফ্রান্সের শ্রমজীবি জনগণের প্রথম কমিউনিস্ট সমাজ ‘প্রারী কমিউনিস্ট’ রক্ষার জন্য ১০ হাজার ফরাসী নারী যুদ্ধ করে। ইতিহাসে দেখা যায় যে তখনকার ‘যুদ্ধ পরিষদ’ এর কাছে ১০৫১ জন নারীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
১৮৭১ - ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর বহু বিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে প্রচার চালান।
১৮৭৯ - বিখ্যাত নাট্যকার হেনরিক ইবসেনের এর নারীবাদী নাটক ‘পুতুলের খেলাঘর’ প্রকাশ।
জার্মান কমিউনিস্ট নেতা আগস্ট বেবেল এর বিখ্যাত বই ‘নারী ও সমাজতন্ত্র’ গোপনে প্রকাশ।
১৮৮২ - ইংল্যান্ডে ‘বিবাহিত নারীর সম্পত্তির অধিকার বিল’ পাস হয়।
১৮৮৩ - কাদম্বিনি বসু ভারতে মহিলাদের মধ্যে প্রথম বি.এ পাস করেন।
১৮৮৪ - চন্দ্রমুখী বসু ভারতে মহিলাদের মধ্যে প্রথম এম. এ পাশ করেন।
ফেডারিক এঙ্গেলস এর বিখ্যাত বই ‘পরিবার, ব্যক্তিগত মালিকানা ও রাষ্ট্রের উদ্ভব’ প্রকাশ। এই বইয়ে তিনি দেখান যে, পিতৃতান্ত্রিক পরিবার ও ব্যক্তি মালিকানাই নারীর বিপর্যয়ের কারণ।
১৮৮৫ - মেরী কারপেন্টারের নেতৃত্বে নারীদের মানবিক অধিকারের জন্য সংগঠন তৈরী হয় এবং
আন্দোলন হতে থাকে। যা পরবর্তীতে ফেমিনিস্ট (নারীবাদি) আন্দোলন রূপে পরিচিতি
লাভ করে।
১৮৮৬ - মে দিবসের সমাবেশে নারী নেত্রী লুইজা আলবের্ট এর নেতৃত্বে বহু নারী অংশগ্রহণ
করে।
১৮৮৯ - ২য় আন্তর্জাতিক নারী কংগ্রেসে জার্মানীর জনপ্রিয় কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেৎকিন নারী
অধিকার এবং মা ও শিশুর নিরাপত্তা দাবি করে বিখ্যাত ভাষণ দেন। এই ভাষণে প্রথম তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের দাবি তোলেন।
ভারতের পুনায় মহারাষ্ট্রীয় নারীবাদি পন্ডিত রমা বাইয়ের নারী মুক্তি সম্পর্কে বক্তৃতা।
১৮৯০ - বিধুমুখী বসু প্রথম মহিলা হিসাবে এম বি (ডাক্তারি) পাশ করেন। ‘মার্কিন নারী
ভোটাধিকার সংঘ’ ও ‘জাতীয় ভোটাধিকার সংঘ’ এই দুই সংগঠন মিলে গঠিত হয় ‘জাতীয় মার্কিন নারী ভোটাধিকার সংঘ’।
১৮৯১ - এলিজাবেথ কেডি স্ট্যাটন ও আরো ২৩ জন নারী মিলিত ভাবে রচনা করেন ‘নারীর
বাইবেল (ওম্যানস বাইবেল)। তারা খ্রীস্টিয় ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত নারীর অধিনস্ততাকে অস্বীকার করেন।
১৮৯৩ - নারী কল্যাণের লক্ষ্যে নবাব ফয়জুন্নেছা কুমিল্লায় জানানা (মহিলা) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা
করেন।
১৮৯৯ - হল্যান্ডের দি হেগ শহরে প্রথম প্রথম যুদ্ধ বিরোধী নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯০৩ - এমেলিন প্যাংখার্স্টের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতক ইউনিয়ন গঠন
এবং নারীর ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন তীব্র হয়। তিনি কারারুদ্ধ হন।
১৯০৪ - মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূতঃ বেগম রোকেয়ার বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘স্ত্রী জাতির অবনতি’
প্রকাশিত।
এ প্রবন্ধে ভারতে প্রথম ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত নারী সম্পর্কিত বক্তব্যের বিরোধীতা করা হয়।
১৯০৫-৭ - রাশিয়ায় রাজতন্ত্র বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ব্যাপক সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ।
১৯০৮ - ৮ মার্চ আবারও নিউইয়র্কের বস্ত্র শিল্প কারখানার নারী শ্রমিকরা কাজের সময় কমানো,
কাজের পরিবেশের উন্নতি, শিশু শ্রমের আইন প্রণয়ন এবং ভোটধিকারের দাবি তে বিশাল মিছিল করে।
