আগে আমি ইন্টারনেট এর জন্যে গ্রামীনফোনের P6 প্যাকেজ ইউজ করতাম। সবাই জানেন, এতে ১ মাসের জন্যে 1GB ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এক মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার দরুণ আমি বেশিরভাগ সময় বাসায় থাকবো, তাই নেটের ব্যবহার ও বেশি হবে চিন্তা করে গত ২০ জানুয়ারি গ্রামীনফোনের আনলিমিটেড প্যাকেজ P2 নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই, যার মূল্য প্রায় ১০০০ টাকা। তাছাড়া, কিছু ডকুমেন্টারি ফিলম ডাউনলোড করার ও দরকার ছিল। ভালো কথা।
এই সিদ্ধান্তের পিছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে গ্রামীনফোনের বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি উপহার দেয়ার ঘোষণা। অর্থাৎ, যেসকল ইউজার ১০০০ টাকা একবারে রিচার্জ করবেন গ্রামীনফোন তাদেরকে একটি করে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি উপহার দেবে।
২০ জানুয়ারি এই প্যাকেজটি আমি নিই। আমার বাসায় স্পিড ভালই। 23-24KBPS করে পাই।
আমিও আনন্দে ব্যবহার করি, আনলিমিটেড প্যাকেজ তো। ধুমসে ডাউনলোড দিয়ে পিসি তে অন্য কাজ করি। ২-৩ ফেব্রুয়ারির দিকে দেখলাম স্পিড একদম কমে গিয়েছে। 2-3 KBPS করে। http://www.google.com এ ঢুকতেই আমার ৩/৪ মিনিট লাগছিল।
কখনো আবার পেজ-ই লোড ই হচ্ছিল না। বোঝেন ব্যপারটা। সামান্য গুগল এ ঢুকতে পারে না। তাহলে আমি আর কোথায় ই বা ঢুকতে পারি। ফেসবুকে ঢুকতে ৮-১০ মিনিট লাগছিল।
তাও অনেকবার চেষ্টার পরে। আমি ভাবলাম আমার মডেমে সমস্যা হতে পারে। এরপর মোবাইল দিয়ে ব্যবহার করেও দেখলাম একই অবস্থা। অবশেষে ১২১ এ কল করলাম। বললাম সমস্যার কথা।
ওই শালাদের কথা শুনে মাথায় মাথায় আগুন চরলো। ওরা বলে যে, এটা আনলিমিটেড প্যাকেজ কিন্তু কেউ যদি 5GB ব্যবহার করে ফেলে তাহলে আমরা সেই ইউজার এর স্পিড কমিয়ে দেই। এটা নাকি ওদের ফেয়ার ইউজেস পলিসি এর মধ্যে আছে। আমি বললাম, তাহলে আপনারা আনলিমিটেড প্যাকেজ নাম দিসেন ক্যান? এটা তো 5GB প্যাকেজ। তখন ওই শালা বলে, আপনিতো ইন্টারনেট এক্সেস করতে পারছেন।
আমরাতো মেগাবাইট এখনো শেষ করে দিই নাই। তখন আমি বললাম একটা পেজ লোড হতে ৫-১০ মিনিট লাগে। এইটারে কি নেট কানেকশন বলা যায়? আরো কইলাম, এসব পলিসি তো আপনারা বিজ্ঞাপনে লেইখা দেন না। বলেন তো খালি আনলিমিটেড প্যাকেজের কথা। তখন শালার গ্রামীনফোনের ওই চর কয় যে ‘‘পেপারে আমরা ওই পলিসির কথা P2 এর বিজ্ঞাপনে দিসি।
’’ ওই শালাদের ওয়েবসাইটেও নাকি পলিসি-র কথা লিখা আছে।
Click This Link
অনেক কষ্টে গ্রামীনফোনের সাইটে ঢুকলাম(উপরের লিঙ্ক দেখুন)। এইখানে P২ প্যাকেজএর কথা লিখা আছে। এই পেজটায় ওই পলিসি-র কথা লিখা আছে বটে কিন্তু পলিসিতে কি লেখা আছে তা বলা নাই। পরে ওই লিঙ্কটায় ক্লিক করলে একটা .PDF ফাইল আসে।
সেইখানে বহু ক্যাচাল এর পর এই 5GB restriction এর কথা লিখা আছে। কোন ইউজারের এত সময় আছে এত কাহিনি পড়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করার? আমরা বিজ্ঞাপনের কাহিনি দেখে পরে আর শুনে প্যাকেজগুলো নেই। ওইখানে এইসব পলিসি, ফলিসির কথা না লেইখ্যা ডাইরেক্ট 5GB লিখলেই তো কাহিনি চুকে যায়। জোচ্চোরের বাচ্চা কোথাকার। আমি যদি আগামী কয়দিন (মানে ১৮ তারিখ পর্যন্ত) দিন-রাত ২৪ ঘন্টাও ডাউনলোড করি তাহলেও মোট 1GB ডাউনলোড হবে কিনা সন্দেহ।
