আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জনগণকে না বুঝে কি রাজনীতি করা যায়?

আমার পরিচয় আমার রোজনামচায়। জনতার সময়ের দাবিঃ সকল রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে এখন জনতার দাবি কি। ১) যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায়ে ফাঁসি। ২) হরতালসহ সব সহিংসতা পরিহার। ৩) ধর্মদ্রোহীদের নিষিদ্ধকরণ।

প্রথমেই বলে রাখি, আমি একজন সাধারণ মানুষ যার অধিকার আছে দেশে যা চলছে তা নিয়ে মতামত জানাবার। আমি ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে একজন যার কথা ১৬ কোটির জন্যই। তাই আমি মনে করি আমি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল সম্পর্কে আমি বলতে পারি কারণ আমাকে নিয়েই রাজনীতি হয়, আমার জন্যেই রাজনীতি হয়। আজ আমার ফেইসবুকে একটা স্টাটাস দিলাম Question- How can you understand where is your limitation of knowledge? Ans: When you take the step of anger and violence to prove that you are right and the rests are wrong. প্রশ্নঃ কিভাবে আপনি বুঝবেন কোথায় আপনার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা? উত্তরঃ যখন আপনি ঠিক ও অন্যরা ভুল প্রমাণ করতে ক্রোধ ও সহিংসতার পদক্ষেপ নেবেন। জামাত ইসলামঃ আমি আমার ফেবু স্টাটাসটা দিয়েই বিচার করে বলি – জামাত ইসলাম কেন সহিংসতার আশ্রয় নেয়? কারণ জামাত ইসলামের আর কোন তথ্য প্রমাণ বা তর্ক-বিতর্ক করার নেই।

শাহবাগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নয় বরং তাদের আগে থেকেই প্ল্যান ছিল সহিংসতায় যাওয়াটা – কারণটা খুবই সহজ আর তা হল যুদ্ধাপরাধীর বিচারের কাঠগড়ায় তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অবস্থান। আমি আরেকটা স্টাটাস বলি – How can a political party proceed if it always answers the question of its controversial birth? কিভাবে একটা রাজনৈতিক দল এগিয়ে যেতে পারে যদি তাকে সবসময় তার বিতর্কিত জন্মপরিচয় নিয়ে জবাব দিতে হয়? জামাত ইসলাম রাজনৈতিক দলের এই একটা বিষয়ে নিজেরা ভাল মত রাজনীতি করতে পারেন না। আর তা হল তাদের ১৯৭১ সালের ভূমিকা। যে দলটি বাংলাদেশ চায়নি তা নিয়ে সুস্থ মানসিকতার যে কোন মানুষ তো প্রশ্ন তুলবেই, যে তারা আসলে বাংলাদেশের জন্য ভাল কিছু বিয়ে আনবে কিনা। কিন্তু তারা হয়ত ধর্মীয় অনুভুতির কথা বলবেন – তাতে মানুষের সমর্থনের কথা বলবেন কিন্তু মূল নেতাদের সমর্থনের বেলায় খুব ভাল করে আমি বলতে পারি নতুন যারা জামাত-শিবির করেন তারা কেউ মুখে না বললেও মনে মনে তাদের সমর্থন দেননা।

জামাত জনগণঃ খুবই সত্য কথা এই যে বাংলাদেশের বেশীর ভাগ জনগণ চায় ইসলামী শাসন। ইসলামে যে আচার আচরণ শেখায় তা ধারণ করার জন্য মানুষের আকুলতা। যে কোন ধর্মকে ও ধর্মানুসারীকে সম্মান প্রদর্শন ও তাদের অধিকার নিশ্চিতকরণ পবিত্র আল-কোরান শিখিয়েছে। তাই হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর দলে যোগদান করতে চায় যে কোন অহিংসনীতির মানুষ। জামাতকে তাই অনেকেই বেছে নিয়েছে এই জন্য যে - যদি সেই কাঙ্খিত শান্তি পাওয়া যায়।

