একটা গাড়ী খুজছি , ব্যাক টু দ্য ফিউচারে যাওয়ার গাড়ীটা খুজছি / তথ্যের অংক , যুক্তির জ্যামিতি
ফেব্রুয়ারীর ২ তারিখের ই-প্রথমআলো ব্রাউজ করতে গিয়ে বেশ বড় একটা হোচট খেলাম.....
নাহ , হেনার অসার মৃত মুখের ছবিটি দেখে নয়.......
হোচট খেয়েছি অন্য কিছুতে.......
৫ বছরের শিশু তানিয়া ধর্ষনের কথা সম্ভবত সবারই মনে আছে....
ধানক্ষেতে পাটক্ষেতে জংগলে ৬ বছর / ৭ বছর / ৮ বছর বয়সের বাচ্চা মেয়েদের ধর্ষিত হবার স্নায়বিক অসুস্থকর খবর শুনতে শুনতে গা সয়ে গেছে........
সেখানে হেনার বয়স তো ১৪ , ঐ বাচ্চা মেয়েগুলোর তুলনায় একটু বেশীই......
তাহলে হোচট খেয়েছি কোথায় ?
" মেয়েটির চিৎকারে প্রথমে মাহাবুবের স্ত্রী আর ভাই বের হয়ে আসেন।কিন্তু তাঁরা মেয়েটিকে উল্টো মারধর করেন "
প্রথম আলোর পাতায় এই অংশটুকু পড়ে ব্যাপারটা বেশ মোটা দাগের বেমানান মনে হলো......
এটা কি করে সম্ভব ?
ভাত কাপড়ের জন্য মাহবুবের মত ৪০ বছর বয়স্ক লম্পট জন্তুর কাছে ঠেকায় থাকতে হতে পারে........
তাই বলে ঐ লম্পট ধর্ষক স্বামীর পক্ষ নিয়ে কিভাবে মাহবুবের স্ত্রী হেনার মত ১৪ বছর বয়সের নিজেরই মত আরেকটা গরীব মেয়েকে এভাবে মারধোর করতে পারে ?
ভাবছিলাম তথ্যের সরলরেখাতেই আছি।
কিন্তু না ।
স্বভাব মত অন্য পত্রিকাগুলোর ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে গিয়ে বুঝলাম
তথ্যের সরলরেখায় নয় , বরন্চ্ঞ সাংবাদিকতার জিলাপীর প্যাচে আছি....
যেই জিলাপীর প্যাচে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে সমাজের একটি ভয়াবহ বিস্তারমান সংক্রামক রোগ....
সাংবাদিকতার গজ-ব্যান্ডেজের প্যাচ আপ দিয়ে ক্যান্সারের একটি স্পয়েল্ট সোমাটিক সেলকে ঢেকে রাখা হচ্ছে......
হেনা ধর্ষিত হয়নি.........
৪০ বছরের কুৎসিত লম্পট জন্তু মাহবুবের সাথে ১৪ বছরের হেনার বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ছিলো......
কালের কন্ঠ , যুগান্তর , বিডিনিউজ২৪ , আমাদের সময় , ডয়চে ভেলে এবং আরো কিছু সংবাদসূত্র মিলিয়ে সেই অপ্রিয় সত্য তথ্যটিই বেরিয়ে আসলো.....
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ কালের কন্ঠ/ শেষ পাতা
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ কালের কন্ঠ/ বাকী অংশ
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ যুগান্তর/শেষ পাতা
ফেব্রুয়ারী ২/২০১১/ যুগান্তর /বাকী অংশ
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ আমাদের সময়/১ম পাতা
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ আমাদের সময়/৩য় পাতা
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ বিডিনিউজ২৪.কম
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ ডয়চে ভেলে
তাহলে কি হেনা নৈতিকতার কাঠগড়ায় অপরাধী ?
সেটা বলা যায়না তার বয়সগত কারনে.....
তাহলে ব্যাপারটাকে সংজ্ঞায়িত করা যায় কিভাবে ?
হেনা অসুস্থ - আসক্ত........
প্রিম্যাচিওর সেক্সুয়াল অ্যাডিকশন।
অপরিণত যৌনতা আসক্ত ছিলো হেনা.....
অজ পাঁড়া গায়ের চোখ রাঙানো সমাজ ব্যবস্থায় যখন বারংবার নিষেধ অমান্য করে হেনার মত ১৪ বছর বয়সের একটা মেয়ের ভেতরে মাহবুবের মত ৪০ বছরের মাংশাসী জন্তুর প্রতি আসক্তি জন্মায় যৌন কামনা থেকে
সেটাকে "অপরিনত যৌনতা আসক্তি" বললে বোধহয় ভুল হবেনা....
