আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাতি খোদায়ি আযাবের প্রত্যেকটি শর্তই একের পর এক পূরণ করে চলেছে

---

প্রতিটি জাতি/ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তাআলা একটি নির্ধারিত সময় রেখেছেন। এ নির্ধারিত সময়ের পর আল্লাহ সে জাতির পরিণামের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। অথবা বলা যায়, এটি একটি অবকাশ, কারণ এ সময়ের মধ্যে একটি জাতির কর্মকাণ্ড খারাপ ভাল যাই হোক না কেন তার ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয় না। কিন্তু সময়টি অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর জাতিগত ভাগ্যের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত একটি জাতির অতীতের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভরশীল।

যদি তা ভাল হয়, তাহলে জাতির সার্বিক উন্নতি ঘটে। উৎকর্ষতা ও উন্নতির সমস্ত পথ খুলে দেয়া হয়। আর যদি অতীত হয় খোদাদ্রোহিতায় পরিপূর্ণ তাহলে তার পরিণতিতে ঘটে আযাব ও মর্মন্তুদ শাস্তি। يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُؤَخِّرْكُمْ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ۚ إِنَّ أَجَلَ اللَّهِ إِذَا جَاءَ لَا يُؤَخَّرُ ۖ لَوْ كُنتُمْ تَعْلَمُونَ [٧١:٤] আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলার নির্দিষ্টকাল যখন হাজির হবে, তখন অবকাশ দেয়া হবে না, যদি তোমরা তা জানতে! وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَكَانَ لِزَامًا وَأَجَلٌ مُّسَمًّى [٢٠:١٢٩] আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত এবং একটি কাল নির্দিষ্ট না থাকলে শাস্তি অবশ্যম্ভাবী হয়ে যেত।

وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللَّهُ النَّاسَ بِمَا كَسَبُوا مَا تَرَكَ عَلَىٰ ظَهْرِهَا مِن دَابَّةٍ وَلَٰكِن يُؤَخِّرُهُمْ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ۖ فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِعِبَادِهِ بَصِيرًا [٣٥:٤٥] যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃতকর্মের কারণে পাকড়াও করতেন, তবে ভুপৃষ্ঠে চলমানকাউকে ছেড়ে দিতেন না। কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন। অতঃপর যখন সে নির্দিষ্ট মেয়াদ এসে যাবে তখন আল্লাহর সব বান্দা তাঁর দৃষ্টিতে থাকবে। জাতিগত আযাব কয়েকটি পর্যায়ে ঘটতে পারে *ভয়ানক ও বিধ্বংস প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা একটি জাতির মেরুদণ্ড পুরোপুরি ভেঙে দেয় *সামাজিক বিশৃংখলা, অনৈক্য ও চরম মতবিরোধ। ফলে জাতি শতধা বিভক্ত হয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে তা ভেঙে পড়ে *বিদেশি স্বৈরাচারী শক্তির জাতির উপর দীর্ঘকালের জন্য চেপে বসা।

নির্লিপ্ত ও বেপরোয়া অতীত সমৃদ্ধ জাতি নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত করার পর এসব বিপর্যয় কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না । যেসব কারণে একটি জাতি ঐশ্বরিক বিপর্যয় বা খোদায়ি আযাবের জন্য নিজেকে যোগ্য করে তোলে *শিরক *অন্যায় অবিচার *ওজনে কম দেয়া *সমকামিতা *জাতির মধ্যে যারা হেদায়াতকামী তাদের নির্যাতন বা হত্যা করা অন্য আরও অনেক কারণ আছে। তবে এগুলোই বোধহয় প্রধান। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশঃ শিরকের প্রশ্ন আসলে বলা যায় বাংলাদেশের অবস্থা খুব-ই নাজুক। গ্রামে গঞ্জে যেভাবে মাজার ও পীর পুজো চলছে তাকে প্রতিমা পুজো বললে ভুল হবে না।

এছাড়া রাষ্ট্রিয় শিরক ত আছেই। বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে পশ্চাদপদ দরিদ্র জনগণের জন্য সুবিচার পাওয়া অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। ওজনে কম দেয়া অন্য অর্থে লেন দেনে মিথ্যা, প্রতারণা, জোচ্চুরী, জালিয়াতি এখন শুধু ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য না, বড় বড় কর্পোরেট ম্যাগনেটদের জন্য পান্তাভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিডিয়া পত্রিকায় ব্যাভিচারের ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপক কর্মসূচির কারণে ব্যাভিচার, পুরুষ ও মহিলা সমকামিতা ছড়িয়ে যাচ্ছে জ্যামিতিক হারে।

ইসলাম প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে ভয়ানকরকমের বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। সত্য পন্থী ও জাতির ভাল চায় এমন লোকদের কথা বলার অথবা কাজ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এক কথায় খোদায়ী আযাবে নিপতিত হওয়ার প্রত্যেকটি শর্ত অত্যন্ত দ্রুততা ও নিষ্ঠার সাথে পূরণ করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে নির্ধারিত সময়ের পর আমরা যে খোদায়ী আযাবের শিকার হব তাতে কোন সন্দেহ নেই। অবস্থা খুব-ই শোচনীয়।

তবে আমরা যদি অনাচার থেকে ঘুরে দাঁড়াই, তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদের এ শাস্তি দিবেন না । এর বদলে তিনি আমাদের জন্য উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথ খুলে দিবেন। সূরা নূহ এর দিকে আলোকপাত করলে এ ব্যাপারে আমরা অভূতপূর্ব দিকনির্দেশনা পাই। ا أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِ أَنْ أَنذِرْ قَوْمَكَ مِن قَبْلِ أَن يَأْتِيَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ] আমি নূহকে প্রেরণ করেছিলাম তাঁর সম্প্রদায়ের প্রতি একথা বলেঃ তুমি তোমার সম্প্রদায়কে সতর্ক কর, তাদের প্রতি মর্মন্তদ শাস্তি আসার আগে। قَالَ يَا قَوْمِ إِنِّي لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ ] সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের জন্যে স্পষ্ট সতর্ককারী।

أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاتَّقُوهُ وَأَطِيعُونِ] এ বিষয়ে যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার এবাদত কর, তাঁকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُؤَخِّرْكُمْ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ۚ إِنَّ أَجَلَ اللَّهِ إِذَا جَاءَ لَا يُؤَخَّرُ ۖ لَوْ كُنتُمْ تَعْلَمُونَ] আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলার নির্দিষ্টকাল যখন হবে, তখন অবকাশ দেয়া হবে না, যদি তোমরা তা জানতে! ........................................................................... فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا ] অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُم مِّدْرَارًاوَيُمْدِدْكُم بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا ( এখন যদি তোমরা তোমাদের পাপাচার থেকে ফিরে আস ) তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।

مَّا لَكُمْ لَا تَرْجُونَ لِلَّهِ وَقَارًا ] তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছ থেকে মান মর্যাদা পাওয়ার মোটেই আশা কর না?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.