কিন্তু প্রথমে এই জনগণ দেখলো রাজাকারদের মুখ, যারা কিভাবে গণহত্যা করেছে, ইসলামকে বিকৃত ব্যাবহার করে তারা কিভাবে ১৯৭১ সালে নিরাপরাধ মহিলাদের ধর্ষণ করেছে ও ধর্ষণে সাহায্য করেছে। কিন্তু তারপরেও যখন বিএনপি সরকার তাদের রাজনীতি করার অধিকার দিল তখন তাদের ইসলামী পতাকা দেখে সেই ইসলামী সুশাসনের আশায় জনগণ আবার এসেছে আর ৪২ বছর পর আবার ধোকা খেয়েছে। এই বার বার ধোকা খাবার মূল কারণ হল – কখনই একজন দেশদ্রোহী সত্যিকারের রাজনীতিবিদ হতে পারেন না, কারণ তিনি তো এ দেশটাই চান নাই, আর তার এ না চাওয়ার জন্যও তিনি কিন্তু যুদ্ধও কম করেন নাই – তবে ওটাকে যুদ্ধ বলে না – বলা হয় ষড়যন্ত্র ও ইসলামের ভাষায় মুনাফেকী ও কুফরী। তাহলে এই বিশাল জামাত জনগোষ্ঠির কি করা উচিত? ১) যদি সত্যিকারের ইসলামকে মেনে চলে তাহলে অহিংসতায় চলে আসা উচিত। গণজাগরণ মঞ্চে যোগ দিতে ইচ্ছে না করলে মসজিদে অবস্থান নিয়ে জিকির মিলাদ করতে পারে।

ইসলামের কথা জানাতে পারে। আমি বলব এটাতো আরো ভাল সময় ইসলাম প্রচার ও প্রসার ঘটানোর ও চর্চা করার। তবে মারামারিতে গেলে এটাকে জাহিলিয়াত যুগের অধৈর্য্য কাফেরদের মত আচরণ ধরতে হবে। মারামারি কোন সমাধান আনে নাই, আনবেও না। ২) যুদ্ধাপরাধীদের সুষ্ঠু বিচার চাওয়া উচিত।

তবে সত্যি কথা কি জামাতি জনতার প্রতিবাদ করার কিছু নাই। কারণ প্রথমতঃ মূল নেতারা ১৯৭১ সালের রাজাকার, আর দ্বিতীয়তঃ এটা ৪২ বছর পর প্রমাণসহ আবার উত্থাপিত হয়েছে। তাহলে প্রতিবাদ করবে কিসের বিরুদ্ধে? নিজের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় কি? ৩) মুসলমান আগে আর দেশ পরে – এমন বোকা নীতিতে যাওয়াটা কিন্তু আবারও নিজের অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়া। ইসলাম কোন রাস্ট্র নয় – বাংলাদেশ হল স্বাধীন রাস্ট্র যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা হল ইসলাম চর্চার অধিকার। দেশ না থাকলে অধিকার থাকবে না আর তখন ধর্মচর্চা তো হবেই না, নিজের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা এই মৌলিক অধিকার বাঁচিয়ে রাখাটাও কঠিন হবে।

ঈমান রাখতে হলে দেশকে ভালবাসতে হবে – দেশপ্রেম ঈমানের অংগ আর একটা অংগহীন ঈমান নিয়ে ইসলাম হবে না। যারা বোঝায় দেশপ্রেম ঈমানের অংগ আর ঈমান দেশপ্রেমের অংগ নয় – তাই দেশপ্রেম ছাড়া যায়; তাদের এলেমের সমস্যা থাকলে বুঝানো উচিত আর এরপর বাড়াবাড়ি করলে সোজা সমাজচ্যুত করা উচিত। ৪) দাঙ্গায় যাওয়া কোন জনগণের উচিত নয়। এটা নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন। এটা ইসলামের নীতি নয়।

বরং যার যা ভেঙ্গেছে তা গড়ে দিয়ে আসাটাই ইসলামের নীতি। যারা দাঙ্গায় যেতে বলেন তাদেরকে বোঝানো যেতে পারে পবিত্র কোরান কিভাবে ধৈর্য্যধারণ করতে বলেছে। জামাতের যুদ্ধাপরাধী নেতারা ফাঁসি পেয়ে মারা যাওয়াটা ইসলাম ধ্বংস হওয়া না। বরং ইসলাম কলঙ্ক মুক্ত হওয়া। দাঙ্গা ফাসাদ করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের মত জনতার নাগরিক অধিকার নষ্ট করা ঠিক নয়।

