http://orbachinvabona.blogspot.com/, http://www.youthinkers.com/author/tahseen-sadik/, http://newfangled-conjecture.blogspot.com
[ফা হ মি দ - উ র - র হ মা ন এর লেখাটি কপি করলাম]
উনিশ শতকে ইংরেজ পণ্ডিত, ভাষাবিদ ও নৃতাত্ত্বিকরা প্রথমে বাঙালির জাতিসত্তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। সেই আলোচনার ওপর নির্ভর করে সেকালের শক্তিমান সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটা প্রবন্ধ লেখেন। এর শিরোনাম ছিল ‘বাঙালির উত্পত্তি’। বঙ্কিম শুধু উপন্যাস লেখেননি, অনেক চিন্তাশীল প্রবন্ধও লিখেছেন, যার প্রভাব সেকালের হিন্দু সমাজের ওপর যথেষ্ট পড়েছে। বঙ্কিমের এই প্রবন্ধটির একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে, কারণ এটির ভেতর দিয়ে তিনি একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে চেয়েছেন।
সেই প্রশ্নটা তিনি নিজেই করেছেন : লোক গণনায় স্থির হইয়াছে যে, যাহাদিগকে বাঙ্গালী বলা যায়, যাহারা বাংলাদেশে বাস করে, বাঙ্গালা ভাষায় কথা কয়, তাহাদিগের মধ্যে অর্ধেক মুসলমান। ইহারা বাঙ্গালী বটে, কিন্তু ইহারাও কি সেই প্রাচীন বৈদিক ধর্মাবলম্বী জাতির সন্তান?’
বঙ্কিম চন্দ্র নিজের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন, বাঙালি এক ভাষায় কথা বললেও তারা আসলে সবাই মিলে একজাতি নয়। বঙ্কিমের মতে, যারা বাংলা ভাষায় কথা বলে তারা চার প্রকার :
১. আর্য হিন্দু
২. অনার্য হিন্দু
৩. আর্য অনার্য মিশ্র হিন্দু
৪. বাঙালি মুসলমান
এই চার ভাগের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নেই। এদের মধ্যে রক্তের মিশ্রণ ঘটেনি বা ঘটা সম্ভব নয়। বঙ্কিমের মতে, ইংরেজরা যে অর্থে জাতি হয়ে উঠেছে, বাঙালিরা সেভাবে কখনও জাতি হতে পারেনি।
ইংরেজদের মধ্যে এঙ্গল, স্যাকসন, নর্মান, ডেন ও টিউটন মিশে একাকার হয়ে গেছে। তাদের পরস্পরের মধ্যে রক্তের বন্ধন তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাংলা ভাষীদের মধ্যে সেরকম কোনো বন্ধন তৈরি হয়নি। বঙ্কিম লিখেছেন :
‘ইংরেজ একজাতি, বাঙ্গালী বহুজাতি। বাস্তবিক এক্ষণে যাহাদিগকে আমরা বাঙ্গালী বলি, তাহাদের মধ্যে চারি প্রকার বাঙ্গালী পাই।
এক আর্য, দ্বিতীয় অনার্য হিন্দু, তৃতীয় আর্যানার্য হিন্দু, আর পরের বার এক চতুর্থ জাতি, বাঙ্গালী মুসলমান। চারিভাগ পরস্পর হইতে পৃথক থাকে। বাঙ্গালী সমাজের নিম্নস্তরেই বাঙ্গালী অনার্য বা মিশ্রিত আর্য ও বাঙ্গালী মুসলমান, উপরের স্তরে কেবলই আর্য। এই জন্য দূর হইতে দেখিতে বাঙ্গালী জাতি অমিশ্রিত আর্য জাতি বলিয়া বোধ হয় এবং বাঙ্গালীর ইতিহাস এক আর্য বংশীয় জাতির ইতিহাস বলিয়া লিখিত হয়। ’
বঙ্কিমচন্দ্রের সময় বাংলাভাষীর সংখ্যা ছিল ৩০,৬০০,০০০।
এর মধ্যে উচ্চ বর্ণ ব্রাহ্মণের সংখ্যা ছিল ১১ লাখ। বঙ্কিমচন্দ্র এই ১১ লাখ বাংলা ভাষীকেই বলতে চেয়েছেন খাঁটি আর্য ও খাঁটি বাঙালি। আর সবাই হচ্ছে নিম্ন শ্রেণীর বাঙালি। সবচেয়ে নিকৃষ্ট শ্রেণী হচ্ছে বাঙালি মুসলমান। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি বাংলা ভাষী মুসলমানকে বাঙালি বলতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন।
বাঙালির উত্পত্তি প্রবন্ধে তিনি কোল, ভিল, সাঁওতাল, বাগদী প্রমুখকে নিয়েও বিস্তর লিখেছেন। কিন্তু বাংলা ভাষী মুসলমানদের নিয়ে তেমন কিছু বলতে চাননি। শুধু বাঙালির শ্রেণী বিভাগে তাকে নিম্নস্তরে রেখেই তার দায়িত্ব শেষ করেছেন। শুধু বঙ্কিমচন্দ্র নয়, উনিশ শতকের বড় বড় হিন্দু সমাজ নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা বাঙালি বলতে প্রধানত হিন্দুদেরই বুঝাতে সচেষ্ট হয়েছেন। মুসলমানরা যে বাঙালি এ কথাটা তারা সহজে মানতে পারেননি।
যদিও সেকালে মুসলমানরা ছিল বাংলার জনসংখ্যার অর্ধেক। বঙ্কিমচন্দ্র স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি একদিন বাঙালি মুসলমানরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দেবে। আর বাংলা হবে তার রাষ্ট্রভাষা।
আমাদের দেশে যারা বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে উচ্চকণ্ঠ, তারা কি বঙ্কিমচন্দ্রের এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিষয়ক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে একমত হবেন?
