সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত...............।
কলেজে পড়ার সময় জেমসের গান খুবই প্রিয় ছিল। অনেক গান শুনতাম তখন। এর মধ্যে একটা ছিল এমন- ‘থাকিস যদি পাশাপাশি, বাসিস যদি ভাল,/আসিস যদি কাছাকাছি, যতটা চাই তত,/চিরটাকাল সঙ্গে রব। /পারিস যদি মুছে দিতে হৃদয়ের যত ক্ষত,/হতে যদি পারিস আমার ঠিক আগের মত,/চিরটাকাল সঙ্গে রব।
’ কম বয়সে এমন কঠিন ভালবাসাবাসির গান খারাপ লাগে না। কিন্তু, এখন ভাবি, নারীর প্রতি কতটা অসম্মান করে এ গান বাঁধা হয়েছে! আমার জন্য সবকিছু দিয়ে দিলে তবেই ‘চিরটাকাল সঙ্গে রব’। যাই হোক, প্রেম-ভালবাসায় এমন খবরদারি তাও কিছুটা মেনে নেয়া যায়। অন্যান্য সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা মেনে নেবার কোনই কারন নেই।
কথাগুলো বারবার মনে পড়ছিল গত মাসে ফেলানী-হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত আলোচিত-সমালোচিত ক্ষেত্রবিশেষে বিতর্কিত মানববন্ধনের আগের রাতে।
একটু পেছনের কথা বলি।
জানুয়ারির তের তারিখে হুট করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন চট্টগ্রামে মানব বন্ধন করা হয়, তখনো হেলাল ছেলেটাই মূল আয়োজনে ছিল। সে আমারদেশ পাঠকমেলায় কাজ করার সুবাদে সেখান থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া যায়। নতুন বাংলা ব্লগ ‘আমার বর্ণমালাব্লগ’এর ক’জন ব্লগারও ছিলেন। আমি ‘আকামের লাঠি’ টাইপ মানুষ।
প্রেসক্লাবটা অফিসের খুব কাছে হওয়ায় এক দৌড়ে গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে যাই। সাকূল্যে ৫০-৬০ জনের এই জমায়েতে নানান পথ-মতের মানুষকে দেখেছিলাম।
এরপর, আমি আবার ব্যস্ত হয়ে যাই নিজের দুনিয়ায়। দু’দিন পরেই শুনি ঢাকায়ও মানব বন্ধন হচ্ছে- আমার দেশ পাঠকমেলা আছে এখানেও। হেলাল প্রতিদিন আপডেট দেয়।
আমি ভাবি, ‘ভালই তো। এ আগুন ছড়িয়ে যাক সবখানে’। এমন সময় ষোল তারিখ রাতে একটি ফেইসবুক অ্যালবাম চোখে পড়ে। আগের দুই সপ্তাহে পত্রিকার খবরগুলো পড়েও যা হয় নি, ভাষাহীন নয়টি ছবির সেই অ্যালবামে তাই হয়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে ২১ তারিখের মানববন্ধন নিয়ে একটি আবেগী-ছেলেমানুষি লেখা লিখে ফেলি; পরদিন সকালে পোস্ট করে দিয়ে যথারীতি অফিস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
সারাদিন গাধার খাটুনি খেটে(আমি এর নাম দিয়েছি ‘পুঁজির দালালি’) রাতে যখন আরেকটি কর্পোরেট অনুষ্ঠানে ব্যস্ত তখনি দুই-একজন বন্ধুর কাছ থেকে পোস্ট নিয়ে সহ-ব্লগারদের আন্তরিকতার খবর জানতে পারি। এর মাঝে সামুর ব্লগ কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ হয়, তাঁরা পোষ্টের একটি আপত্তিকর ছবি সরিয়ে দেবার অনুরোধ জানান। পরদিন প্রথম সুযোগেই স্বাভাবিকভাবে ওটা সরিয়ে দিই।
এর পরের দু’দিনে অবাক হয়ে লক্ষ করলাম পোস্টটি বিভিন্ন বাংলা ব্লগে স্টিকি হয়ে গিয়েছে। এটাও উপলব্ধি করলাম যে, এতে আমার কৃতিত্ব শুন্যই মাত্র।
সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশীদের একের পর এক হত্যা এদেশের সচেতন মানুষদেরকে তাঁদের সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়েছে, সেইসাথে মূল মিডিয়ার আপত্তিকর নিরবতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ব্লগ কর্তৃপক্ষও দায়বদ্ধতা অনুভব করেছেন।
আমি দেশের এক কোণায় থাকি। ঢাকায় একটি মানব বন্ধন সামলানোর মত অভিজ্ঞতা, সময় কোনটিই আমার নেই। ফলে, এ সময়ে আমি বিভিন্ন জনের পরামর্শে আমি সুপরিচিত ব্লগারদের সাথে যোগাযোগ করি। সকলেই সানন্দে সমর্থন দেন এবং ঢাকার প্রোগ্রামে কার সাথে কীভাবে যোগাযোগ করবেন জানতে চান।
