আমি খুবই সাধারণ
আমি সারাজীবন সংবাদ পড়েছি, সেই সাথে কলাম পড়েছি। কিন্তু যেসব ঘটনা প্রকৃতই ঘটে তার অকুস্থলে থাকার সুযোগ হয় নি। সাংবাদিকদের আমি খুবই পছন্দ করতাম। এজন্য যে তারা কতো হক কথা বলে। দেশের জন্য কথা বলে।
তবে আমার এক ভাই বলেছিলো তুমি যে খবর পেপারে পড়ো তার অধিকাংশই মিথ্যা আমি তার কথাটি উড়িয়ে দিয়েছিলাম। এ কথাও বলতেন যে সাংবাদিকরা টাকার জন্য খবরকে ইচ্ছামতো পাল্টায়।
আজ এগুলো সত্যতা পেলাম। প্রকৃত ঘটনা শুনেন এবার।
আজকে রুয়েট (রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) এর একটি ঘটনা নিয়ে এ কথা।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও রুয়েটের অন্তর্গত একটি কলেজের ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষ নিয়ে খবর।
এ নিয়ে বিভিন্ন চ্যানেল ও দৈনিক সংবাদপত্রের শিরোনাম:
চ্যানেল আই:
রুয়েটে ছাত্রদের সাথে কলেজ ছাত্র ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে আহত অন্তত অর্ধশতাধিক।
একেবারে ডাহা মিথ্যা কথা। এলাকাবাসীর সাতে কোন সংঘর্ষ হয় ন। অর্ধশতাধিক তো দূরের কথা শুধুমাত্র পাচ জন আহত হয়েছে।
এদের সবাই রুয়েটের ছাত্র। এলাকাবাসী ও কলেজ ছাত্র নেই।
এনটিভি:
এদের খবর চ্যানেল আইয়ের অনুরূপ । শুধুমাত্র পার্থক্য এরা নির্দিষ্ট করে অর্ধশতাধিক আহত বলেছে।
অন্যান্য চ্যানেলের একই দশা।
চ্যানেল এটিএন বাংলা
সবচেয়ে বড় মিথ্যাচার ও মূর্খতার পরিচয় দিয়েছে।
দেখুন শিরোনাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কলেজ ছাত্রীকে উত্যক্ত করা নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষ।
অথচ এতে বিন্দুমাত্র সত্যও নেই।
প্রথম আলো বেশ সঠিক খবর দিয়েছে। যা অধিক বিস্তারিত ও সঠিক।
তবে এটা সঠিক নয় যে, এলাকাবাসীর সাথে কোন সংঘর্ষ হয় নি।
প্রকৃত ঘটনা:
শহীদ মিনারের বেদীতে বসে রুযেটের অন্তর্গত কলেজের কয়েকজন ছাত্র প্রেমিকা নিয়ে ডেটিং করছিলো। রুয়েটের দুজন ছাত্র এদের তা করতে নিষেধ করে। এ নিয়ে তর্ক হয়। পরে মিমাংসা হয়।
কিন্তু পরে এই কলেজের ছাত্র দুজন তাদের লীগের নেতাদের নিয়ে এসে রুয়েটের ছাত্রদেরকে মারধর করে। এখবর শুনার পর রুয়েটের ছাত্ররা ক্ষেপে যায়। তারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এবং সেই কলেজের প্রাংগনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। সেসময় কয়েকটি ছাত্র কয়েকটি চেয়ার ভাংচুর করতে শুরু করলে বড় ভাইরা তাদের নিষেধ করে।
এর পর তারা চলে আসে। কিন্তু পরে কয়েকজন রুয়েটের ছাত্র বাইরে একটি হোটেলে খেতে গেলে তার শরীর ও মাথায় আঘাত করে। এরপর সেই কলেজের ছাত্ররা বাইরে থেকে সশস্ত্র হামলা ও ইট পাটকেল মারে। এরপর রুয়েটের ছাত্ররা ক্ষেপে গিয়ে তাদের ধাওয়া করে। কিন্তু তারা পালিয়ে যায়।
এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা কলেজে হামলা করে এবং কলেজের বাইরে থাকা প্যান্ডেলে আগুন ধরিয় দেয় এবং ভাংচুর করে।
পুলিশ ছাত্রদের নিষেধ করলেও আক্রমণকারী কলেজ ছাত্রদের কিছু করে না।
অথচ প্রকৃত ঘটনা থেকে কতদূরের খবর না ছাপিয়েছে সংবাদ মাধ্যম। এরই নাম বোধহয় হলুদ সাংবাদিকতা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।