আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাই (পুনঃ)

যে যায় লংকায়, সে হয় রাবন

গত ১ জুন ভোরে দৈনিক আমার দেশ কার্যালয় থেকে বিনা ওয়ারেন্টে মাহমুদুর রহমানকে আটক করেছিল পুলিশ। গ্রেফতারের আগে ১ জুন দৈনিক আমার দেশ-এর প্রকাশনা সনদ বাতিল করে দেয় সরকার এবং পত্রিকাটির ছাপাখানা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ সম্পন্ন করা এক মেধাবী মানুষ মাহমুদুর রহমান। সাবেক বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের সমৃদ্ধ কর্মজীবন তার। আমাদের দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যথেষ্ট অবদান রাখা সত্ত্বেও সাধারণের মাঝে তেমন পরিচিত ছিলেন না মাহমুদুর রহমান।

তবে ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে কলম সৈনিকের ভূমিকায় আবির্ভূত হওয়ার পর দ্রুত মানুষ তাকে চিনেছেন । এক-এগারো সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে যখন দেশের রাঘববোয়ালরা পর্যুদস্ত, সেসময় মাহমুদুর রহমান কলম সৈনিকের ভূমিকায় আবির্ভূত হন। তিনি শাসকদের রক্তচক্ষুর তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখে জনগণের মনে সাহস জুগিয়েছেন। সত্য উচ্চারণে সদা ছিলেন নির্ভীক। এক-এগারো সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আপসহীনতার স্বাক্ষর রাখেন।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও এক উপদেষ্টার দুর্নীতির বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে তিনি প্রায় অর্ধশত মামলার আসামি হয়েছেন। একাধিকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা থেকে শুরু করে এমন কোনো লোক নেই যে মাহমুদুর রহমানকে চেনেন না। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়, দেশ ও জাতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আওয়ামী সরকার মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে, যা স্বৈরাচারের শামিল।

আমরা কার কাছে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাইব। যারা ক্ষমতার জোরে পত্রিকাটি বন্ধ করে দিয়েছিল! হাইকোর্টের রায়ের পরও যারা দীর্ঘদিন জোরপূর্বক পত্রিকার ছাপাখানা বন্ধ রেখেছিল! রিমান্ডের নামে যারা মাহমুদুর রহমানকে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে; কারান্তরীণ অবস্থায় ঢাকা থেকে কাশিমপুর আনা-নেয়ার মাধ্যমে মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে—তাদের কাছে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাইতে পারি? ৯ মাস পার হয়ে গেল মাহমুদুর রহমানের কারাবন্দিত্বের। অথচ সময়ের এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। এখনও নানা কৌশলে কারাগারে মাহমুদুর রহমানের ওপর নানাভাবে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন অব্যাহত আছে। গ্রেফতার-পরবর্তী একের পর এক মামলা দিয়ে তাকে কয়েক দফা রিমান্ডে নেয়া হয়।

একজন সত্, সাহসী ও আপসহীন ব্যক্তির ওপর এভাবে চলতে থাকা শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার ইতিহাসও খুব ভালোভাবে গ্রহণ করবে না। মাহমুদুর রহমানের দৃঢ়তার প্রশংসা বিশ্বব্যাপী সচেতন মানুষরা করছেন। তিনি সততা আর সাহসিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তার মেধা, মনন আর আত্মবিশ্বাস সত্যিই অনন্য। ভীরু-কাপুরুষের মতো নয়, বীরের মতো বেঁচে থাকার স্পৃহা নিয়েই লড়ছেন তিনি।

সততা দিয়ে সবকিছু জয় করার অদম্য ইচ্ছা যেন তার প্রতিটি পদক্ষেপে। মাহমুদুর রহমানের ওপর এই ফ্যাসিস্ট আচরণ বন্ধ করে কালবিলম্ব না করে মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়া হোক। অচিরেই তাকে আমাদের মাঝে ফিরে পেতে চায় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.