শালার 5+1=6GB দিয়া নাম করতেছে আনলিমিটেড প্যাকেজ।
জোচ্চোরের বাচ্চার কোম্পানির জোচ্চুরির এইখানেই শেষ না। ওই শালারা জার্সি দেয়ার অফার যেদিন দিছিল তার ২/৩ দিন পরে মানে ২০ জানুয়ারি আমি ১০০০ টাকা ভরে P2 নিই। কিন্তু জার্সির জন্যে আমার কিছু ফ্রেন্ড তারও ২দিন পর টাকা ভরে। কিন্তু ওরা জার্সি পায় নাই।
(ওদের কাছে confirmation মেসেজ আসে নাই)। পোপ প পরে ১২১ এ কল করে জানতে পারে ওই জার্সির স্টক শেষ হয়ে গেছে। ভালো কথা; স্টক শেষ হইতেই পারে। কিন্তু স্টক যে শেষ হবে এইটা কি আপনারা জানতেন? হ্যাঁ, পত্রিকার বিজ্ঞাপণে একটা কথা লিখা আছে, স্টক সীমিত। কিন্তু ওইটা দেখার জন্যে মাইক্রোস্কোপ দরকার হবে।
কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা শালারা এখনো ১০০০ টাকায় জার্সি ফ্রি দেয়ার বিজ্ঞাপণ দিচ্ছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারী তেও প্রথম আলোতে ছিল। যদিও, ২২-২৩ জানুয়ারিতেই ওই জার্সির স্টক শেষ হয়ে গেছে। নতুন যারা জার্সির আশায় ১০০০ টাকা ভরছেন তারা কিন্তু আর জার্সি পাচ্ছেন না। এই জালিয়াতি দ্বারা শালারা যে কত হাজার হাজার ১০০০ টাকা পাইছে তার ইয়ত্তা নাই।
শালারা বড় জঘন্য। বিজ্ঞাপণ বা ওয়েবসাইটে স্পষ্ট করে ওদের প্যাকেজ/সার্ভিস এর পুরোটা লিখে না বরং আংশিক লিখে আর শর্ত বা দুর্বলতা গুলো এমনভাবেই লিখে যে মানুষ তা পড়ে কিছু সন্দেহ করেনা বা বুঝতে পারেনা। পরে ধরা খেয়ে কেউ অভিযোগ করলে ওইসব ঠুনকো শর্ত (মাইক্রোস্কোপিক * চিহ্নিত) দিয়ে যুক্তি দিয়ে পার পেয়ে যায়। এইসব জালিয়াতি আমাগো বালের সরকারগুলা দেইখ্যাও দেখে না। একটা শক্ত বিজ্ঞাপণ নীতিমালা বানাইলে ওই গ্রামীনফোনের মত শালারা এইরকম জালিয়াতির সুযোগ পাইতো না।
কুনো সন্দেহ নাই ওই শালারা সরকারে জায়গামতো পয়সা ঢালে আর আমাগো মত আমজনতা ধরা খায়। চোর্গাধার (চোর আর গাধা) সরকার আবার নাকি ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করবার চায়। (জানেন তো, আমাদের মোট ব্যান্ডউইথ এর এক-তৃতীয়াংশ মাত্র ব্যবহৃত হয়)। অথচ, অথচ, বুঝে না যে, টেলিটক রে আধুনিয়াকয়ণ করে ইন্টারনেট দিয়ে হলেও শালার গ্রামীনফোনের মত কোম্পানিডিরে কিছুটা হইলেও বাঁশ দেয়ন যাইত আর নিজেরাও লাভ করতে পারত। আমার মত বাল পোলাপাইন ওইডিরে আবার ভুট দিয়া আনছে।
পৃথিবীর সব বড় বড় চুরি, জোচ্চুরি আর দুঃশাসনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পর্যায়ে মানুষ রুখে দাঁড়ায়। মিসর আর তিউনিসিয়া এর জ্বলন্ত উদাহরণ। পৃথিবীর বড় বড় কর্পোরেট ক্রাইম এর বিরুদ্ধে ও হয়তো মানুষ একদিন রুখে দাঁড়াবে। সেদিন ওদেরকে নির্লজ্জের মত দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
ক্ষমাপ্রার্থণাঃ ব্যক্তিগতভাবে ব্লগে আমি গালিগালাজ পছন্দ করি না।
রাগের মাথায় উত্তেজিত হয়ে এই লেখায় কিছু অসুন্দর শব্দ ব্যবহার করে ফেলি। সকলের নিকট তাই ক্ষমাপ্রার্থী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।