ল্যাটিন লেখক আন্তোনিও সোশি একবার তার এক লেখায় বলেছেন, একজন্য ব্যক্তি কী সুখী না দু:খী ? তা জানার জন্য প্রশ্ন করার দরকার নেই। কৌশলে তার সাবেক প্রেমিকারা কে কোথায় কেমন রয়েছে তা জেনে নেয়া গেলে সব জানা সম্ভব। আন্তোনিও’র দর্শনকে সামনে রেখে আমার সাবেক প্রেমিকারা কে কোথায় রয়েছে তা তুলে আমার অবস্থানের স্বরুপ উম্মোচনের একটি সংপ্তি চেষ্টা চালানো হয়েছে এখানে।
এক. সীমা নামের আমার চেয়ে পাঁচ কাসের উপরের এক আপুর কথা অন্য এক লেখার আপনাদের বলেছিলাম। যিনি কাস সিক্সে পড়–য়া আমাকে কাঁচা মরিচ খাইয়ে অনন্য এক ভালবাসার উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
মরিচ খাওয়ার সময়কার ভালবাসাটি আঁচ করতে না পারলেও পরে বুঝেছি তিনি আমাকে ভালবাসতেন। আমার মারাত্মক সেই সিনিয়র আপু বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় একটি জেলার ম্যাজিস্টেট হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
দুই. এসএসসি পরীা দেয়ার সময় প্রেম হয় মরিয়মের সঙ্গে। পাড়ার মোড়ে রাস্তার পাশের ঘিঞ্জি একটি ভাড়া বাসায় সে তার ভাই-ভাবীর সঙ্গে থাকত। বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে তার সঙ্গে প্রেম হয় আমার ।
আমার দেখা অন্যতম সুন্দরী মরিয়ম তখন চট্টগ্রামের গ্লোব গার্মেন্টসে চাকরি করত। এখনো সে গার্মেন্টসে চাকরি করে। শুনেছি তার পদোন্নতি হয়েছে। সে এখন আপাদমস্তক সুপারভাইজার। আমার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার ১ বছর পর সে বিয়ে করে।
বিয়ের চার বছরের মাথায় সে এখন আস্ত দুটো বাচ্চার মালিক। মরিয়ম তোমাকে পটাতে গিয়ে নিজেকে মুদি দোকানি হিসেবে পরিচয় দিতে বাধ্য হয়েছি। তুমিও বিশ্বাস করেছিলে। মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য আমি দু:খিত। পারলে মা করো।
তিন. এ প্রেমটি চট্টগ্রাম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকার সময়ের। জামাল খান রোডে নিয়মিত আড্ডা দেয়ার সুত্র ধরে ডা. খাস্তগির স্কুলের ছাত্রী দশম শ্রেনীর ছাত্রী রেজিনা ডি কস্তার সঙ্গে ভাব জমে উঠে আমার। ভাব জমার পেছনে অবশ্য কারণ আছে। তার কাছে আমি ছিলাম লরেন গোমেজ। বছর দুয়েক বেশ ভালোই কাটলো আমাদের।
কিন্তু এক ঈর্ষাপ্রবণ বন্ধু কর্তৃক আমার নাম ফাঁস করে দেয়াকে কেন্দ্র করে রেজিনা চিরদিনের জন্য আমার অতীত হয়ে গেল। চোরাকারবারি স্বামীকে নিয়ে আগ্রাবাদে নাকি বেশ সুখেই আছে আমার রেজিনা। রেজিনাকে বলি.. শুধু ধর্মই চিনলে আমার প্রেমকে নয়।
চার. ইউনিভার্সিটি এডমিশনের জন্য কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়ে পরিচয় ঘটে পাবনার মেয়ে তানিয়ার সঙ্গে। আমার আঞ্চলিক কথা বলা ও হাস্য রস প্রিয়তাকে সে ফলো করত বিষয়টি আমি বুঝতে পারি।
তার দিক থেকেই এ মেলা জমার আহ্বান আসে। আমিতো আবার কৃষ্ণ। কোন কিছুতেই না নেই। চললো মাস ছয়েক। ইউনিভার্সিটির আগেই সে নৌবাহিনিতে যোগ দিয়ে সাগর, পানি, জাহাজ আর ক্যারিয়ারে জীবনের ইতিবৃত্ত খুঁেজ ফিরতে ব্যস্ত।
পাঁচ: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ইডেনের শীলার সঙ্গে পরিচয় হয় নাটকীয় এক ঘটনায়। কিছুদিন বন্ধু থাকার পর যথাপি সরুপে ফেরা। তিন মাস আমাদের সম্পর্কের বসন্ত যেন শেষই হতে চায়না। বিষয়টি সহ্য করলেন না তার পরিবার । পুলিশের এক আধবুড়ো ওসির সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দিলেন।
ফলে আমাদের স¤পর্কে মধ্যপ্রাচ্যের স্বৈরশাসকের মতা হারানোর মতই বিদায়ের করুণ সুর বেজে উঠল। স্বামীর সঙ্গে শীলা এখন কক্সবাজারের নির্মল পরিবেশে জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখছেন বলে সর্বশেষ তথ্য পেয়েছি।
ছয়. ২০১০ সালের মাঝামাঝি ঢাকার বাসিন্দা নোয়াখালীর মেয়ে তনুশ্রী ঈশ্বরের ইশারায় আমার কাছাকাছি চলে আসে। অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মেয়েটির কাছে যতই ঘনিষ্ট হতে যাই মেয়েটি ততই আরো জটিলতা তৈরি করে। টানা সাত মাসের চেষ্টায় অবশেষে সে আমাকে নিকটজন হিসেবে নিলো।
কিন্তু তার মধ্যে এখন পর্যন্ত নিকটজনসুলভ কোন আচরণ দেখতে পাইনি। কারণ খুঁজতে গিয়ে তার এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে পারলাম। এ কৌশলে অসংখ্য মজনুকে সে আকাশে তুলে টুপ করে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। সামনে পেছনে তাকিয়ে দ্রুত আমি তার পেছন ত্যাগ করলাম। অবশ্য ঘটনা জানার দুইদিন পর সে আমাকে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
যাক.. বাঁচা গেলো! অন্তত আকাশ থেকে পড়ে কোমর ভাঙা থেকে রা পেয়েছি। শুকরিয়া। গত কাল শুনেছি সে নাকি অষ্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাওয়ার নতুন ধান্ধায় নেমেছে। যাও বাপু অষ্ট্রেলিয়া যাও..কিছু ছেলে অন্তত আকাশ থেকে পড়ার হাত থেকে বাঁচবে!
সাত. এখন আমার কোন প্রেম নেই। সম্পূর্ণ প্রেমহীন।
ক্যারিয়াম কি হবে বোধ করি তাই আমার বর্তমান প্রেমে রুপ নিয়েছে। এ প্রেম শেষ পর্যন্ত আমাকে কোথায় নিয়ে যায়। তাই এখন দেখার বিষয়।
আন্তোনিও’র দর্শনকে সামনে রেখে এ লেখা লিখেছি। প্রিয় পাঠক এবার বলুন।
আমি কী সুখী? না দু:খী? বিষয়টি নির্ধারণের ভার আপনার হাতে ছেড়ে দিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।