৫) সব মিলিয়ে জামাত জনতার উচিত এখনকার সময়ের নেতাদেরকে বলা যে ধৈর্য্য ধরে নতুন দল গঠনের মানসিকতা রাখা, যেখানে ইসলামী সুশাসনের রাজনীতির কথা থাকবে। কি কি ভুল ছিল তা বের করা, আর উস্কানীমুলক কথা না বলা। জামাত তরুণ নেতাঃ আমি মনে করি নেতৃত্ব দেখানোর এটা অনেক বড় সুযোগ জামাতের বর্তমান নেতাদের– যদি অহিংসতার পথ বেছে নেয়া হয়। আমার ফেবু আরেকটি স্টাটাস দিলাম। Justice delayed justice denied -- but if justice revives, it gets endless life. বিচার দীর্ঘায়িত করা মানেই বিচার বানচাল – কিন্তু আবার যদি বিচার পুরুত্থিত হয় তাহলে তা অমর জীবন পায়।

জামাত-শিবিরের নেতারা অনেক বুদ্ধিমান ও সুশৃখংল। তাই এই সময়টা ক্রান্তিকাল হিসেবে না নিয়ে, এটা পূরানো নেতাদের ভুল শোধানোর সময় হিসেবে নেয়া উচিত। আদর্শে পরিবর্তনের কথা আসলেও দেশ বিরোধী কোন অবস্থানে যাওয়া কখনই উচিত নয়। ৪২ বছর পর যে বিচারটা উঠেছে এটা এখানেই শেষ করে দেয়া উচিত। এটা বানচাল করলে আবার এ বিষয়টা উঠবেই আর তখন কিন্তু জামাত ইসলাম আর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে না।

১) পূরানো নেতাদের ভুল বয়ে বেড়ানোর মত অভিশাপ নিয়ে আর যাই হোক রাজনীতি হয় না। আর সেই ভূলগুলোকে নির্ভুল প্রমাণ করার মত অনৈতিক ও অযৌক্তিক কাজ করার কোন মানে হয় না। বর্তমান জামাত নেতারা যদি ভাবেন ইতিহাস বদলে দেবেন তাহলে তা হাস্যকর। আমি যদ্দুর জানি ভবিষ্যত বদলানো যায় – অতীতকে নয়। তাই জনতার মুল মন্ত্র বুঝুন আর তার সাথে এগিয়ে যান।

২) যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পর যে কথাটা এসেছে তা হল জামাত নিষিদ্ধকরণ। এটা এসেছে জামাতের লোকেদের সহিংসতার আশ্রয় নেয়ার কারণে। জনতাকে বোঝার চেষ্টা করা উচিত ছিল, এখনো সে সুযোগ আছে। জনতা হরতাল চায় না, জনতা হত্যা চায় না। আমার এটাও মনে হয় আস্তিক নাস্তিক ইস্যু নিয়ে যে গ্রাম্য পলিটিক্স খেলা তা বেশ ক’দিন জমে উঠলেও তা আবার ক’দিনের মধ্যে বানচাল হবে।

তাহলে কি আবার হত্যা করাটা কি ঠিক হবে? এভাবে কি জামাত কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে না? এভাবে কি তাদের ব্যান করার যুক্তিটা কি সুদৃঢ় হচ্ছে না? ৩) ধর্মদ্রোহীতার প্রমাণ কিন্তু পুরোনো নেতারা দিয়েছেন। জামাতকে সিগনেচার কিলিং হিসেবে গলাকাটা-রগকাটা হিসেবে সবাই চেনে। এটা কিন্তু জামাতের জন্য ঘৃণার পাহাড় এনেছে – শ্রদ্ধা আনে নি। তাহলে অনেক বড় দ্বায়িত্ব থাকে নতুন নেতাদের। এসব পরিহার করে সত্যিকারে ইসলাম যে ধৈর্য্য ও অহিংসতাকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন করে আদর্শ গড়ে তুলতে হবে।