আমাকে স্বভাবতইঃ ‘আমারদেশ পাঠকমেলা’-এর দ্বারস্থ হতে হয় এবং তাঁরাই একজনের নাম ও যোগাযোগের নাম্বার আমাকে দিয়ে দেন। সেটিই আমি ১৯ তারিখ হতে সবাইকে দিতে থাকি এবং এবং সবশেষে ২০ তারিখ বিকেলে ব্লগে আপডেট হিসেবে দিই।
মজা শুরু হয় তখন থেকেই! এর আগের সুদীর্ঘ ৩৬ ঘন্টায় যে নামের উপর কোন আপত্তি আসেনি, আপডেট দেয়ার সাথে সাথেই একজন আমায় ফোন করে ঐ ভদ্রলোকের সাথে জা-শি সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন। আমি আরেকটু খোঁজখবর করে নামটি সরিয়ে দিই এবং ব্লগ কর্তৃপক্ষকে সেটি জানিয়েও দিই। সে সময় তাঁরা আমার কাছে হেলালের ব্যাপারেও জানতে চান এবং গুগলক্যাশ হতে নেয়া একটি পেজ দেখান।
আমি নিশ্চিত করি যে, এখানে কিছু একটা ঘাপলা আছে। কেননা, হেলালকে আমি বাস্তবজীবনে কখনো জা-শির সাথে সংশ্লিষ্ট দেখি নি (সে কোন এককালে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করত) আর ঐ নামের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টটিও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সেইসাথে, ব্লগ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যিনি/যারা ঐটি পাঠিয়েছেন তাঁদেরও সেটি জানিয়ে দিয়ে অন্ততঃ মানববন্ধন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করি। এবং যে সব ব্লগারের সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছিল বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে তাঁদেরকে একে একে পুরো ব্যাপারটা জানাতে শুরু করি। এ সময় কেউ কেউ বিশ্বাস করেছেন, কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, কেউ আবার আমার বোকামিতে রেগেছেন আর কেউ কেউ ফোন রিসিভ না করে, পরে ‘প্রতারনার অভিযোগ’ এনেছেন।
যাই হোক, বিশ্বাস-অবিশ্বাস যার যার ব্যাপার- আমি আমার বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ।
এই ঘটনাগুলো চলাকালীন সময়েই সম্মানিত ব্লগার ফিউশনফাইভ তাঁর পোস্টে স্ক্রীনশট ও সেই গুগলক্যাশের লিংক নিয়ে নাজিল হলেন। আমার তখন আর কী বলার থাকতে পারে?
সবাইকে সরিয়ে দিয়ে আমি তাই সব দায়ভার নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিলাম। ব্লগে যোগাযোগের জন্য আমার নাম্বারটাই দিয়ে দিলাম। আশা করেছিলাম, যাঁরা দেশকে জা-শির বিচরণক্ষেত্র বানানোর পরিকল্পনা বানচালে এক পায়ে খাড়া, তারা অন্ততঃ একটিবার ফোন করবেন, কী হয়েছে-জানতে চাইবেন-নিদেনপক্ষে গালিগালাজ করবেন! জীবনের একটি ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই ব্লগে কাটিয়ে সহব্লগারদের কাছে এইটুকু আশা করাটা অবান্তর ছিল না মনে হয়।
কোথায় কী! অনেকে তখন বহুদিন পরে ‘অসহায়’ ‘ছুপাছাগু’ পাওয়া গিয়েছে- এই খুশীতেই বগল বাজাচ্ছেন, চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করছেন। দেশ, ফেলানী, সীমান্ত হত্যা, সার্বভৌমত্ব সবই ব্লগের চার দেয়ালে- ১৭" মনিটরে বন্দী করে ফেলেছেন!
ব্লগে যাঁরা আমাদেরকে ‘বারো জোড়া বিনিদ্র চোখের’ নজরদারির ভয় দেখান তাঁরা কি জানতেন না যে, হেলাল এম রহমান এই মানববন্ধন আয়োজনের শুরু থেকেই সক্রিয়? অথচ, তার শিবির সংশ্লিষ্টতা প্রমানের জন্য আমাদের সবাইকে ২০ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো কেন? তাঁরা কী দেখেন নি যে, অন্য ব্লগে নিজ নামে ব্লগিং করার সাথে সাথে সামহ্যোয়ারইনব্লগে হেলাল ‘অন্য হাওয়া’ নিকেও ব্লগিঙ করে?
যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই যে, জা-শি এবং তায়েফ আহমাদ মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই নাটক মঞ্চস্থ করেছে, তাহলে দেশের সম্মানের প্রতি নূন্যতম ভালবাসা যার রয়েছে, তিনি সেখানে গিয়ে এই নাটক মঞ্চায়ন ভন্ডুল করে দেবেন-এটাই ছিল প্রত্যাশা। এদেশের সকল স্বাধীনতাকামী মানুষের সক্রিয় চেতনা ’৭১-এ যাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছিল তাঁদের উত্তরসূরীরা বিনাচেষ্টায় মাঠ ছেড়ে দেবেন- এমনটা ভেবে নেয়া কষ্টকর বৈ কী!
আমাদের বুঝে নেয়া দরকার যে, ব্লগজগতটাই বাংলাদেশ নয়। এদেশের সিংহভাগ মানুষই এখনো পর্যন্ত ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত-ব্লগ তো অনেক দুরের বিষয়। তাই বলে, তাঁরা এদেশকে আমার-আপনার চাইতে কম ভালবাসেন, রাজনীতি কম বুঝেন –এমন ভেবে নেয়াটা বোকামি।
অথচ, ব্লগে ব্লগে বিপুল বাধা- কুৎসা রটনার পরেও অল্প কিছু মানুষ যখন ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা থেকে সেখানে গেলেন এবং সাহসের সাথে দাঁড়ালেন তখন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কুৎসা রটনা কতটা যুক্তিযুক্ত? আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল, জা-শিদের মাঠে দাঁড়াবার সুযোগ না দেয়ার মাধ্যমে একটি জাতীয় ইস্যুতে সকলে একত্রিত হয়ে কাজ করবার একটি সূবর্ণসুযোগ যে হাতছাড়া করে হয়ে গেল, তা থেকে কেউ কেউ পরবর্তী সময়ে হয়তো অপরাধবোধে ভুগে থাকবেন! নইলে যারা সেদিন সেখানে গিয়েছিলেন তাদেরকে ধন্যবাদ না দিয়ে জা-শির ঘরে সব কৃতিত্ব তুলে দিতে এমন উঠে পড়ে লাগলেন কেন?
ফেলানি মানববন্ধন: কিছু রহস্য যার উত্তর খুঁজে ফিরি
যাই হোক, এসব নিয়ে কথা বাড়ালেই কথার কালি লেপ্টে যায়। সমাধান আসে না।
এবার আসা যাক, আমার সাথে জা-শির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে। ‘ইসলাম’ আর ‘কুরআন’ জা-শির কিনে নেয়া সম্পত্তি নয়। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি পছন্দ করি না।
জাতীয়তাবাদী দলকে একটি সুবিধাবাদী প্লাটফরম ছাড়া কিছু ভাবি না। প্রবল আস্তিক হবার কারনে বামপন্থী রাজনীতি আমায় টানে না। ফলে, রাজনীতির ইসলামী প্যাটার্নের প্রতি আমার স্বভাবজাত দূর্বলতা রয়েছে। এখান থেকে নিশ্চয়ই এই উপসংহারে আসা যায় না যে, আমি জা-শি সমর্থক। মাওলানা মওদূদীর লেখালেখির আমি একজন মুগ্ধ পাঠক, যদিও তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের ব্যাপারে আমার দ্বিমত রয়েছে।
তদুপরি, স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর দলের বিতর্কিত কর্মকান্ডের সুরাহা এখনো হয় নি। আমার সাড়ে তিন বছরের ব্লগিঙ জীবনে তাদের সমর্থনে কোন একটি পোস্ট কিংবা মন্তব্য কেউ দেখাতে পারার কথা নয়। এমতাবস্থায়, আমাকে ট্যাগিং করতে লেজে-গোবরে করে ফেলাটা স্বাভাবিকই।
যে দুইটি পোস্ট থেকে আমার জা-শি সংশ্লিষ্টতা প্রমানের চেষ্টা চলছে সেগুলোতে মন্তব্যকারীদের স্বাভাবিক যুক্তির জায়গা ছেড়ে ব্যক্তি তায়েফের অতীত নিয়ে অযথা টানাহেঁচড়া আর মুখ খারাপ করা ছাড়া আর কিছুই করেন নি। এতে অবশ্য সহব্লগার হিসেবে এঁদের প্রতি আমার সম্মান কমে নি; শুধু, করুণাই বেড়েছে।
