আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউনূসের দারিদ্র্য বানিজ্য

বেহুলার প্রতি অর্ফিয়ুস : স্থুল সফলতার গৌরব শিল্প নয় ।

গরীবদের ধর্ষণ করার জন্য যুগে যুগে শাসকশ্রেণী কণ্টকযুক্ত শিশ্ন আবিষ্কারের অশ্লীল সৃষ্টিশীলয়তায় মত্ত থেকেছে । তাঁরা তাঁদের আবিষ্কৃত শিশ্ন দিয়ে ধর্ষিতাকে ক্ষত বিক্ষত করেই তৃপ্ত হয়নি, ধর্ষিতার শেষ রক্তবিন্দু শুষে নেওয়ার জন্য জোঁকের মত লেগে থেকেছে । যখনই ধর্ষিতার আর্তচিৎকার বিপ্লবে পরিণত হয়ে তছনছ করে দিয়েছে ধর্ষকের কণ্টকযুক্ত শিশ্নকে তখনই ধর্ষক নবনির্মিত শিশ্ন দিয়ে ধর্ষণ করার জন্য ও্যঁৎ পেতে থেকেছে । শোষকের দানবীয় উল্লাস আর শোষিতের করুণ আর্তনাদে ইতিহাস পরিপূর্ণ ।

কখনো শোষক সামন্তপ্রভু সেজে, ব্রাহ্মণ সেজে শূদ্যের ওপর অথবা দাসপ্রভু সেজে দাসের ওপর শোষণ করেছে । আগে শোষণ সহজেই চোখে পড়ত। বর্তমানে শোষণ এতই রঙিন হয়ে উঠেছে যে, তা আধুনিক সভ্যতা বলে মনে হয় ! শোষণের রঙিন রূপ দেয়ার জন্য শাসক সম্প্রদায় এর উপর বিভিন্ন পদক জুড়ে দেয় । এমনকি নোবেলের মত পদক জুড়ে দিতেও সামান্যতম লজ্জাবোধ করে না । আমাদের দেশে ড. ইউনূসের নোবল প্রাপ্তি এর উৎকৃষ্টতম উদাহরণ ।

ইউনূসকে চোর, কর ফাঁকিবাজ, মিথ্যাবাদী, চাটুকার, দালাল, অমানবিক ইত্যাদি বিশষণে ভূষিত করলে সামান্যতমও ভুল হবে না । গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালে । ১৯৮৩ সালের সেপ্টম্বরের অধ্যাদেশে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের ৬০ ভাগ মালিক সরকার এবং বাকি ৪০ ভাগের মালিক ভূমিহীন গরীবরা(!) । পরবর্তী অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারের শেয়ার কমিয়ে ৪৯% করা হয়েছিল । বর্তমানে সরকারের শেয়ার আরো কমিয়ে ২৫% করা হয়।

আপাতদৃষ্টিতে এটিকে ভালো মনে হলেও, এটি আসলে করা হয়েছে লভ্যাংশ থেকে সরকারকে বঞ্চিত করার জন্য । ১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কুয়ালামপুরের একটি সভায় বলা হয়েছিল গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ১৬% । কিন্তু উক্ত বছর বাঙলাদেশি একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাতকারে ইউনূস বলেছিলেন, " নিশ্চয়ই আমরা ২০ ভাগ সুদ নেই । যদি কেউ এটাকে বেশি বলে ভাবে, তাহলে বেশি। তবে আমি বেশি বিব্রতবোধ করি না ।

আমরা তো জোর করে ঋণ দেই না । " বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ সুদ নিয়ে থাকে । যেখানে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের ঋণ দিয়ে সর্বোচ্চ ১৮% (বর্তমানে সম্ভবত ১৫%) সুদের বেশি নেয় না, সেখানে ইউনূস গরীবদের ঋণ দিয়ে ২৫% থেকে ৩০% পর্যন্ত সুদ নিচ্ছেন ! এটা নিঃসন্দেহে শোষণ, অমানবিক এবং ভাঁওতাবাজি । গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথমদিকে স্লোগান ছিল, " ঋণ মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার "। উপরোক্ত স্লোগানে মৌলিক এবং মানবিক শব্দ দু'টি হাস্যকর ।

ঋণ কখনই মানুষের মৌলিক অধিকার হতে পারে না। আর অমানবিক শব্দটি থেকে অ উপসর্গটি খসিয়ে মানবিক করা হয়েছে । এটি আসলে অমানবিক । ১৯৯১ সাল থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রত্যেক সদস্য সপ্তাহে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের গ্রুপ ফান্ডে ১ টাকা করে জমা দেন । অর্থাৎ প্রত্যেক সদস্য বছরে ৫২ টাকা জমা দেন ।

ইউনূসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯৯১ এর দিকে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ছিল প্রায় ১৬ লক্ষ । ফলে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় কয়েক শ' কোটি টাকা ফান্ডে জমা হয় । এছাড়াও ইউনূস বাঙলাদেশে গ্রামীণফোন মোবাইল কোম্পানি চালু করেন । গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সর্বাধিক বিস্তৃত এবং সর্বাধিক গ্রাহক হলেও, গ্রামীণফোনের কলচার্জই সব থেকে বেশি । এভাবে গরিবের টাকা মেরে এবং দেশের মানুষদের শোষণের মাধ্যমেই তিনি মিরপুরে নির্মাণ করেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের বিশাল বহুতল বিশিষ্ট ভবন ।

এই লাভের টাকাতেই তিনি বছরে অন্তত দশ-পনেরো বার বিদেশ ভ্রমন করেন । এছাড়াও তিনি আমেরিকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন গ্রামীণ ফাউন্ডেশন ইউএসএ । ইউনূস যার প্রতিষ্টাতা এবং বোর্ড মেম্বর । সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর দালালি করে এবং গরিবের রক্ত চোষে ২০০৬ সালে তিনি আমাদের জন্য নোবেল পুরস্কার নিয়ে আসেন । কিন্তু গত বছরের পহেলা ডিসেম্বর নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করেছিল ।

এতে বলা হয়, প্রায় ৭০০ কোটি টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে ইউনূস "গ্রামীণ কল্যান" নামে নিজের প্রতিষ্ঠিত ও মালিকানাধীন অন্য একটি কোম্পানিতে স্থানান্তর করেন । তথ্যচিত্রটিতে আরো বলা হয় যে, বাঙলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংক গরীবদের দারিদ্র্য দূর করার পরিবর্তে তাঁদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবনকে আরো বেশি দুর্দশায় নিক্ষেপ করে । টাকা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ইউনূস যুক্তি দেন যে, তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর করের বোঝা কমিয়ে আনার জন্য টাকা সরিয়েছেন । কিন্তু এই কর কাকে ফাঁকি দেওয়া হয়েছে ? এটি ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বাঙলাদেশ সরকারকে । সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আমাদের গরিবের বন্ধু (!) এবং মানবতাবাদী (!) ইউনূস চোর এবং কর ফাঁকিবাজ ।

উক্ত তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর ৬ ডিসেম্বর আমেরিকার বিখ্যাত দ্যা ওয়াল স্ট্রিট্‌ জার্ণাল-জি " ক্ষুদ্র ঋণ : গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস কি গরিবের রক্ত শোষণকারী ? " শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রচার করেছিল । আমারো একই প্রশ্ন, গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস কি গরিবের রক্ত শোষণকারী ? তথ্যসূত্র ড. ইউনূসের দারিদ্র্য বানিজ্য : বদরউদ্দিন উমর

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।