আমি নতুন কিছু পড়তে ভালবাসি
কর্মসংস্থানধর্মী কর্মসূচী
যাকাতের টাকা দিয়ে নিম্নোক্ত কর্মসংস্থানধর্মী কর্মসূচী হাতে নেয়া যেতে পারে-
১. গরু/বলদ ক্রয়ে সাহায্যঃ
গ্রাম বাংলায় কৃষি কাজের প্রধান অবলম্বন চাষের বলদ। একই সঙ্গে পুষ্টি ও উপার্জনের সহায়ক হল দুধেল গাই। বহু কৃষকের জমি থাকলেও একজোড়া বলদ নাই। এমনকি অনেকের কেনার সামর্থও নাই। এদের হালের বলদ বা দুধেল গাই কিনে দিয়ে সাহায্য করা যেতে পারে।
প্রতিটি গরু বা বলদের দাম যদি গড়ে ৭,৫০০টাকা ধরা যায় এবং প্রতি ইউনিয়নে গড়ে বিশ জনকেও এ ধরনের সাহায্য করা যায় তাহলে প্রতি বছর ব্যয় হবে প্রায় ৬৬কোটি ৭৭লক্ষ টাকা।
২. বিভিন্ন পেশাগত কর্মসংস্থানঃ
শহরতলী সহ বাংলাদেশের গ্রামীন এলাকায় নিদারুণ বেকারত্ব বিদ্যমান। এসব এলাকায় যেসব পেশায় অধিক সংখ্যক লোকের কাজের সুযোগ রয়েছে সেগুলো হল-চাল, চিড়া, মুড়ি, খই, পাটি তৈরী, চাটনি-আচার তেরী। লুঙ্গী, তোয়ালা, গামছা বোনা। বাঁশ-বেতের কাজ, নকশী কাঁথা তৈরী, খেলনা তৈরী, হাঁস-মুরগী পালন।
মাছের চাষ, সবজী চাষ ইত্যাদি। পেশাগত সরঞ্জাম ক্রয়, সংযোজন ও মেরামতের মধ্যে আছে, রিক্সা-ভ্যান তৈরী ও মেরামত, জাল তৈরী, চাষাবাদের সরঞ্জাম তৈরী, স্যালো মেশিন মেরামত ইত্যাদি।
ক্ষুদ্র আকারের ব্যবসা, মুদি দোকান, মনিহারী দোকান, দর্জির দোকান, মাছের ব্যবসা, সবজি ও ফলের ব্যবসা। ফুলের দোকান, ফেরিওয়ালা ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত কাজের মধ্যে যদি প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে যে কোন দশটি পেশায় প্রতি বছর গড়ে দশজন হিসাবে একশজন বেকার অথচ উদ্যোক্তা পুরুষ ও নারীকে গড়ে ৫,০০০টাকার উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করা যায় তাহলে বছরে প্রয়োজন হবে ২৫১কোটি ৭৫লক্ষ টাকা।
৩. গৃহায়ন কর্মসূচীঃ
বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে অনেকেরই মাথাগোঁজার ঠাঁই নাই। প্রতি বছর অগ্নিকান্ড, বন্যা ও নদী ভাঙ্গনের ফলে ক্রমেই এই সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া অফিস-আদালত ও স্কুল কলেজের বারান্দায়, রেল স্টেশন ও বাস টার্মিনালে বিপুল সংখ্যক ছিন্নমূল নারী-পুরুষ রাত কাটায়। এদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করতে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারী খাস জমি বা জেগে ওঠা নতুন চরে এদের বহুজনেরই বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
প্রয়োজন ন্যুনতম তিনবান টিন, গোটা দশেক বাঁশ ও অন্যান্য সরঞ্জাম। এদেশের ৫,০৩৫টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের প্রতিবছর যদি অন্ততঃ পাঁচটি করে পরিবারকে ঘর বেঁধে দেওয়া যায় তাহলে উপকৃত হবে ২৫,১৭৫টি পরিবার, ব্যয় হবে ৫০কোটি ৩৫লক্ষ টাকা।
উপসংহারঃ
উপরের আলোচনা হতে এ সত্য দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ঠ যে, বাংলাদেশের জনগনের দারিদ্রমোচন ও মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে কোন "আলাউদ্দিনের চেরাগ" দরকার নেই। এজন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে সম্পদ আছে তা পর্যাপ্ত বলেই গণ্য হবে। বরং আজ যা প্রয়োজন তা হল ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও স্তম্ভটি সম্পর্কে সম্যক অবহিত হওয়া।
যাকাত আদায় ও তার যথাযথ বিলিবন্টন এবং ব্যবহার সম্পর্কে সরকারী নীতি-নির্দেশনা যদি নাই পাওয়া যায় তাহলে সাংগঠনিকভাবে আঞ্চলিক ও স্থানীয় ভিত্তিতে হলেও উপযুক্ত কর্মপন্থা নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। নিতে হবে একটি সুদূরপ্রসারী কার্যকরী পরিকল্পনা। তাহলেই সুদখোর এনজিওদের কবলমুক্ত ও বিদেশী সাহায্য নির্ভরশীলতামুক্ত হয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।