১৯১০ - জার্মানীর কোপেন হেগেনে অনুষ্ঠিত ২য় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলনে
জার্মান কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেৎকিনের প্রস্তাব অনুসারে ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্য পূর্ণ তারিখ হিসাবে ৮ মার্চকে বিশ্ব নারী দিবস ঘোষণা করা হয়।
১৯১১ - জার্মানী, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড এবং অস্ট্রীয়াতে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস ৮ মার্চ
পালিত হয়।
কলকাতায় বেগম রোকেয়া ‘শাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল’ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯১৩ - আমেরিকার এলিস পল নামক তরুণী ‘কংক্রেসনাল ইউনিয়ন’ (পরবর্তী নাম: ওম্যানস
পার্টি) নামে র্যাডিক্যাল গ্র“প গড়ে তোলেন।
এমিলি ওয়াইল্ডিং ডিভিসন-আমেরিকার নারীর ভোটের দাবি আন্দোলনের প্রথম নারীসংগ্রামী শহীদ।
১৯১৫ - জার্মানীর বার্ন শহরে ফরাসী, ইংল্যান্ড, পোল্যান্ড, ইতালী, সুইজারল্যান্ড ও রাশিয়ার
কমিউনিস্ট নারীদের যুদ্ধ বিরোধী সম্মেলন অনুষ্ঠিত।
১৯১৭ - ভারতে নারীদের ভোটাধিকার দাবি ।
সরলা দেবী ভারতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি।
৮ মার্চ রাশিয়ার পেট্রোগ্রাড (পরে লেলিনগ্রাড) শহরে নারী শ্রমিকরা অত্যাচারী জারের বিরুদ্ধে-সভা মিছিল করে নারীদের দাবির আওয়াজ তোলে।
বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব রুশ বিপ্লবে ব্যাপক সংখ্যক নারীদের অংশগ্রহণ।
১৯১৮ - ইংল্যান্ডে নারী ভোটাধিকার আইনত স্বীকার করা হয়।
১৯১৯ - জনপ্রিয় জার্মান কমিউনিস্ট ও নারী নেত্রী রোজা লুক্সেমবুর্গ নির্যাতিত হয়ে মারা যান।
ভারতীয় নারীদের ভোটাধিকারের দাবিতে সরোজিনী নাইডু, অ্যানি বেসান্ড , হীরাবাই টাটা, নির্বান টাটা প্রমুখ নেত্রীর লন্ড যাত্রা।
১৯২০ - দেবী চৌধুরাণী নামে খ্যত মহিলা নেত্রী জ্যোতির্ময় গাঙ্গুলীর নেতৃত্বে কলকাতা কংগ্রেসে
প্রথম নারী স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গঠন করেন।
১৯২১ - উর্মিলা দেবী বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিদেশী দ্রব্য বর্জন করে
কলকাতার রাস্তায় খদ্দর ফেরী করার অপরাধে গ্রেপ্তার হন। তিনি স্বরাজ আন্দোলনে সহায়তার লক্ষ্যে নারী কর্ম মন্দির গড়ে তোলে। এটি বন্ধ হবার পর পরবর্তীতে মহিলা কর্মী সংসদ গঠিত হয়।
বাসন্তী দেবী বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি হন।
হেম প্রভা দেবী গোয়ালন্দের স্টীমার ধর্মঘটে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ভারতীয় নারীদের ভোটাধিকার লাভ।
১৯২২ - ভারতের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে নারীরা রাস্তায় প্রথম মিছিল করেন। বহু নারী
গ্রেপ্তার হন।
সাবিত্রী দেবীর ভারতে মেয়েদের মধ্যে প্রথম তিন মাসের জেল হয়।
১৯২৩ - লীলা রায় বাংলাদেশের ঢাকা শহরে নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে দীপালি সংঘ নামক
সংগঠন গড়ে তোলেন।
এই সংঘের উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ১২টি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল এবং নারী
শিক্ষা মন্দির ও শিক্ষা ভবন নামে দ’ুটি ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপিত হয়।
১৯২৪ - মহিলাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে আশালতা সেন, সরমা গুপ্ত, সরযু
বালা গুপ্ত প্রমুখ নারী নেত্রী ঢাকার গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি নামক সংগঠন গড়ে থোলেন। সমিতির মহিরাগণ নিজেরাই খদ্দর কাপড়ের বোঝা কাঁধে নিয়ে ঘরে ঘরে খদ্দর বিক্রি ও স্বদেশী চেতনা প্রচার করতেন।
