আমি ভব ঘুরেঈ হবো এটাই আমার এ্যম্বিশান.....
১৯৭১ সালেই ভারতের বর্ণচোরা বন্ধুত্বের উন্মোচন ঘটে—ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে মুক্তিবাহিনীর প্রতিপক্ষ হিসেবে মুজিববাহিনী গড়ে তোলার মাধ্যমে। উভয় বাহিনীর মূল নিয়ন্ত্রক ছিল ভারত। মুজিববাহিনীকে ভারত প্রেশার গ্রুপ হিসেবে ব্যবহার করে। মুজিববাহিনীর ভয় দেখিয়েই ভারত ভারতে আশ্রিত তত্কালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে অধীনতামূলক সাত দফা চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করে, যা পাঠান্তে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম মূর্ছা গিয়েছিলেন বলে ওই সময়ে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার, পরবর্তীকালে জাতীয় সংসদের স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী লিখিত সাক্ষাত্কারে স্বীকার করেছিলেন। ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলে মুজিববাহিনীকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসানোর ধমক দেয়ার পরই মরহুম তাজউদ্দিন আহমদ অধীনতামূলক চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।
ভারতীয় বিশ্বাসঘাতকতার নগ্ন প্রকাশ ঘটে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ মুহূর্তে। পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করার নামে ভারত আমাদের বড় রেল সেতুগুলোতে বিমান হামলা করে। ভৈরব বাজারের সব মানুষ দেখেছে কীভাবে উত্তর-পূর্বদিক থেকে উড়ে আসা বোমারু বিমান মেঘনায় রেলসেতুর ভৈরব অংশ উড়িয়ে দেয়। ভৈরবের উত্তর-পূর্বদিকে অর্থাত্ সিলেট অঞ্চলে পাকিস্তানের কোনো বিমান ঘাঁটি ছিল না। হার্ডিঞ্জ সেতুরও একই পরিণতি।
একইভাবে লাকসাম রেল জংশনে পড়ে থাকা বহুসংখ্যক রেলবগি ভারতীয় বিমান হামলার কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। চট্টগ্রাম ও চালনা সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহার অনুপযোগী করার উদ্দেশ্যে জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া হয়। এমনি হাজার হাজার ধ্বংসযজ্ঞের দায়দায়িত্ব পাকিস্তান বাহিনীর ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। এসব কিছুর উদ্দেশ্য ছিল যেন নড়বড়ে অবস্থান থেকেই বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।
এ দুরভিসন্ধি আরও প্রকটভাবে ধরা পড়ে ১৬ ডিসেম্বর এবং এর পরবর্তী সময়ে।
১৬ ডিসেম্বর ভারত মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে হাইজ্যাক করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষরকারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মরহুম এমএজি ওসমানী বা অন্য কাউকে রাখা হয়নি। তিনি যেন ঢাকায় পৌঁছতে না পারেন, সেজন্য আগরতলা থেকে ঢাকাগামী তার হেলিকপ্টারে হামলা চালানো হয়। তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও ঢাকায় পৌঁছতে পারেননি। এভাবেই ভারত আমাদের বিজয়কে অস্বীকার করে আমাদের স্বাধীনতা এখন তার উপহার হিসেবে উপহাস করে।
আর ১৬ ডিসেম্বরকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করে।
বিশ্বাসঘাতকতার এখানেই শেষ নয়। ১৬ ডিসেম্বরের পর ভারতীয় সৈন্যরা লুটেরার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তারা কেবল পাকিস্তান বাহিনীর সমরাস্ত্র, সামরিক যানবাহন ও ব্যবহার্য সব সামগ্রীই (যেগুলো আমাদেরই প্রাপ্য) নৌ ও স্থলপথে ভারতে পাঠিয়ে দেয়নি, বরং বিভিন্ন কল-কারখানার যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল, দোকানপাট, এমনকি বেসামরিক আবাসিক গৃহ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল লুণ্ঠন করে সবকিছুই ভারতে পাঠিয়ে দেয়। সিলেট অঞ্চলের বহু অধিবাসী আমাকে বলেছেন কীভাবে তাদের এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ার-বেঞ্চ-ব্ল্যাকবোর্ড মেঘালয়ে নিয়ে গিয়ে সেখানকার মূলত গাছের নিচে বসা স্কুলগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয়।
কোনো গবেষক কিংবা প্রতিষ্ঠান ১৬ ডিসেম্বরের পর লুট হওয়া ঘটনার ওপর কাজ করেননি। তেমনটি করা হলে ভারতের আসল রূপ আরও নগ্নভাবে বেরিয়ে আসত। আবুল বারকাতের মতো ভারত-পোষিত জরিপকারী কিংবা শাহরিয়ার কবিরের মতো ভারতবান্ধবদের চোখে এগুলো গবেষণার বিষয় নয় বলেই হয়তো এ বিষয়টি এখনও জাতির সামনে আসেনি। বন্ধু বলে একটা কথা আছে না।
মূল লিখায় যেতে এখানে ক্লিক করুন.......................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।