আমি দেখেছি জামাতের কোচিং সেন্টারগুলো ভাল হয়, রেটিনা বা ইন্ডেক্স বা প্রবাহ ভাল পড়ায়, কোচিং এর ছেলেমেয়েদের জামাতে আহ্বান করতে দেখেছি, জোরাজোরি করতে দেখি নি। তাহলে এখন কেন রাজনৈতিক বর্বরতা দেখবো? জামাত-শিবিরের পুলিশকে ফুল দেবার ঘটণাটা আমার অভিনব লেগেছিল, আমি ভেবেছিলাম শাহবাগ চত্বরের মত কোথাও জামাতি চত্বর হবে। যেখানে মানুষকে আহ্বান করা হবে। জুম্মার পর দল বেধে জামাতি মুসুল্লিরা – এসো আলোর পথে – প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রজন্ম চত্বরে যাবে আর সবাইকে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে আসবে – কিন্তু তারা এটা না করে ককটেল ফুটিয়ে আসলেন আর নিজের দলের আদর্শের বারোটা বাজিয়ে আসলেন। ৪) জামাত ব্যান হলে কি গৃহযুদ্ধ করতে হবে? একটা কলংকিত আদর্শ নিয়ে চলার চাইতে নতুন আদর্শ নেয়াটা কি আরও ভাল নয়? ইসলামী দল হিসেবে মুসলিম ব্রাদারহুডকেও আনা যায় এদেশে, তবে পরে তা আবার হিজবুত-তাহিরীর মত জঙ্গী সংগঠন হয়ে নিষিদ্ধ না হয়ে বসে।

আমার তো মনে হয় জামাত চাইলে সংশোধনী আদর্শ বের করতে পারে যেটা হবে নির্বাচনী ইস্তেহার যে তারা যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে সম্মান জানিয়ে কোন যুদ্ধাপরাধীকে দলে স্থান দেবে না। জামাত দাবি জানাতে পারে এই বলে যে তারা রাজনীতি করতে চায়, তবে তাদের সংশোধনীকে মেনে নেয়া হোক। জনতার স্পষ্ট দাবি ছাড়া তারা হরতালে যাবে না – আর হরতাল দিলে সেখানে সহিংসতা হবে না। ধর্মদ্রোহীদের স্থান জামাতে হবে না, তবে চিহ্নিত ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় জামাত নেবে। এক্ষেত্রে জনগণের ভোট নেয়া বা কারও অভিমত নেয়া যাবে না, তাহলে নানা মুনীর নানা মত হয়ে যাবে।

মোট কথা জামাত ইসলাম বাংলাদেশ তার আগের নেতাদের পাপের বোঝা নেবে না। আমি যদ্দুর জানি, জামাত একুশে ফেব্রুয়ারী পালন করে, স্বাধীনতা দিবস- বিজয় দিবস পালন করে, তাহলে বাংলার অস্তিত্বকে না মানার যেহেতু কোন কারণ নাই তাই যুদ্ধাপরাধীর বিচারটা মেনে নিলেই হয়। কোন কোন জামাতিরা রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সংগীত পছন্দ করেন না – তা কিন্তু সংবিধান পরিপন্থী। বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার চাইলে – শহীদ মিনার ভাঙ্গা যাবে না কিংবা বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানো যাবে না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যাওয়া মানেই নিজের দেশটাকে হারানো।

জামাত পুরান নেতাঃ জামাতের পুরান নেতারা যুদ্ধাপরাধী। সাধারণ জনগণ হয়ে আমি তাদের ফাঁসিই চাই। তারা এই মৃত্যুদন্ড থেকে পরিত্রাণ পেতেন যদি এদেশে সাধারণভাবে থেকে যেতেন আর কোন রাজনীতি না করতেন। তাহলে কেউ কথা তুলতো না। আবার জামাত ইসলামকে মোটামুটি দাঁড় করিয়ে নতুন নেতাদের হাতে তুলে দিয়ে সরে যেতে পারতেন – তাহলেও হত।

কিন্তু তাদের ক্ষমতার লোভ আর পূর্বপাকিস্থান বানানোর উদ্ভট স্বপ্ন তাদের এই পরিণতিতে এনেছে। এখন আমি মনে করি তাদের নিজেদের ফাঁসি চাওয়া উচিত আর নতুন নেতৃত্বদের সাথে আর যোগাযোগ না রাখা উচিত। আবারও বলছি, জনতার সময়ের দাবিঃ সকল রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে এখন জনতার দাবি কি। ১) যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায়ে ফাঁসি। ২) হরতালসহ সব সহিংসতা পরিহার।

৩) ধর্মদ্রোহীদের নিষিদ্ধকরণ। বিএনপিঃ এখন বলতে গেলে সবচেয়ে দিশেহারা দল। তবে সহিংসতার পথে গেলেই ধরা। একটা ফিলোসফি লিখেছিলাম ফেবু স্টাটাস এ। If you force people to capture power and if you get success after all, you will understand, at the same time you give birth to an opposite powerful people who can overthrow you very soon. So be with the people demand to get popular, Otherwise you will never listened by the people. যদি আপনি ক্ষমতা পেতে জনতাকে জোর করেন এবং যদি আপনি তা পেয়েও যান, আপনি বুঝতে পারবেন, একই সময়ে আপনি জন্ম দিয়েছেন একটি বিপরীত শক্তিধর জনতা যারা আপনাকে শ্রীঘই উৎখাত করবে।