১৯২৬ - মহিলা নেত্রী সরোজিনী নাইডু কংগ্রেসের সভাপতি হন।
১৯২৭ - মেয়েদের মধ্যে প্রচারের জন্য মহিলা রাষ্ট্রীয় সংঘ গঠন।
প্রথম বাঙ্গালী মুসলমান ফজিলাতুন্নেসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এম.এস.সিতে
প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।
১৯২৮ - প্রভবতী দাশগুপ্ত কলকাতা ও হাওড়ার ধাঙর (সুইপার) ও চটকল ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেন।
কলকাতায় ছাত্রীদের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন ছাত্রী সংঘ এর জন্ম।
১৯২৯ - বাংলার নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করে।
সহিত্য ক্ষেত্রে নারীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘সওগাত’ এর মহিলা সংখ্যা প্রকাশ। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ডা: সুহাসিনী মুখার্জি, চারুবালা দাস গুপ্ত প্রমুখ নারীর নেতৃত্বে বাংলার বিপ্লবী নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেস নেত্রী লতিফা বুস এতে সভাপতিত্ব করেন এবং সম্মেলনে পুরুষদের প্রবেশাধিকার না থাকায় বেশ কিছু বোরখা পরিহিতা মুসলিম নারীও ঐ সম্মেলনে যোগ দেয়।
১৯৩০ - ১৩ এপ্রিল-আশালতা সেন, সরমা গুপ্ত , ঊষাবালা গুহ, প্রভৃতি নারীর
নেতৃত্বে ঢাকায় গঠিত সত্যাগ্রহী সেবিকা দল নোয়াখালী গিয়ে বৃটিশ সরকারের লবন আইন অমান্য করেন।
পরে ঢাকা শহরে এ আন্দোলন করতে গিয়ে সুনীতি বুস, কামিনী বুস, প্রতিভা সেন প্রমুখ নেত্রী কারাদন্ডিত হন।
১৯৩২ - ৯ ই ডিসেম্বর বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অদ্রগূত রোকেয়ার মৃত্যু।
১৯৩৭ - হেমপ্রভা মজুমদার বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায় নির্বাচিত হন।
১৯৩৯ - মহিলাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুসলিম নারীরা বেগম
সারা তৈফুর-এর নেতৃত্বে প্রকাশ্যে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন। শত অপপ্রচার উপেক্ষা করে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ-এর ইমামতিতে কার্জন হলের পশ্চিমের মাঠে সলিমুল্লাহ ও ফজলুল হক হলের ছাত্রদের সঙ্গে একটা চাদরের পর্দার পেছনে ঢাকার মুসলিম মহিলারা ঈদের জামাতে শরীক হন।
লায়লা আরজুমান্দ বানু প্রথম মুসলিম মহিলা বেতার শিল্পী হিসেবে গান শুরু করেন।
১৯৪০ - মুসলিম মহিলা নেত্রী সাকিনা বেগম কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থনে
কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মুসলিম মহিলা এ্যাডভোকেট। তিনি কলকাতা ধাঙড় ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেন।
১৯৪১ Ñ ৭ সেপ্টেম্বর- সোভিয়েত রাশিয়ার মস্কোতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী নারী সম্মেলনে
সোভিয়েত নারীদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংঘ গঠিত।
১৯৪৩ Ñ বঙ্গীয় প্রাদেশিক মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি গঠিত।
১৯৪৪ Ñ মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি আইন সংস্কারের আন্দোলন শুরু করে। এর ফলে ’৪৩ এর
ভয়াবহ দূর্ভিক্ষ চলাকালে অসহায় নারী শিশুদের নিয়ে অর্থলোভীদের ব্যবসা বন্ধের দাবি তে তৎকালীন ‘পাপ ব্যবসা নিরোধ বিল(ওসসড়ৎধষ ঞৎধভভরপ ইরষষ) সংশোধনী গৃহীত হয়।
১৯৪৫ - প্যারিস শহরে ইউজীন কথ এ সভাপতিত্বে যুদ্ধবিরোধী নারী আন্দোলন।
আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মহিলা ফেডারেশন গঠিত।
