ভালকে সমর্থন এবং খারাপকে বর্জন করতে শিখুন ।
মেঘলা কে অমিতের চিঠি..............
মেঘলা অমিতের চিঠি পড়ে হাসে................., সেই হাসির ফাঁক দিয়ে নিজের অজান্তেই দু'চোখ হতে জল গড়িয়ে পড়ে। .................মানুষ কত বিচিত্র প্রানী! সে ঋনাত্বক আচরনের মাধ্যমে প্রায়ই তার হৃদয়ের ভাব প্রকাশ করে। কেউ সব কিছু হারিয়ে প্রায়ই না কেঁদে হাসে, কেউবা আবার অনেক কিছু পেয়ে_ না হেসে, কাঁদে। এ হচ্ছে তার গভীর ব্যাথা বা আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।
মেঘলার কান্নার অর্থটাও তাই। সে ভাবতেও পারেনি ......... এতকাল ধরে যার দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য সাধনা করছে, তপস্যা করছে। সে কিনা এত অল্প সময়ের মধ্যে তাকে তার হৃদয়ের শীর্ষ সিংহাসনের অধিকারিনী করে তুলে রাখবে হৃষয়ের মাঝে।
মেঘলা টেবিলে বসে, অমেতের চিঠির উত্তর দিতে................
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে বড় কে ছোট করার প্রচেষ্ঠায়ই সবাই ব্যস্ত। এখন আগের মত বড় কথকে চিঠির মাধ্যমে পাঠায়না SMS এর মাধ্যমে প্রকাশ করে।
আর আপনি কিনা এই ছোট্র কথাটুকু প্রকাশ করতে এত কাগজ, কালি, কথা, সময় ব্যয় করলেন! নিজেকে কথা-সাহিত্যিক খ্যাতিতে ভূষিত করার প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছেন নাকি?
এইটুকু পড়ে আশা করি বিব্রত হবেন না। আপনাকে বিব্রত করার জন্য এসব বলিওনি।
সত্যি বলতে কি, প্রেম ভালবাসা সম্পর্কে কোন কালেই আমার ধারনা ছিলনা। You know how is my family? অন্য আট' দশটা মেয়ের মত বিকাশিত হওয়ার পরিবার -পরিবেশ আমি পাইনি। হয়ত বলবেন বই পড়েও মানুষ জ্ঞানার্জন করতে পারে।
But আমার সেই অবকাশ কই। ছোট ভাই-বোনদের দেখাশনা আর সংসারের টুকিটাকি কাজ কারার পর যেটুকু সময় পাই তা পাঠ্যবই পড়তে পড়তেই শেষ হয়ে যায়। তাই হয়ত ভাললাগা-ভালবাসার দিকে মন দেয়ার সময়ই পাইনি, হয়ত প্রয়োজনও অনুভব করিনি।
নিজেকে সবকিছু থকেই দূরে সরিয়ে রেখছিলাম। But আমি থেমে থাকলে আমার মনও যে থেমে থাকবে তা কিন্তু নয়।
সে ঠিকই আমার অজান্তে হৃদয়ের গভীরে আবেগের দৃঢ় ভিত রচনা করে চলেছে.............. আমি বুঝতোও পারিনি।
কবে আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম মনেও নেই। মনে আছে কেবল........একদিন রতন-ভাই বলেছিল আপনি ওর বন্ধু, ঢাকায় থাকেন, নাম অমিত....................। কতদিন দোতলায় রামী আপার কাছে অথবা রতন ভাই'র কাছে যাওয়ার সময় আপনার সামনে পড়েছি ! কোন দিন ভালকরে খেয়ালই করেননি। আমিও নিজের মত পাশ কেটে চলে গিয়েছে বারংবার ।
