চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দলীয় নেতা-কর্মীরা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে প্রায় ২০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শামসুল আলম মাস্টার ও নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান শেঠের সমর্থক নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি হয়েছে। এতে ১০ জন আহত হয়। এ সময় এক পক্ষের বিক্ষুব্ধ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন নগর সভাপতি সোলায়মান শেঠ। গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে নগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন এরশাদ। পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগ দেওয়ার জন্য শনিবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বিমানে চট্টগ্রাম আসেন এরশাদ। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বের হয়ে এরশাদ আগে থেকে নির্ধারিত সোলায়মান আলম শেঠের গাড়িতে ওঠেন। এ সময় বিমানবন্দরের বাইরে জাতীয় পার্টির বেশ কিছু নেতা-কর্মী চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যান এরশাদ সরাসরি সোলায়মান আলম শেঠের গাড়িতে ওঠায় অনেক কর্মী, সমর্থক তাকে দেখতে না পেয়ে হতাশ হন। এ সময় পটিয়া থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক মাস্টার এরশাদকে বহনকারী গাড়িতে উঠতে চাইলে সোলায়মান আলম শেঠ বাধা দেন। এ সময় এরশাদের সামনেই উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে শেঠ এবং শামসুল হক মাস্টারের সমর্থকরা পরস্পর হাতাহাতি ও ?মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। মাস্টারের সমর্থকরা এরশাদকে বহনকারী গাড়ির সামনে বসে পড়ে প্রায় ২০ মিনিট গাড়ি অবরোধ করে রাখে। কিছু কর্মী সোলায়মান আলম শেঠকে লাঞ্ছিত করে তার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে। পরে এরশাদ নিজে শামসুল আলম মাস্টারকে ডেকে গাড়িতে তুললে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে সংঘর্ষে সোলায়মান শেঠ গ্রুপের আজগর আলী, আলী ইমরান, মুন্না, আবছার, শুক্কুর, নুরুচ্ছফা ও মোরশেদ মুরাদ- সামসুল মাস্টার গ্রুপের আবদুস ছাত্তার রনি, সাইফুদ্দিন মানিক, কাজী নিজাম ও জুয়েলসহ ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের নগরীর বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
শামসুল আলম মাস্টার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় পার্টির দক্ষিণ জেলা কমিটি নিয়ে বির্তক রয়েছে। প্রকৃত নেতারা স্থান পাননি। এতে নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এগুলোর নায়ক হচ্ছেন সোলায়মান শেঠ। তিনি দলকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) মনজুর মোর্শেদ বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্যারের গাড়িতে উঠা নিয়ে দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। পরে স্যারকে নেভালের ভেতরের সড়ক দিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রাম কত্দাবে পেঁৗছে দেওয়া হয়েছে। পরে ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়ে এবং আগামী নির্বাচন হবে কিনা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বলেছেন, দেশে হত্যা, রাহাজানি বেড়ে গেছে। ফিল্মি স্টাইলে দিনদুপুরে মানুষ হত্যা করার রাজনীতিও বেড়ে গেছে। গণতন্ত্র আজ হুমকির মুখে। নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সন্ধিহান দেশের সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত রয়েছে। কোনো পাতানো নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে না। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাব। ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জিয়াউদ্দিন বাবলু। নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান শেঠের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীম, সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল আলম, বিএনপি নগর সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।