অতএব জনপ্রিয়তার জন্য জনতার দাবির সাথে থাকুন, নতুবা জনতা কখনই আপনাকে শুনবে না। বিএনপি নেতা নিজের ছেলেদের বিষয়ে এতটাই কষ্টে আছেন আর তার এতটাই বয়স হয়েছে যে তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে রেগে গেলেন আর সহিংসতার পথ বেছে নিলেন আর তাই সার্বজনীন সত্য হল তিনি হেরে গেলেন। তবে তার হেরে যাওয়া দলের হেরে যাওয়া নয়। দলের উচিত জনতাকে বুঝে জনতার আন্দোলনে একাত্মতা দেখানো। এখন বলতে গেলে বিএনপি এর সবচেয়ে বড় সুযোগ ভোটের জন্য জনতার দাবির সাথে এক হওয়া।

জামাত ব্যান হলেও বিএনপিকে ভোট দেবে – না ব্যান হলেও দেবে। জামাতের জন্য এত দরদ দেখানো বিএনপি এর দরকার নেই, পারলে এটা বলার আছে জামাতকে যে সহিংসতার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে বলা। এরপরও জামাত না মানলে – জামাতকে বর্জন করার হুমকি দেয়া কিন্তু জোট না ছাড়া। জামাত নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে বলা যে ওটা জামাত ইসলামের ব্যাপার, বিএনপি এর এখানে কিছু বলার নেই। জাতীয় পার্টিঃ জাতীয় পার্টির মুল নায়ক আন্দোলন ভয় পান।

৯০ এর গণঅভ্যুত্থান তো এই রাজনৈতক দলের বিরুদ্ধে। তাই আন্দোলনে এই দলটি যাবে না আগেই বুঝেছিলাম, তবে গৃহযুদ্ধের যে আভাস দেখেছেন এ দলটি তা কেন যেন অভিসম্পাত মনে হল। জানিনা গৃহযুদ্ধ হবে কিনা, তবে জানলেও না জানানোটা উচিত ছিল মনে হল। এই উস্কানিমূলক না-পারতে-বলা-কথাগুলো শুনলে মনে হয় একজন ব্যার্থ রাজনীতিবিদ অবসর নেবেন না বলে গোঁ-ধরে এবার আষাঢ়ে গল্প ফাঁদছেন কেউ যদি তার গপ্প শুনে আর কি। জামাত এই আন্দোলনে ব্যান হবে কি না জানিনা, তবে কেন যেন মনে হয় – এই আন্দোলনের পর জাতীয় পার্টি আর থাকছে না।

আওয়ামী লীগঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল দিয়ে সবচেয়ে বড় কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে আছে এই দলটি। সত্যি কথা বলতে আওয়ামী লীগের এখনকার রাজনীতি অনেক দক্ষ, অনেক গোছানো। কেন যেন মনে হয় শেয়ার কেলেঙ্কারী, বিদ্যুতের ও জ্বালানী তেলের দাম বাড়তি, পদ্মা সেতু প্রকল্পে যেখানে চরম ব্যার্থতার পর কাদের মোল্লার যাবৎজীবন হওয়ায় অনেকটা হাল ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামীলীগ। কিন্তু শাহবাগের গণজাগরণ পুরোপুরি তাদের ফুলফর্মে নিয়ে এলো। তবে আমারই একটা স্টাটাস মনে হলঃ To stop an ideology, if you choose the way of killing other than debating, that means you are the new founder of the ideology who is erasing the old founders একটা আদর্শকে থামাতে আপনি যদি যুক্তিখন্ডনের রাস্তা বাদ দিয়ে হত্যার দিকে অগ্রসর হন তারমানে আপনি ওই আদর্শকেই স্থাপন করছেন তার পূরানো স্থপতিদের সরিয়ে।