কোনদিন একটু কথাও বলেননি। তখন বয়সই বা কত আমার? হৃদয়ে প্রনয়ের জন্য কোন জায়গা তখনও বরাদ্দ হয়নি। তনুতে যৌবনের ছোঁয়া লাগেনি.....................।
এভাবেই কাটতে থাকল দিন, মাস, বছর। ঋতু বদলানোর সাথে সাথে নিজের মধ্যেও কেমন যেন এক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে থাকলাম।
শারীরিক, মানুষিকও। আগে যেখানে আপনার পাশ কেটে চলে যেতে পারতাম, এখন তা পারিনা। নিজের অজান্তেই হাতদুটি ওড়নায় মুখ ঢেকে দেয়। খুব লজ্জা হয় আপনার সামনে যেতে। নিজের মধ্যে এতটা লজ্জা-সংকোচ মাখানো ভাব আগে কখনও লক্ষ্য করিনি।
আপনার নাম শুনলে অন্তরটা যেন ধক্ করে উঠত, মন চাইত আপনাকে নয়নের সামনে বেধে রাখি, বারবার, বারবার, আবার দেখি। যেই ভালবাসাকে চিনতাম না, যার সম্পর্কে জানতাম না সেই ভালবাসা যে কখন আমার মধ্যে ঢুকে নিজের মধ্যে আমাকে ডুবিয়ে ফেলেছে বুঝতেই পারেনি।
যখন বুঝলাম তখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে। একে একে ফেরার সকল পথ তখন বন্ধ হয়ে গেছে। আমার কচি মনের বিন্দু বিন্দু ভালবাসারা সিন্ধুর জন্ম দিয়েছে, আমার প্রণয় স্বপ্নের ধুলি কনাগুলো গড়ে তুলেছে প্রেমের সম্রাজ্য ফেরার পথ আফ আমার অচেনা, এত শক্তিও নেই যে মনের বলে_ ভালবাসার সে সাগর শুকিয়ে ফেলব, ভেঙ্গে ফেলব সে প্রেমের সম্রাজ্য।
এসব আজ যে পলকেই করতে পারবে সে আমি নই.......সে কেবলই আপনি।
রতন ভাই আমাকে অনেক বুঝেয়েছে। আমি নিজেও ভাল জানি যে.......এই জনমে কখনও আপনাকে পাওয়া সম্ভব নয়, প্রত্যাশাও করিনা। আমার এই জনমটা পাওয়ার নয় কেবলই চাওয়ার। এই জনমে বিধির কাছে কেবল আপনাকেই চেয়ে যাব।
বিধিকে বলব....... "আপনার ভান্ডারে যত দুঃখ আছে এই জনমে সব আমায় দেন, তবুও পর জনম হতে জনম জনম তাকে আমার করে দেন"।
এই জনমে আপনার বিরহে পুড়ে পুড়ে নিজে খাঁটি হব, নিজের ভালবাসাকে খাঁটি করব। আর পর জনমে সব আপনাতে বিলিয়ে দেব। জানেন এত কিছু বুঝেও নিজেবে বেধে রাখতে পারিনা। মনটা কেবলই ছুটে যেতে চায়, সুযোগ পেলেই পাগল হয়ে উঠে, হয়ে উঠে উন্মাদিনী।
না পাওয়ার, মাঝে যতটুকু আদায় করতে পারি ততটুকুই তো লাভ! ঐটুকু বুকে বেধেই এই জনমটা আনন্দচেত্তে কাটেয়ে দিতে পারব।
আপনি হয়ত আমায় নিলাজ ভাববেন। ভাববেন সমাজের চোখে কি পুত-পবিত্র, অথচ....................! যদি তাই ভেবে থাকেন তবে বলবনা যে তা দোষের কিছু নয়, বরং বলব আপনার এই ভাবনাটা পূর্ন অন্যায়। কারন আমি যা করেছি তা কেবল আপনার জন্যই । আমি ভাল করেই জানি আপনার সাহস এবং সাধ্যের আদি-অন্তের খবর।
আমি অমন পাগলামী না করলে আপনিযে আমার এত কাছে আসার সাহস পেতেন না সে আমার অজানা ছেলনা। আর সেদিন আপনি ঝড়ো হাওয়া আর বৃষ্টিস্নাত কাপুনির মধ্যেও এত সাহস কোথা থেকে পেলেন সেও আমি জানি।
