আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিলের পুত্র রাকিন, যে প্রশ্নগুলো ষোলটা কোটি মানুষের মনে গত চার বছর যাবৎ অতৃপ্ত আত্মার মত গুমরোচ্ছিল।

Click This Link ২৫ ফেব্রুয়ারি এলেই রাজ্যের সব কষ্ট এসে ভর করে তার ওপর। ভীষণ মনে পড়ে যায় বাবা-মাকে। কারো কাছে বলেও যেন আর কোন লাভ নেই। অকালে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া বাবা-মাকে কেউতো আর ফিরিয়ে দেবে না। চিরকালের এ বুকচাপা কষ্ট ও অভিমান নির্মমভাবে খুন হওয়া বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও নাজনীন শাকিলের ছেলে রাকিন আহমেদের।

এক মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে রাকিন কনিষ্ঠ। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাবা মাকে হারানোর পর রাকিন থাকতেন বাড্ডায় তার ফুফুর সঙ্গে। পড়াশোনা করতেন ইংরেজি মাধ্যমের ও-লেভেলে। তার বড় বোন আকিলা রাইদাহ আহমেদ নিকিতা তাকে ফুফুর কাছে রেখে লন্ডনে চলে যান বার-এট-ল পড়তে। Click This Link এরই মধ্যে রাকিন শেষ করেন এ লেভেলও।

চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি তিনিও লন্ডনে চলে যান বড় বোনের কাছে। সেখানেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন আইন বিষয়ে। আইনজীবী হওয়ার পাশাপাশি বড় হয়ে একজন রাজনীতিবিদ হওয়ার স্বপ্নও তার। সোমবার রাকিনের সঙ্গে যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপে আলাপচারিতায় বাংলামেইলকে এসব কথা জানান তিনি। বাংলামেইলকে রাকিন বলেন, ‘ঘাতকরা আমাকে ও আমার বোন নিকিতাকেও বাঁচিয়ে রাখতো না।

ভাগ্যক্রমে আমরা সেদিন পিলখানায় ছিলাম না। আমি স্কুলে ছিলাম আর আপুও বাইরেই ছিল। আমাদের না পেয়ে তারা আব্বু ও আম্মুকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ’ বলতে বলতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন রাকিন। বাবা-মাকে হারানোর এ কান্না থামাতে কোন শান্তনাই যেন যথেষ্ট নয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠেই রাকিন বলেন, ‘আমার চেয়ে হতভাগা আর কে হতে পারে? খুব অল্পবয়েসে একই সঙ্গে আব্বু-আম্মুকে হারাতে হয়েছে। এখন আমি বড় হচ্ছি ঠিকই, কিন্তু কাউকে মা-বাবা বলেতো আর ডাকতে পারবো না। কেউ তো আর আমার কাছে মা হয়ে আসবে না। ’ রাকিনের কথায় অনেক ক্ষোভ। ৪ বছর পেরিয়ে গেছে।

অথচ কেউ আর খোঁজ নিচ্ছে না তাদের। সরকার ও বিভিন্ন মহল থেকে অনেক কথার ফুলঝুরি শোনা গেলেও বাস্তবায়ন আসলে কতটুকু হচ্ছে, তা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই তার। বাংলামেইলকে বলেন, ‘ওসব বলে কি আর লাভ আছে। যাদের হারিয়েছি তারা আর ফিরে আসবে না। তবে সরকার আমাদেরকে ফ্ল্যাট দিবে বলেছিল, সেটার এখনও কোন আগ্রগতি জানি না।

টাকা দেয়ার কথা ছিল এখনও পাইনি। কবে দিবে, সে ধরনের কোন নিশ্চয়তাও নেই। ’ তবে প্রথমদিকে সরকার অনেকবার খোঁজ খবর নিয়েছিল বলেও জানান রাকিন। তিনি বলেন, ‘প্রথম বছরেই আন্টি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমাকে গণভবনে ডেকে নিয়ে গেছেন। সে বছর তার সঙ্গে আমার দু’বার দেখা হয়।

আমাকে তিনি অনেক আদর করেছেন। নিজ হাতে তুলে খাইয়েছেন। ’ রাকিন আরও বলেন, ‘সেদিন আমাকে আন্টি তার সঙ্গে পার্লামেন্ট অধিবেশনেও নিয়ে গিয়েছিলেন। অনেক পার্লামেন্ট মেম্বারদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। আন্টি গণভবনে প্রবেশের জন্য আমার নাম আত্মীয়ের তালিকায় রেখেছেন।

কিন্তু অনেক জটিলতায় আমাদের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই হয়ে ওঠেনি। আমরা এখনও আব্বুর প্রাপ্য পুরো টাকাটা সরকারের কাছ থেকে পাইনি। ’ রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ আর কষ্টের মধ্যেই রাকিন খুঁজে বেড়ান তার বাবা-মাকে। বাবার কথা আসতেই বেশ দৃঢ়তার সঙ্গেই বললেন, ‘আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে তার ভাল কাজের জন্য। চারপাশের মানুষ এত বেশি খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত যে, কেউ ভাল থাকলেই সেটা তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আমার বাবাও খারাপদের জন্য তেমনই একজন ক্ষতিকর ছিলেন। ’ শাকিলপুত্র বলেন, ‘অপারেশন ডাল-ভাতের মতো সুন্দর ও সফল একটি প্রকল্প পরিচালনা করাও তাদের মেরে ফেলার অন্যতম কারণ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশের কতো নিন্মবিত্তের মানুষ স্বাচ্ছন্দে খেতে পারতো। কিন্তু সুবিধাভোগীদের সেটা সহ্য হয়নি। মেজর জেনারেল শাকিল কেনো সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবেন, এটা অনেকেই সহ্য করতে পারেননি।

’ ‘দেশে থাকলে আমি অবশ্যই দিনের বেশিরভাগটা বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটাতাম’ উল্লেখ করে রাকিন বলেন, ‘আজ বনানী কবরস্থানেই আমার সময় কাটতো। সেখানে বাবা-মাকে দেখার জন্য কতো মানুষ যে ছুটে আসেন। সবাই বলেন, বাবার মতো মানুষ ছিল না। এখন এটাই আমার জন্য শান্তনা, সবার কাছে তো বাবা একজন ভাল মানুষ হিসেবে ঠাঁই পেয়েছেন। ’ ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাকিন বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন।

বাবা-মাকে হারানোর এ দিনটি কোনদিনও হয়তো ভুলবেন না। কিন্তু মানুষের মনে তার বাবা-মা যে ভালোবাসার বসত গড়ে তুলেছেন, সে প্রাপ্তিই হয়তো রাকিনের পথচলার কষ্ট ভুলিয়ে Click This Link -  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.