এটা যেন না হয়। যুক্তিখন্ডনের বিষয় যেন অগ্রাধিকার পায়। ফাঁসির দাবি জনতার। এটাকে আওয়ামীলীগ বুঝে নির্বাচনীয় মূলো ঝুলালে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। কাদের মোল্লার যাবৎজীবন পাওয়াটা আওয়ামীলীগ ট্রাইবুন্যালে হস্তক্ষেপ করেনা প্রমাণ হল।

তবে জনতা কিন্তু এখনও আস্থা আনে নাই। তাই আস্থা ফেরাতে ফাঁসি দেওয়া চাই। আস্থা ফিরিয়ে জনতাকে ঘরে ফিরিয়ে নিতে হবে। জনতা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অসহায়ের মত বিচার চাওয়াটা প্রথমদিকে আন্দোলন কিন্তু দীর্ঘায়িত মানেই ব্যার্থ সরকার বুঝাবে। তাই আওয়ামীলীগের এখন জনতার আস্থা আনতেই হবে।

জনতার কথাঃ একটা নিজের বানানো একটা ফিলোসফি মনে হল - তাই বলি Question – How can you determine the legendary foolish? Ans: When you see a politician who a. Circulates own or party’s propaganda by not listening to the citizen b. Tries to puzzle the citizen by not understanding the citizen’s core issue c. Imposes any hard decision by not knowing the citizen’s like or dislike. প্রশ্ন – কিভাবে বুঝবেন স্মরণকালের বেকুবটা কে? উত্তরঃ যখন দেখবেন একজন রাজনীতিবিদ যিনি ক) জনতার কথা না শুনে শুধু নিজের ও নিজের দলের প্রচারণা করেন খ) জানতার আসল দাবি না বুঝে জনতাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন গ) জনতার ভালমন্দ অনুভুতি না জেনে যে কোন কঠোর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া। এ কথাটা আমি কোন রাজনৈতিক দলকে বুঝাইনি, কারো সাথে মিলে গেলে তা কাকতালীয় ধরবেন। এখনকার জনতা কিন্তু অনেক স্মার্ট এটা বুঝে গেছেন কথাবার্তায় চালচলনে। তাই এখনকার জনতাকে মাথায় হাতবুলিয়ে কিছু করা সম্ভব না। রাজনীতিবিদেরা এখন কি করবেনঃ জনতার মূল দাবি হল তিনটি আর এটা সামনে নিয়েই কিন্তু অবস্থান নিচ্ছে জনতা।

১) যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায়ে ফাঁসি। ২) হরতালসহ সব সহিংসতা পরিহার। ৩) ধর্মদ্রোহীদের নিষিদ্ধকরণ। প্রথমে বলি কি না-করা উচিত। একথাগুলো জামাত-বিএনপি-জাপা-আওয়ামীলীগ-বামদল সবাইকেই বলছি।

১) জনতা যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চায়। এটাকে সমর্থন দেয়া উচিত। এতে ১৯৭১এর কলংকমুক্ত হয় বাংলাদেশ। তাহলে মানুষের বিচার পাওয়ার আস্থাটা শক্তসামর্থ হয় ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়। যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা জনতাকে বিভ্রান্ত করতে গিয়ে নিজেই বেকুব হওয়া ও নাগরিক অধিকার নস্যাৎ করা।

এটা কোন দলের কাছ থেকে কাম্য নয়। ২) ফাঁসি চাওয়াটার বিপক্ষে যাওয়া যাবে না – কারণ জনতা কিন্তু যাবৎজীবন মানেনি। জনগণ কোর্টের রায়কে মানে নাই বা জনতার চাপে আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসব কথা তোলাটাই জনগণের বিপক্ষে যাওয়া। এই জনতা বাদ দিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। জনতা সকল শক্তির উৎস।

তাই জনতার রায়কে মেনে নিতেই হবে আর এটাই জনতাকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন। যারা ভাবেন যে এ জনতা ছাড়া বা এ জনতার দাবি ছাড়া রাজনীতি করবেন তারা আসলে রাজনীতিবিদ কিনা আমার সন্দেহ আছে। ৩) যুদ্ধাপরাধীর বিষয়কে বিভ্রান্ত করতে আর কোন ইস্যু আনাটা মানেই ওই রাজনীতিবিদ নিজেকে সিদ্ধান্তহীন হিসেবে প্রমাণ করল। এখানে আস্তিক-নাস্তিক ইস্যু, পদ্মাসেতু ইস্যু, শেয়ার কেলেঙ্কারী ইস্যু – এগুলো কিছুই আসবে না। এগুলো নিয়ে কথা তুলে এই আন্দোলনটা বানচাল করে পরে আর কোন ইস্যু তোলা হলে তার মূল্য জনতা তো দেবেই না - সাথে ওই রাজনীতিবিদ যেখানে সেখানে অপমানিত হবার চান্স রাখেন।