সেদিন সেই ঝড়ের সাথে আপনার মনের সাগরে আকাশ ছোঁয়া প্রেমের ঢেউ উঠেছিল, তাই এতটা সাহসী হয়ে উঠেছিলেন। আমি জানি ঢেউ যত প্রলয়ংকারীই হোক না কেন তা এক সময় শান্ত হবেই। এটাই সত্য, এটাই বাস্তবতা ।
আমি সব ক্ষেত্রে এটা সহজে মেনে নিলেও, আমার প্রতি আপনার প্রেমের এ ঊর্মির ক্রমাবনতি মেনে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আপনাকে পাবনা সেটা জেনেও নয়। হয়ত আমায় স্বার্থপর ভবতে পারেন। তাতে ক্ষতি নেই, কারন আমার ভালবাসার ব্যাপারে আমে এমনই। যদি তা নাই হতাম তবে এমন ভবে আপনাকে জড়িয়ে ধরতে পারতামনা।
আমার বুকে আপনার স্পন্ধনের শব্দ প্রতিধ্বনিত করতে পারতামনা।
আমার সে রাতের পাগলামীর কথা মনে করে আপনি কি ভবেন তা আমি জনিনা। তবে বিশ্বাস করুন, আমি ইচ্ছে করেই অমন করেছিলাম। কোন আবেগের মোহে নয়, কোন উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে নয়, ইচ্ছে করে, সজ্ঞানেই অমন করেছি। আমার প্রানপ্রিয় মানুষটির সাথে এমন আবেগী মূহুর্ত কাটানোর স্বাদ জানতেই আমি এমন করেছিলাম।
এবং এসবের জন্য আমি একটুও অনুতপ্ত নই।
আমি ভালই জানি, আপনার দ্বারা আমার ক্ষতি কোন কালেই সম্ভব নয়, আপনার প্রতি আমার এই বিশ্বাস সহজেই গড়ে ওঠেনি। আমার এ বিশ্বাস, শত-সহস্র, কোটি কোটি মূহুর্তের জমানো সম্পদ। আর এ বিশ্বাসটুকু যদি সে রাতে কোন কারনে ভুল হয়ে যেত, যদি কলঙ্কের দাগ লেগে যেত আমার গায়ে তবুও আফসোস করতামনা । বরং সেই কলঙ্ক'কে নিজের শোভা ভেবে বয়ে বেড়াতাম অনন্ত কাল।
কারন আমি তো সেই কবেই নিজেকে আপনার করে দিয়েছি। এখন আমার আমি তো আর আমার নই কেবলই আপনার।
লিখতে লিখতে অনেক সময় হয়েছে। রাত পোহাবার আর বুঝি বেশি বাকী নেই। এবার না হয় থেমেই গেলাম।
পরসংবাদ, যা বলার জন্য এই চিঠি___ সামনেই আমার পরীক্ষা, মনে আছে নিশ্চই। আপনার এই শত ব্যস্ততার মাঝে যদি একটু সময় করে আসতেন। তবে কিছু উপদেশ, কিছু জ্ঞান, সামান্য পরামর্শ তার সাথে অল্প আদর-সোহাগ আর ভালবাসা আদায় জরার কিঞ্চৎ প্রচেষ্ঠা চালাতাম।
ভালকথা, আমার এই চিঠির মাধ্যমে সামান্য হলেও জানতে পেরেছেন আপনার প্রতে আমার নেগেটিভ ধারনা কিংবা বিশ্বাস কতটুকু?
আমি ভাল আছি, বাড়ীর সবাইও। নিয়মিত study এবং খাওয়া চলছে এবং ভীতু ছেলেটাকে ভেবে রাত্রি জাগরনের অভ্যাসটা বর্জন করতে এখনও সক্ষম হইনি।
তাই sorry. আর একটা কথা আমাদের এখানে এলে আজকের এই রাত্রী জগরনের জন্য বকবেননা please!
আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনায়...............
আপনারই
মেঘ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।