আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীমুক্তি ও মৌলবাদ প্রসঙ্গে

কয়েক দিন আগে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস বাংলাদেশেও পালিত হলো বেশ জমজমাটভাবে। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়েছে। কিন্তু নারী নির্যাতন এবং নারী সমস্যার সঙ্গে যে ধর্মীয় মৌলবাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে এ বিষয়টি বিশেষ আলোচনায় আসেনি। মৌলিক আলোচনায় গেলে বলতে হয়, নারীর অধস্তন অবস্থার জন্য দায়ী শ্রেণীসমাজ। ইতিহাসে শ্রেণীবিভক্ত সমাজের উদ্ভবের ঠিক আগে আগে ব্যক্তিগত সম্পত্তির জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই নারী জাতি হারিয়েছে স্বাধীনতা- যাকে এঙ্গেলস বলেছেন, (পরিবার, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি) 'নারীর বিশ্ব-ঐতিহাসিক পরাজয়'।

'পুরুষ ঘরের মধ্যেও কর্তৃত্বের লাগামটি ধরল, নারী পদানত হলো, দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হলো। '

সামন্ত সমাজে নারী নির্যাতনের রূপটি ছিল খুবই কদর্য। পুঁজিবাদ তুলনামূলকভাবে ভালো, যদিও "বুর্জোয়া প্রজাতন্ত্রগুলোর সবচেয়ে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রেও নারী থেকে যায় প্রথমত, পূর্ণ অধিকারহীন হয়ে, কারণ আইন তাদের পুরুষের সঙ্গে সমতা দেয় না, দ্বিতীয়ত এবং এইটাই প্রধান কথা, সবচেয়ে তুচ্ছ, সবচেয়ে হীন, সবচেয়ে হাড়ভাঙা, সবচেয়ে বিমূঢ় করা রান্নাবান্নার কাজ এবং সাধারণভাবে একঘেয়ে সাংসারিক ঘরকন্নায় পীড়িত হওয়ায় তারা থেকে যায় 'ঘরোয়া দাসত্বে', 'সাংসারিক বাঁদি' হয়ে। " [লেনিন]

আমাদের দেশে পুঁজিবাদ বেশ বিকাশ লাভ করলেও, তা করেছে বিকৃত আকারে। উপরন্তু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সামন্ত বৈশিষ্ট্য এখনো প্রাধান্যে আছে।

ধর্মীয় মৌলবাদ সামন্তবাদী ও সবচেয়ে পশ্চাৎপদ চেতনার প্রকাশমাত্র। সে কারণে নারীরা দলে দলে শ্রমবাজারে এলেও এবং সর্বাধিক বড় শিল্প গার্মেন্টের আশি শতাংশ শ্রমিক নারী হওয়া সত্ত্বেও পারিবারিক জীবনে সামন্ত ধ্যান-ধারণার প্রাধান্য রয়েছে। ধর্মীয় মৌলবাদ তাই এত সহজে বিস্তার লাভ করতে পারে।

প্রকৃত নারী স্বাধীনতা এবং নারী-পুরুষের সমতা অর্জিত হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক সমাজে। রাশিয়ার অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ঠিক এক বছর পর লেনিন দাবি করেছিলেন, 'যেসব কারণে নারীরা অধিকারহীন থাকে, ইতিহাসে এই প্রথম তা সব নাকচ করে দিয়েছে আমাদের আইন।

' (রচনা সংকলন, মস্কো, ইংরেজি, খণ্ড ২৮, পৃষ্ঠা ১৬০-৬২) কিন্তু তারপরও পশ্চাৎপদ ধর্মীয় চিন্তা, কুসংস্কার ও অভ্যাস নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকে। সে জন্য লেনিন উক্ত রচনায় এর পরপরই বলছেন, 'গ্রামাঞ্চলে এখনো গির্জা বিয়ের প্রাধান্য, পুরোহিতদের প্রভাবের জন্য তারা এতে বাধ্য হন এবং পুরনো আইনের চেয়ে এই অভিশাপটার সঙ্গে লড়াই করা বেশ কঠিন। ' নারী মুক্তির ক্ষেত্রে ভাবাদর্শগত সংগ্রাম খুবই জরুরি। আমাদের দেশে যেখানে সমাজতন্ত্র তো দূরের কথা, পুঁজিবাদও পূর্ণ বিকাশ লাভ করেনি, যা করেছে তাও আবার বিকৃত পথে, যেখানে সামন্ত ধ্যান-ধারণা রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারে খুবই প্রবল সেখানে সত্যিকারের নারী স্বাধীনতা ও নারী-পুরুষ সমতা অর্জন করতে হলে পশ্চাৎপদ ও মৌলবাদী ভাবাদর্শের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা খুবই জরুরি। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নারী আন্দোলন দ্বারা এই সংগ্রামকে তীব্র করতে হবে।

