ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বশেষ জয় কবে?' কোনো আড্ডায় প্রশ্নটা উঠলে উত্তরের জন্য অনেকটা পেছনেই চলে যেতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো একনিষ্ঠ ভক্তের পক্ষেও উত্তরটা দেওয়া মুশকিল। প্রায় সোয়া চার বছর আগে, ২০০৬-এর নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকানদের সর্বশেষ হারিয়েছিল ক্যারিবীয়রা। তারপর থেকে মুখোমুখি ১১টি লড়াইয়েই প্রোটিয়াদের জয়ের উচ্ছ্বাস। দুদলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও বিস্তর ব্যবধান।
দক্ষিণ আফ্রিকা ঘরের মাঠে ভারতকে ওয়ানডে সিরিজে হারানোর আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ হারানোর বেদনায় আক্রান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ দিলি্লর ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে কে ফেভারিট, তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না!
গ্রায়েম স্মিথ অবশ্য ফেভারিটের মর্যাদায় মোটেও আপ্লুত নন। ইংল্যান্ডের সঙ্গে রায়ান টেন ডোশাটের দারুণ ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কের কণ্ঠে সতর্কতার সুর, 'ওরা খুবই ভালো খেলবে, এমন প্রস্তুতি নিয়েই আমরা ম্যাচটা খেলতে নামব। খেলাধুলায় আপনাকে যেকোনো কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।
নিজেদের দিনে আপনার প্রতিপক্ষ ভালো পারফর্ম করতেই পারে। টেন ডোশাটের মতো একটা ভালো পারফরম্যান্সই কিন্তু আপনাকে চাপে ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই কাউকেই হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই। আপনাকে শুধু ভালো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামা নিশ্চিত করতে হবে। '
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট অনেক দিন ধরেই অস্তাচলে।
নামতে নামতে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে তারা এখন বাংলাদেশেরও নিচে, ৯ নম্বরে! গত দুই বছরে ৩৭টি ওয়ানডের ২৫টিতেই হেরেছে ক্যারিবীয়রা। ১১ জয়ের ছয়টিই ছিল জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ড-কানাডার মতো দুর্বল দলের বিপক্ষে। ড্যারেন স্যামি অবশ্য এসব পরিসংখ্যানকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছেন না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক বরং সবাইকে চমকে দেওয়ার ঘোষণাই দিলেন সোচ্চারে, 'আমরা অন্য দলগুলোর মতো লড়াই করার মানসিকতা নিয়েই এখানে এসেছি। আমরা মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিতে পারলে যেকোনো কিছুই সম্ভব।
' র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশেরও নিচে চলে যাওয়াকে হতাশা নয়, অনুপ্রেরণা হিসেবেই দেখছেন তিনি, 'আমরা এ ব্যাপারে ভালোই জানি। সেই সঙ্গে এটাও জানি যে বিশ্বকাপ হলো ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদার আসর। তাই বিশ্বকাপে ভালো খেলেই র্যাংকিংয়ের চেহারা পাল্টে দিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। '
মুখোমুখি লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক এগিয়ে থাকলেও (আজকের আগে ৫০ ম্যাচে প্রোটিয়াদের ৩৭টি জয়ের বিপরীতে হার ১২টি, বাকি ম্যাচটি পরিত্যক্ত) বিশ্বকাপে দুদলের লড়াইয়ে সাম্যাবস্থা। ১৯৯২-এ প্রথম দেখায় দক্ষিণ আফ্রিকা সহজে জিতলেও চার বছর পর ব্রায়ান লারার দারুণ এক সেঞ্চুরি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করে দিয়েছিল তাদের।
২০০৩ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেও লারার আরেকটি সেঞ্চুরির সুবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে হারিয়েছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে। গতবার ক্যারিবীয়দের তাদেরই মাঠে হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে ভুল হয়নি স্মিথের দলের। তবে দুটো বিশ্বকাপ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগে জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য আজ অবশ্যই অনুপ্রেরণা।
শুধু দুদলের লড়াই নয়, তাকিয়ে থাকতে হবে পিচের দিকেও। আজকের ম্যাচ দিয়ে প্রায় সোয়া বছর পর ঐতিহাসিক কোটলায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে।
২০০৯-এর ডিসেম্বরে দিলি্লর মাঠটিতে ভারত-শ্রীলঙ্কার একটি ওয়ানডে মাত্র ২৩.৩ ওভার হওয়ার পর পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছিল পিচের 'বিপজ্জনক' আচরণের কারণে। এর পর আইপিএলের খেলা হলেও কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি। পিচ নিয়ে যে এখনো দুশ্চিন্তা দূর হয়নি দিলি্ল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি চেতন চৌহানের, তা জানালেন অকুণ্ঠেই, 'বৃহস্পতিবারের পরই আমি বোধ হয় নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারব!'
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।