কথায় বলে ডাক্তার আর উকিলের কাছে কিছু লুকাতে নেই.....
সেটা রোগী আর মক্কেলের বেলায়.....
কিন্তু ডাক্তার আর উকিল মশায়ের বেলায় কি ?
বাংলাদেশের অনেক কিছুতেই অঘোষিত জাতীয় উকিল এবং জাতীয় ডাক্তারের ভুমিকা পালন করা প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান পেশাদারিত্বের সাথেই অনেক কিছুই লুকিয়ে ফেলেন......
তাতে কি এই ডাক্তার মশায়ের রোগী সুস্থ্য হবে ?
তার মক্কেল ফেঁসে যাওয়া মামলা থেকে উদ্ধার হবে ?
হেনার ইস্যুতে ফেব্রুয়ারী ২ তারিখের মতই ৩ তারিখের পত্রিকাতেও মতিউর রহমান সেই জিলাপী প্যাচাচ্ছেন.....
গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে প্যাচ আপ করছেন.....
প্যাচাচ্ছেন আজ ৪ তারিখের পত্রিকাতেও......
ফেব্রুয়ারী ২/২০১১/ ১ম পাতা
ফেব্রুয়ারী ২/২০১১/ ২য় পাতা
ফেব্রুয়ারী ৩/২০১১/ ১ম পাতা/ ইমেজ
ফেব্রুয়ারী ৩/২০১১/ ১ম পাতা
ফেব্রুয়ারী ৩/২০১১/ ২য় পাতা
ফেব্রুয়ারী ৩ /২০১১/ প্রথম আলোর সম্পাদকীয়
ফেব্রুয়ারী ৪ /২০১১ / প্রথম আলোর / ১ম পাতা
ফেব্রুয়ারী ৪ /২০১১ / প্রথম আলোর / ২য় পাতা
মৃত হেনাকে মরনোত্তর তিরোস্কার থেকে সেইভ করার জন্য স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্কের ঘটনাকে ধর্ষন বলে চালিয়ে দেয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান.....
তারসংগে অজ পাঁড়াগায়ের অর্থব বিবেকহীন কূপমন্ডুকতাকেও এংগেজ অ্যান্ড হিট করেছেন.........
স্বেচ্ছা শারীরিক সম্পর্কের ঘটনাকে ধর্ষন বলে চালিয়ে দেয়ার এই প্রোপাগান্ডায় উপরের দুই প্রাইমারী পারপাসের আড়ালে কোন সাপ্লিমেন্টারী পারপাস আছে কিনা আমি নিশ্চিত নই যেহেতু কাঠমোল্লা উদোদের পিন্ডি আমাদের সাধারন মুসলিম বুধোদের ঘাড়ে চাপাতে মতিউর রহমান অত্যন্ত সুক্ষাতিসুক্ষ্ণ দক্ষ.......
যাইহোক , অ্যাপারেন্টলী নিয়ত ভালো - তাই মেনে নিলাম প্রথম আলোর মিথ্যাচার , তথ্য বিকৃতি......
সমকালও একই ভাবে ইনফরমেশন ফলসিফাই করেছে প্রথম আলোর মত :
ফেব্রুয়ারী২/২০১১/ সমকাল/৩য় পাতা
ফেব্রুয়ারী ২/২০১১/ সমকাল /বাকী অংশ
কিন্তু প্রবাদ আছে : অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ থাকেনা.....
প্রথম আলো কিংবা সমকাল যতোই অন্ধ সেজে থাকুক সমাজে ছড়িয়ে পড়া এই ভয়াবহ রোগ নিয়ে তাতে কিন্তু প্রলয় বন্ধ থাকছেনা.....
প্রমান চান ?
সমকাল , শেষের পাতা , ফেব্রুয়ারী ৩/২০১১
বাকীটা পড়ুন.......
পিরোজপুরের আরো কোন এক অজ পাঁড়াগায়ের খবর এটি....
সনাতন / হিন্দু ধর্মাবলম্বী শংকর তার স্ত্রী সীমার অনৈতিক পরকীয়ার সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে দা দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে স্ত্রী এবং স্ত্রীর প্রেমিকের বৃদ্ধা মাকে......
অপেক্ষা করেনি কোন ব্রাক্ষ্মন কিংবা পুরোহিত ঠাকুরের ফতোয়ার জন্য....
আজ যেই সব প্রগতির দিকপালরা হেনা - মাহবুবের অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কের ক্ষতে " মানব জন্মের স্বাধীনতার জেল " মাখাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য বলছি.....