দুই. ধর্মীয় মৌলবাদ হলো ধর্মের সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল ব্যাখ্যা, যা যুগের সঙ্গে বিভিন্ন ধর্মীয় বিধিবিধানের সংস্কারকে মানতে চায় না। দ্বিতীয়ত, মৌলবাদী সংগঠনগুলো মনে করে তারা যেভাবে ধর্মের ব্যাখ্যা দেবে সেটাই সবাইকে মানতে হবে এবং সে জন্য তারা সন্ত্রাস ও বল প্রয়োগের আশ্রয় নেয়।

ধর্ম কীভাবে নারী নির্যাতনের হাতিয়ার হয়েছিল তার কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত হিন্দু সমাজে সতীদাহের মতো বর্বর প্রথা চালু ছিল। মধ্যযুগে ইউরোপে ডাইনি বলে কত নারীকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল ধর্মের নামেই, চার্চের নির্দেশে।

হিন্দু ধর্মের ভগবান শঙ্করাচার্য স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, নরকের দ্বার হচ্ছে নারী। বাইবেলে বলা আছে, নারী হচ্ছে 'রুট অফ অল ইভিল'। ইসলাম ধর্ম তুলনামূলক প্রগতিশীল হলেও এখানেও নারীকে পুরুষের অধীনস্থ রাখা হয়েছে। মুসলমান সমাজে নারী শিক্ষার প্রবর্তক মহীয়সী বিপ্লবী নারী বেগম রোকেয়া তাই বলেছেন, "আমাদের যথাসম্ভব অধঃপতন হওয়ার পর দাসত্বের বিরুদ্ধে কখনো মাথা তুলিতে পারি নাই; তাহার প্রধান কারণ এই বোধ হয় যে, যখনই কোনো ভগ্নী মস্তক উত্তোলনের চেষ্টা করিয়াছেন, অমনই ধর্মের দোহাই বা শাস্ত্রের বচন-রূপ অস্ত্রাঘাতে তাহার মস্তক চূর্ণ হইয়াছে। ... আমাদিগকে অন্ধকারে রাখিবার জন্য পুরুষগণ ওই ধর্মগ্রন্থগুলিকে ঈশ্বরের আদেশপত্র বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন।

... এই ধর্মগ্রন্থগুলি পুরুষ-রচিত বিধি ব্যবস্থা ভিন্ন আর কিছুই নহে। "

আর একবিংশ শতাব্দীতেও কলকাতার কলেজের অধ্যাপিকা মীরাতুন নাহার বলছেন, "...মুসলমান সমাজের পুরুষের স্বার্থপরতা মেয়েদের বন্দী হতে বাধ্য করেছে। ধর্মীয় বিধিনিষেধ আরোপের ক্ষেত্রে মেয়েরা ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছে। যত বিধিনিষেধ তাদের ওপর। পুরুষ স্বাধীন।

মেয়েরা বন্দী। নারী-পুরুষের জৈবিক সম্পর্ককে মুসলমান পুরুষ সমধিক গুরুত্ব দেয়। উভয়ের সম্পর্ক যেন ভোক্তা ও ভোগ্যের। সে কারণে কঠোর পর্দাপ্রথা। "

এখনকার আরেক ভারতীয় মুসলিম নারী লেখিকা ও বুদ্ধিজীবী রোশেনারা খান লিখেছেন, "ইসলাম ধর্ম বয়সে সর্বাপেক্ষা নবীন এবং তৎকালীন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই আধুনিক।

... কিন্তু ধর্ম যত প্রাচীন হয়েছে সংস্কারের অভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তার অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা। ধর্মের নামে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য আগাছা। "

বাংলাদেশের অনেক লেখিকার এরূপ উদ্ধৃতি দেওয়া যেতে পারে। আমাদের এখন দরকার মুসলিম সমাজে বড় ধরনের সংস্কার। পারিবারিক আইনকেও গণতান্ত্রিক করতে হবে।

তিন. মৌলবাদীরা কোন ধরনের সংস্কারের বিরুদ্ধে। কিন্তু মৌলবাদীদের মতাদর্শগতভাবে পরাস্ত করেই তো আমাদের প্রগতির পথে অগ্রসর হতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা সরকারকে বার বার আত্দসমর্পণ করতে দেখি। আওয়ামী লীগ করছে আত্মসমর্পণ। আর বিএনপি মৌলবাদের পালে বাতাস দিচ্ছে।

বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে ধর্মীয় ফতোয়ার কবলে পড়ে যে কত নারী অপমানিত, নির্যাতিত, এমনকি মৃত্যুবরণ করছে তার পুরো খবর না জানলেও আজকাল কিছু কিছু খবরের কাগজে আসছে। অর্থাৎ গ্রামাঞ্চলে এখনো ধর্ম ব্যবসায়ী ও মৌলবাদীদের দাপট রয়েছে। তাদের টার্গেট নারী। ২০০১ সালে বিচারপতি গোলাম রব্বানী সুয়োমোটোভাবে ফতোয়া-সংক্রান্ত একটি মামলায় ফতোয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন। তার এক দশক পরে সুপ্রিমকোর্ট সেই বিচারে ভিন্নমত প্রদান করেছেন।

তাদের মতে, ফতোয়া বৈধ, তবে কেবল শিক্ষিত আলেমরাই তা পারবেন। এখানে আমার বিবেচনায় আপসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।

নারীনীতি কয়েকবার ঘোষণা করা হয়েছে। কোনোবারই নারী-পুরুষের প্রকৃত সমতা, বিশেষ করে উত্তরাধিকারের প্রশ্নে সমতা ঘোষণা করা হয়নি। তথাপি আমরা দেখেছি উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদীদের আস্ফালন, যার কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্দসমর্পণ করেছেন এবং খালেদা জিয়া বাতাস দিয়েছেন।

মুসলিম পারিবারিক আইনে প্রথম সংস্কার এনেছিলেন পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান। তিনি মুসলিম পারিবারিক আইনে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল পুরুষের একাধিক বিবাহ নিষিদ্ধকরণ। তখনো জামায়াতে ইসলাম পুরুষের চার স্ত্রী রাখার সপক্ষে বক্তব্য রেখেছিল কোরআন-হাদিসের কথা বলে। এর আগে উলি্লখিত ভারতের নারী বুদ্ধিজীবী রোশেনারা যথার্থই বলেছেন, '১৪০০ বছর পূর্বে কোনো এক দেশে সে দেশের তৎকালীন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে যে আইন পুরুষকে চারটি বিবাহের অধিকার দিয়েছিল, একবিংশ শতাব্দীর সভ্যসমাজে কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়াই পৃথিবীর সমস্ত দেশের মুসলমানদের জন্য তা এখনো বলবৎ।

'

অবশ্য অনেক দেশেই এ আইনের পরিবর্তন হয়েছে। উল্লেখ্য, অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতেও ১৯৩৭ সালে সারা ভারতে একক শরিয়তি আইন চালুর আগ পর্যন্ত বিভিন্ন অঞ্চলে নিজস্ব পারিবারিক আইন বা প্রথা চালু ছিল মুসলিম সমাজে। যথা গুজরাটের 'ঝিনা' সম্প্রদায়ের মধ্যে (যে সম্প্রদায়ের বিখ্যাত সন্তান ছিলেন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ) নিজস্ব পারিবারিক আইন চালু ছিল। কুচি ও খোজা সম্প্রদায়ের মুসলমানরা ইচ্ছামতো সম্পত্তি উইল করতে পারে, যা ইসলামী আইনবিরোধী বলে বিবেচিত।

অর্থাৎ প্রয়োজনে পারিবারিক আইনকে যুগোপযোগী করা যায়।

বর্তমানে সব ধর্ম-নির্বিশেষে একক পারিবারিক আইন এবং উত্তরাধিকার, বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ইত্যাদি সর্ব ক্ষেত্রে সব ধর্মের নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করাই হবে গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এ দাবির সপক্ষে কয়েকটি যুক্তি উপস্থিত করতে চাই। প্রথমত, পৃথিবীর অনেক মুসলিম দেশে শরিয়ত আইনের গণতান্ত্রিক সংস্কার করা সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পারিবারিক আইনকে গণতান্ত্রিক করা ইসলামী বিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিখ্যাত উর্দু কবি ইকবাল কোরআন থেকেই ব্যাখ্যা দেন, নিরপেক্ষ ও যুগোপযোগী অবস্থা চিন্তায় কোনো বাধা নেই।

তৃতীয়ত, সব হাদিস সব সময় অনুসরণ করা সম্ভব নয়। ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এক লেখায় এমন বেশ কিছু হাদিস উদ্ধৃত করেছেন, যেমন- 'দাস প্রথা চালু করা (মমিনুন ৫, ৬, আহযাব ৫০) ইত্যাদি। '