ফ্রান্সের প্যারিস শহরে সোভিয়েত রাশিয়ার উদ্যোগে বিশ্ব নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন নারীর মর্যাদা বিশেষ কমিশন (ঈড়সসরংংরড়হ ড়হ ঃযব ঝঃধঃঁং ড়ভ ডড়সবহ) গঠন করে। সানফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় মহিলা প্রতিনিধিদের দাবির প্রেক্ষিতে এই কমিশন গঠিত হয়।
জাতিসংঘ মানুষ পাচার দমন এবং অন্যের বেশ্যাবৃত্তি থেকে মুনাফা কামানোর বিরুদ্ধে গৃহীত কনভেনশন (ঝঁঢ়ঢ়ৎবংংরড়হ ড়ভ ঃযব ঞৎধভভরপ রহ চবৎংড়হং ধহফ ড়ভ ঃযব ঊীঢ়ষড়রঃধঃরড়হ ড়ভ ঃযব ঢ়ৎড়ংঃরঃঁঃরড়হ ড়ভ ড়ঃযবৎং) অনুমোদন করে। এই দলিলে কাউকে বেশ্যাবৃত্তিতে লাগানোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা আছে।
১৯৫১ সাল থেকে এটা কর্যকরী হয়।
১৯৪৮ - নারী সম্পর্কিত মহাগ্রন্থ সিমোন দ্যা বোভেয়ার এর ‘সেকেন্ড সেক্স’ (ঞযব ঝবপড়হফ
ঝবী) প্রকাশ।
১৯৫০ - বাংলাদেশের কমিউনিস্ট নেত্রী ইলা মিত্রের নেতৃত্বে রাজশাহীর নাচোলে সাঁওতাল
বিদ্রোহের শুরু।
১৯৫২ - একুশে ফেব্র“য়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার সভায় যোগদান করে পুলিশের
ব্যারিকেড ভেঙ্গে এবং ১৪৪ ধারা অমান্য করে মেয়েদের প্রথম মিছিল। এতে স্কুলের মেয়েদের সংখ্যাই ছিল অধিক।
ডাঃ শাফীয়া খাতুন, ডাঃ হালিমা খাতুন, সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্চু, ফজিলাতুন্নেসা, জুলেখা, নূরী, সারা তৈফুর প্রমুখ নারী এতে নেতৃত্ব দেন। পুলিশের লাঠি চার্জে সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্চুসহ প্রায় ০৮ জন মেয়ে গুরুতর আহত হয়। বহুসংখ্যক মেয়েকে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
নারীর রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ চুক্তি (পড়হাবহঃরড়হ ড়হ চড়ষরঃরপধষ জরমযঃং ড়ভ ডড়সবহ অমৎববসবহঃ) অনুমোদন।
১৯৫৬ Ñ বাংলার প্রথম মুসলিম চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রূপে জহরৎ আরা মুখ ও মুখোশ ছবিতে
অভিনয় করেন।
১৯৫৭ - বিবাহিত মহিলার জাতীয়তা সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন (ঈড়হাবহঃরড়হ
ঘধঃরড়হধষরঃু ড়ভ গধৎৎরবফ ডড়সবহ) অনুষ্ঠিত। এই কনভেনশন অনুযায়ী বিবাহিত হলেই স্বামীর কারণে কোন মহিলার জাতীয়তা বদলে যাবে না।
১৯৬০ - নারী সরকার প্রধানদের উদ্ভব। শ্রীমাভো বন্দরনায়েক শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
২৫ নভেম্বর ডোমিনিকান রিপাবলিক এর স্বৈরাচারী সরকার মিরাভেল সিস্টার্স নামক মহিলা রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করে।
১৯৮১ সাল থেকে ল্যাতিন আমেরিকার এই দিনটিকে নারীর প্রতি নির্যাতন বন্ধের দিন হিসেবে পালন করা হয়।
১৯৬২ - বিবাহ সংক্রান্ত জাতিসংঘ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী বিয়ের সময় সম্মতি
এবং বিয়ের সর্ব নিম্ন বয়স নির্ধারণ ও বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।
১৯৬৩ - ১৬ জুন বিশ্বের প্রথম মহিলা নভোচারী সোভিয়েত ইউনিয়নের ভ্যালেন্টিনা
তেরেসকোভার মহাকাশ অভিযান করেন।
১৯৬৪ Ñ টিভিতে ফেরদৌসী রহমান প্রথম মহিলা শিল্পী রূপে কাজ শুরু করেন।
১৯৬৫ Ñ বাংলার প্রথম মহিলা চলচ্চিত্র পরিচালক রূপে রেবেকা ছবি পরিচালনা করেন।
১৯৬৭ Ñ সুমিতা দেবী বাংলার প্রথম মহিলা চলচ্চিত্র প্রযোজক রূপে ছবি প্রযোজনা করেন।
১৯৬৮ Ñ তেহরানে অনুষ্ঠিত জতিসংঘ মনবাধিকার সম্মেলনে নারীর প্রতি সকল বৈষম্য দুর করার
আহ্বান জানান।
১৯৬৯ Ñ গণআন্দোলনে ব্যাপক সংখ্যক নারী ও ছাত্রী অংশগ্রহণ করে এবং পুলিশ ছাত্রীদের উপর
লাঠিচার্জ করে।