মানুষ কোন যন্ত্র নয় , মানুষের খুলির ভেতরে কোন প্রোগ্রামড মাইক্রোকন্ট্রোলার বসানো নেই......
মানুষ রক্ত-হরমোন-পন্চ্ঞ ইন্দ্রিয় আর নিউরন চতুষ্টয়ের বিক্রিয়ায় এক হৃদয় রসায়নের প্রানী......
এটি অনেক পুরোনো ফিলোসোফি :
মানুষের ভেতরেই অসুর আর দেবতা বাস করে.....
ভাইরাসের মত পারিপার্শ্বিকতা তার ভেতরের অসুরতা কিংবা দৈবত্যকে জীবন্ত করে তোলে.....
পুডল নিয়ে খেলতে খেলতে বড় হওয়া আমেরিকান বাচ্চার ভেতরের কোমলতা আফ্রিকার কয়লার খনিতে ক্রীতদাসত্বের শেকল বন্দী বাচ্চার কাছ থেকে আশা করা যায়না......
এলএমজি হাতে রুয়ান্ডার গৃহযুদ্ধের শিশুসৈন্যের কাছ থেকে আশা করা যায় কেবল রুক্ষতা আর কর্কশতা......
উন্নাসিক প্রগতিবাদে শরীর - মনের সব খায়েশ মেটানোকে যদি মানব জন্মের স্বাধীনতা বাহবা দেয়া হয় , LICENSED TO DO সার্টিফাই করা হয় তবে ভবিষ্যতের অনাগত দিনগুলোতে তারই প্রতিক্রিয়ায় শরীর মনের বিকৃত বিক্রিয়ায় অসংখ্য সেল্ফ সার্টিফাইড LICENSED TO KILL গৌতম তৈরী হবে.....
প্রতিটি ক্রিয়ার সমান আর বিপরীত মুখী প্রতিক্রিয়ার ধর্ম মেনেই এটা ঘটবে....
এটা ইনএভিটেবল , অবশ্যম্ভাবী........
গৌতমের শক্তিশালী পুরুষহাতে সে ছুরি চালিয়েছে পরকীয়া আসক্ত স্ত্রীর গলায়......
শিল্পীর অবলা নারী হাতে অতোটা শক্তি নেই......
নইলে আজ ঘটনার পানি বিতর্কের নালা বেয়ে দোররা- ফতোয়া পর্যন্ত পৌছাতোনা.....
অন্ধ বিবেকবোধের কিছু কুপমন্ডুকের অঘটনের ধাক্কায় কি বোর্ডে খটাখট আঙুল চালাতে হতোনা.....
তার আগেই পত্রিকার শিরোনাম হতো :
" শরীয়ত পুরে পরকীয়ারত স্বামী ও তার কিশোরী প্রেমিকাকে কুপিয়ে হত্যা , ঘাতক স্ত্রী শিল্পী গ্রেফতার "
আসামীর কাঠগড়ায় কেবল সাইদুর রহমান , মফিজউদ্দিন , মীর মালতদের কে তোলাই ভুল হবে.....
কাঠগড়ায় তুলতে হবে সেই প্রথম আলোকেও যারা ষাটোর্ধ ভীম হুমায়ুনের মেয়ের বয়সী শাওনের সাথে বুড়ো বয়সের রতি কে সংজ্ঞায়িত করে "বাধা পেরুনো প্রেম" ......
কাঠগড়ায় তুলতে হবে একুশে টেলিভিশনকে যারা নাচে গানে নাম্বার ওয়ান বানানোর নামে টিনএজদের মাথায় ডিজ্যুস ভাইরাস ঢোকাচ্ছে....
কাঠগড়ায় তুলতে হবে সেই চ্যানেল আইকেও যারা বাসনার মত বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে "কলংক"'র গান শোনায়.......
ভাবতেই অবাক লাগে - এতটুকু বাচ্চা মেয়ে কলংকও বোঝে !
দেশ ছাড়ার আগে কোন এক বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের বেদীতে বসে ঐসব টপিকে গ্যাজাচ্ছিলাম কয়েকজন মিলে.... হয়তো বয়সের দোষেই.....
এক দোস্ত বলছিলো :
" দুনিয়া দারী বহুত খারাপ হয়া গেসেরে দোস্ত....
নাইন টেনের ভিকির মাইয়াগো থ্রী পাওন যায় অ্যাভেইলঅ্যাবল.....
কলেজ ভার্সিটিতো অহনো শুরুই করে নাই....."
শুনে ফুস করে নিঃশ্বাস ছেড়েছিলাম.....
নিজে প্রতারক নই , কিন্তু যদি প্রতারিত হই....
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।