চতুর্থত, অনেক হাদিসের উৎস নিয়েও প্রশ্ন আছে। বিখ্যাত ঐতিহাসিক টয়েনবি তার 'স্টাডি অব হিস্ট্রি' গ্রন্থে বলেছেন, 'উমাইয়া বা আব্বাসীয় রাজপুরুষরা মদিনা থেকে শাস্ত্রকারদের বাগদাদে নিয়ে এসে ইচ্ছামতো শাস্ত্র রচনা করিয়ে নিতেন। ... প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের স্বার্থের দিকে তাকিয়েই ইসলামকে ব্যবহার করেছিল।

আর ওই শাস্ত্রকারদের পোষ মানিয়েছিল শাসকগোষ্ঠী। '

পঞ্চমত, ইসলামী আইন দাঁড়িয়ে আছে কোরআন-হাদিস ছাড়াও আরও যে দুটি নীতি ও ভিত্তির ওপর, তা হলো 'কিয়াস' ও 'ইজমা'। ইজমা হলো শাস্ত্রকারদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। 'কিয়াস'-এর অর্থ হলো জ্ঞান-বিবেক, বিচারবুদ্ধির ওপর নির্ভর করে সমাধান বের করা। ইসলামের মধ্যে প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক উপাদান যা আছে, তাকে ব্যবহার করে সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আইনের সংস্কার করা সম্ভব।

এখানে উল্লেখ্য, কোরআনে ছয় হাজারের বেশি আয়াতের মধ্যে ২০০টির মতো আয়াতে আইন ও আইন-সংক্রান্ত পরামর্শ আছে। তার মধ্যে বিবাহ-সংক্রান্ত ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার-সংক্রান্ত পারিবারিক আইন ছাড়াও শাসনকার্য পরিচালনা করা সংক্রান্ত নির্দেশ আছে। সেগুলো কিন্তু মানা হয় না। আমাদের দেশের শাসনকার্য পরিচালিত হয় সংবিধান দ্বারা। তাহলে সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিবিধান করে (যেখানে নারী-পুরুষের সমানাধিকার স্বীকৃত) কেন সব ধর্মের জন্য একক গণতান্ত্রিক পারিবারিক আইন করা যাবে না?

বাধা হচ্ছে আমাদের শাসকশ্রেণী নিজেই, যারা রাজনৈতিক সুবিধার্থে মৌলবাদের সঙ্গে বার বার আপস করেছেন।

এটা ভাবতে অবাক লাগে, যেখানে বিগত দুই দশকের বেশি দুজন নারী পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেত্রী হয়ে এসেছেন, যেখানে নারীরা এভারেস্ট শৃঙ্গে ওঠেন, যেখানে নারীসৈনিক প্যারাসুটে শূন্য থেকে লাফ দিতে পারেন, যেখানে নারীরা যুদ্ধ পর্যন্ত করেছেন, সেখানে সে দেশে মৌলবাদের দাপটে নারীর স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ে কীভাবে। হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠন কোন সাহসে বলতে পারে, গার্মেন্ট শিল্পে নারীরা কাজ করতে পারবে না অথবা ক্লাস ফোরের উপরে নারী শিক্ষার দরকার নেই? তাদের কাছে নারী কেবল ভোগের সামগ্রী মাত্র। অশ্লীল তেঁতুলতত্ত্ব সেই প্রমাণ বহন করে।

মৌলবাদকে পরাজিত করে নারী প্রগতির পথ উন্মুক্ত করতে হবে। আবার নারী-পুরুষ সমতা, নারী স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেই ঘৃণ্য মৌলবাদকে পরাস্ত করতে হবে।

বিষয়টি যেন রাজনীতির খেলায় হারিয়ে না যায়। মনে রাখতে হবে, নারী মুক্তির পক্ষে আমাদের রয়েছে বিরাট ঐতিহ্য_ বেগম রোকেয়ার ঐতিহ্য এবং মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে আমরা প্রগতির পথে এগিয়ে যাব। মৌলবাদের বাধাকে ধ্বংস করা খুব কঠিন কাজ নয় এবং সেটা করতেই হবে। মনে রাখতে হবে, যে কোনো সমাজে 'নারীর সামাজিক অবস্থান দ্বারাই সমাজ প্রগতির মাত্রা নির্ণীত হয়।

' (কার্ল মার্কস- কুগেলম্যানের কাছে চিঠি, ১৮৬৮ সাল)

লেখক : রাজনীতিক

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.