২৪শে জানুয়ারী হরতালের সময় ছাত্রী তরু আহমেদ কালো পতাকা নিয়ে রাস্তায় পুলিশ বেষ্টনী ভেদ করে এবং পরে হাজার হাজার মানুষ ঐ মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
১৯৭০ Ñ নারীদের নিরাপত্তার দাবি তে ‘নিশী রাত ফিরিয়ে নাও’ (ঃধশব নধপশ ঃযব হরমযঃং)
প্রচারণা শুরু হয়।
মাওলানা ভাসানীর ডাকে পাকশীর কৃষক সম্মেলনে ৫ হাজারেরও বেশি কৃষক নারী মনিকা বেগম, ফুরকুনি ভাবী(আম্বিয়া) প্রমুখের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেন এবং স্বাধীনতার দাবি তোলেন।
১৯৭১ Ñ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি নারীরা হাতে অস্ত্র তুলে নেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহ্রণ।
১৯৭৩ Ñ আন্তর্জাতিক নারীবাদি সম্মেলন।
১৯৭৪ Ñ জরুরী অবস্থা ও যুদ্ধের অঞ্চলে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতিসংঘ ঘোষণা
পাশ হয়।
এ অবস্থায় নারী ও শিশু নির্যাতন দেশের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেবার কথা
বলা হয়।
১৯৭৫ Ñ মেক্সিকো শহরে জাতিসংঘ আয়োজিত সরকারী প্রতিনিধি সম্মেলনের পাশাপাশি
বেসরকারী প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা বিশ্ব থেকে ৬০০০ মহিলা অংশগ্রহণ করে। এর ফলে সারা বিশ্বে অসংখ্য নারী সংগঠন জন্ম লাভ করে।
১৬ মে প্রথম মহিলা অভিযাত্রী জাপানের মিসেস জলিকো তাবেই এভারেস্ট জয় করেন।
১৯৭৬ - বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে ৪-৮ মার্চ তারিখে নারীর বিরুদ্ধে কৃত অপরাধ শীর্ষক
শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা বিশ্বের ৪০টি দেশ থেকে ২০০০ মহিলা অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৯ - নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্যের নিরসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘ সিডও (ঈঊউঅড)
ঘোষণা করা হয়।
১৯৮০ - জাতিসংঘ নারী দশকের মধবর্তী সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। ডেনমার্কের কোপেন হেগেনে।
প্রায় ১০০০ মহিলা সম্মেলনে যোগ দেয়।
মিশরের নারীবাদি নেত্রী ড: নওঅল এল সাদাওয়ির ধর্মীয় মৌলবাদের বিরোধিতা করে চাকুরী হারান এবং নারবাদী অপরাধে কারারুদ্ধ হন।
১৯৮৫ Ñ জাতিসংঘ নারী দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে কেনিয়ার নাইরোবি শহরে বিশ্ব নারী সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৮৯ Ñ মৌলবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক নারী সংগঠন ওয়াফ (ডঅঋ-ডড়সবহ অমধরহংঃ
ঋঁহফধসবহঃধষরংস) গঠিত।
১৯৯০ Ñ বিশ্বব্যাপী নারীর মানবাধিকার শীর্ষক প্রচারণার আওতায় ১৫দিন ব্যাপী নারী নির্যাতনের
বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করা হয়।
১৯৯১ Ñ বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক নারীদিবস উদযাপন কমিটি গঠিত
হয়।
১৯৯৩ Ñ ১০ জানুয়ারী সিলেটের ছাতকরা গ্রামে নুরজাহানকে ধর্মান্ধ ফতোয়াবাদেরা পাথর ছুড়ে
মারে।
বাংলাদেশের নারীরা বিচার ব্যবস্থা আমূল সংস্কারের দাবি তোলে। ‘নারীর শরীরের উপর নারীর অধিকার স্থাপন’-এই শ্লোগান তোলা হয়।
অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরে জুন মাসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণ আদালত অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘে নারী নির্যাতন বিরোধী বিরোধী ঘোষণা গৃহীত হয়।
হাজার বছর ধরে নারীদের বাঁধন ছেঁড়ার যে বগুমাত্রিক প্রয়াস তার একটি অসম্পূর্ণ নিঘর্ন্ট এই কালপঞ্জি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।