৪) হরতাল মারামারি ভাংচুর করা যাবে না। জনতা অহিংস আন্দোলন দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, তাহলে জনতা সহিংসতা চায় না। ৫) জামাত নিষিদ্ধ করণ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে ধর্মদ্রোহীদের কোন স্থান জনতা দেবে না, পাশাপাশি এন্টি-ইসলামীদেরকেও জনতা সহ্য করে নাই। জামাত একটি ইসলামি দল আর ব্লগাররা নাস্তিক – বলে মানুষকে বোঝালে নিজের সাথে বোকামী হয়ে যাবে। ইসলামী ব্লগাররা নাস্তিক নন আর জামাতিরা বিচার না চেয়ে হত্যা করে (যেমন রাজীবকে হত্যা; যার লেখার বিরুদ্ধে তারা কেইস করতে পারতো।

তা না করে তারা আইন অশ্রদ্ধা করে হত্যার আশ্রয় নিল – এটা অবশ্যই কুফরী আর এটা জামাত প্রমাণ করল - যেটা না করলেই জামাতের জন্য ভাল ছিল)। সব মিলিয়ে রাজনীতিবিদদের উচিত নয় এমন কথা তোলা যা জনতার দাবির বাইরে যায়, তাহলে ভোট পাওয়া মুশকিল। যা এখন জনতা অনেক কথা অনেক ইস্যু শুনতে চায় না। তাই এসব কথা তুলে বিষয়কে বিভ্রান্ত ও জটীল করতে গেলে রাজনীতি করা যাবে না। জনতাকে বুঝুনঃ এ ক’দিনে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার মনে হয়েছে রাজনীতিবিদেরা মানূষ নন, তারা জনতা থেকে আলাদা।

তারা তাদের ভোট ছাড়া যেন কিছুই বুঝে না। এটা আমার মত সবার মনে ছাপ ফেলাটা অনুচিত। ফেইসবুকে ইদানিং এর একটা জরীপে দেখা গেছে মানুষ কাদেরকে বেশী ভোট দেবে – সব দলের সাথে না ভোটের অপশনটাও ছিল। আমি সহ আরো হাজার মানুষ – আমরা ‘না’- ভোটে অংশ নিয়েছি। তার মানে আমরা কোন দলকেই সাপোর্ট করিনা।

আমরা কাউকে ভোট দেবো না। তাহলে এটা সব রাজনৈতিক দলের জন্য প্রচন্ড হুমকি। তাই সময় থাকতে জনতাকে বুঝতে হবে। আমার মূল দাবিঃ আমরা যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি ছাড়া অন্য কোন কথা শুনতে চাই না। মুল দাবির স্বার্থে বাকি দাবিঃ এসময় হরতাল দাঙ্গা হাঙ্গামা বা নির্বিচারে হত্যা চাই না।

আস্তিক-নাস্তিক-ফ্যাসিবাদী-গাঞ্জাখোর-আল্লামা-গলাকাটা-চান্দেহুজুর এ সব ফালতু কথা শুনতে চাইনা। পুলিশের দায়িত্বপালনে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেইঞ্জে সুট দেখতে চাইনা। অহিংসতা আন্দোলন ছাড়া সহিংসতা দেখতে চাইনা। রাজাকারের পক্ষে কোন বাঙ্গালী দেখতে চাই না। আসুন! এই একটা দাবিকে সফল করি।

তাহলে সবাই দেখবেন এক এক করে সব সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারবো। পরিশেষ ফিলোসফিঃ In your life, if you experience a great revolution, you get the greatest opportunity to contribute yourself for the nation and religion তোমার জীবনে যদি মহান বিপ্লবের অভিজ্ঞতা আসে, তবে তুমি জাতি ও ধর্মের জন্য অবদান রাখার সুবর্ণ সুযোগ পেলে। আসুন আমাদের জীবনের এই সুবর্ণ সুযোগ নিই। যারা এরপরও মানতে পারছেননা, তারা আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ টিভি দেখুন – কারণ উল্টা পাল্টা কথার জন্য কখন আপনার পরিবারের সদস্যরা আপনাকে পাগলের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.