ফ্যাকড়াবাজ স্বামী তার স্ত্রীর রান্নায় গলদ ধরতে চাইলে আর কিছু না হোক, চুল খুঁজে পাবেনই। সামাজিক জীবনে আমি যে মানুষগুলোর সাথে ওঠাবসা করি তাদের কাউকে কেবলমাত্র তার লালিত রাজনৈতিক মতাদর্শের কারনে লাথি মেরে দূর করে দেবার মত কঠোরতা আমার নেই। জা-শি আলু কিংবা দুধ খায় বলে আমি সিঙারা-সেমাই খাওয়াও বন্ধ করতে পারব না। দুঃখিত।
আর গালিগালাজটাও আমার ততটা আসে না।
বলে রাখা ভাল, আমরা যারা চিটাগাঙে জন্মেছি এবং বড় হয়েছি তাদের অনেকেই একটা বয়স পর্যন্ত জানিই না যে, দৈনন্দিন কথার মাঝে আমরা এমন কিছু শব্দ অবলীলায় ব্যবহার করছি, সেগুলো প্রমিত বাংলায় জঘন্য গালিগালাজ হিসেবে পরিচিত। (কেউ কেউ এটাকে খারাপভাবে নিতে পারেন- তবে আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি)। ফলে, অন্য বাঙালির চাইতে আমার গালির ভান্ডার কম- এমনটি ভাববার কারন নেই। কিন্তু, এটাও সত্য যে, একে আমি কোন কৃতিত্ব বা গৌরব নয় বরং ব্যক্তিগত লজ্জা হিসেবে দেখি এবং পারতপক্ষে, পরিহার করে চলি। এজন্য, আমাকে ‘তথাকথিত’ ‘সুশীল’ আখ্যা দিলেও কিচ্ছু এসে যায় না।
এর মধ্যেই আমার বর্ণমালাব্লগের একটি পোস্টে সামহ্যোয়ারের কর্তৃপক্ষ জানা-আরিলকে নিয়ে কুৎসিত কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয়। কিন্তু, অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, যে প্রমানবিহীন কুৎসিত ব্যক্তিআক্রমনের সম্বলিত হওয়ার কারনে যারা এই পোস্টের বিরোধিতা করছেন, তারাই আবার বিনাপ্রমানে আমার বর্ণমালাব্লগকেই আক্রমন করে বসেছেন! কী আশ্চর্য্য স্ববিরোধিতা!!
আমার পূর্ণ সমবেদনা এই দারুন দম্পতির প্রতি, পূর্ন সম্মান ঐ ভীনদেশী যুবকের প্রতি যাঁর হাত ধরে আজ এই বাংলা কথাগুলো ওয়েব দুনিয়ায় প্রকাশ করতে পারছি। এছাড়া, স্টিকি পোস্ট ও মানববন্ধন বিষয়ে তাঁরা যেভাবে আমার প্রতি হৃদ্যতা দেখিয়েছেন তাতে ব্যক্তি আমি চিরকৃতজ্ঞতাবন্ধনে আবদ্ধ। সত্যিকার অর্থে, তাঁরা ছাড়া আর কোন ব্লগ কর্তৃপক্ষই আমার সাথে যোগাযোগ করেন নি। এরপরেও যে কথা না বলে পারছি না, তা হচ্ছে, এই প্লাটফর্ম থেকেই বিগত পাঁচ বছরে একই প্রক্রিয়ায় নানান মতের বাংলাদেশির বিরুদ্ধে প্রচারিত কুৎসাকে যেভাবে নিরবে সহ্য করা হয়েছে, তাই আজ ফ্রাংকেস্টাইন হয়ে দেখা দিয়েছে।
আজ তাই এ বিষয়ে নতুন করে ভাববার সময় এসেছে।
যাই হোক, সব কিছু দেখে শুনে আমার মনে হচ্ছে, সবগুলো বাংলা ব্লগ একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে দেশের কথা, মানুষের কথা বলুক- এটি কারো কারো গাত্রদাহের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, যারা ব্লগটিকেই নিজেদের দুনিয়া কিংবা পৈত্রিক সম্পত্তি ভাবেন, তাদেরও কষ্ট হচ্ছিল বোধ হয়।
আরো মজার বিষয় হচ্ছে, এই অবিরাম কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার বিষয়টি আলোচনার বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও ঠিকমত সফল হয়ে গিয়েছে। ফেলানীর জন্য দু’ফোঁটা চোখের পানি ফেলার লোকও নেই।
সবাই নিজেকে ট্যাগিং থেকে বাঁচাতে ব্যস্ত।
রবীবাবুর দ্বারস্থ হয়ে শেষ করি-
“এ দূর্ভাগ্য দেশ হতে, হে মঙ্গলময়,
দূর করে দাও তুমি সর্ব তুচ্ছ ভয়-
লোকভয়, রাজভয়, মৃত্যুভয় আর।
দীনপ্রান দূর্বলের এ পাষানভার,
..............মঙ্গলপ্রভাতে
মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে
উদার আলোক-মাঝে, উন্মুক্ত বাতাসে। ”
পথ-মত নির্বিশেষে সবাইকে ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।