কারণ বঙ্কিমের বাঙালিরাই তো বাংলা ভাগ করেছে। বাঙালি হিন্দু যদি অখণ্ড বাংলা চাইত, তবে আজকের বাংলাদেশের মানচিত্র ভিন্নরকম হতো।
আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা কি ব্যাখ্যা করতে পারবেন ৯ কোটি বাংলা ভাষী কেন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের নাগরিক? কেন তারা বাংলাদেশে বসবাস করছে না? কেন তারা এক পতাকার তলে সমবেত হয়নি? বাঙালি জাতীয়তাবাদের ঐতিহাসিক ভিত্তি তাই খুব দুর্বল মনে হয়।
১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন বাংলাকে দুই ভাগ করেন। বাঙালি হিন্দুরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বঙ্গভঙ্গ রদ করে। কিন্তু যে বাঙালি হিন্দু ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তারাই আবার ১৯৪৭-এ চায় বঙ্গভঙ্গ। তাদের এই পরিবর্তিত মানসিকতার তাত্পর্য বোঝা চাই।
কেন মাত্র ৪২ বছরের ব্যবধানে বাঙালি হিন্দু সমাজের মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটল আর তারা গ্রহণ করল ভিন্ন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি।
আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা এখন গান বেঁধেছেন হারানো বাংলাকে খুঁজে পাওয়ার : একদিন বাঙালি ছিলাম রে। প্রশ্ন ওঠে, কোন বাংলা ও বাঙালি। বঙ্কিমচন্দ্রের বাঙালি না পূর্ব বাংলার নিম্ন শ্রেণীর বাঙালি।
ইতিহাসের এই পার্থক্যকে আমাদের উপলব্ধি করা দরকার।
ওপার বাংলা আর এপার বাংলার ইতিহাস কিন্তু একইভাবে প্রবাহিত হয়নি। ওপার বাংলা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের আওতায় বাস করা স্বচ্ছন্দ বোধ করেছে। এপার বাংলা পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ওপার বাংলার রাষ্ট্রভাষা হিন্দি, এপার বাংলার ভাষা বাংলা। ওপার বাংলার মানুষ বাংলা ভাষার জন্য লড়াই করেনি।
এপার বাংলার মানুষ তা করেছে।
এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে, কেন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষা আন্দোলনের মতো সংগ্রাম গড়ে উঠল না। কেন তারা হিন্দির আধিপত্য প্রসন্নভাবে মেনে নিল।
অথচ এই বাঙালি হিন্দুরাই তো ঔপনিবেশিক আমলে বাংলার সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, সঙ্গীতের প্রায় একচ্ছত্র স্রষ্টা। যে ভাষায় আমরা এখন কথা বলি, গান গাই, গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখি, তার পুরোটাই তো কলকাতার হিন্দু-বাবুদের সৃষ্টি।
অথচ তারা বাংলা ভাষার জন্য লড়লো না। লড়লো তারা, যাদের নাকি বাবুরা এক সময় চাষাভুষো বলে গাল দিয়েছে। বাবুরা হিন্দিকে মেনে নিয়েছে, চাষাভুষোরা সেরকম কিছু মেনে নিল না কেন?
এটা কোনো বাঙালি জাতীয়তাবাদী আকাঙ্ক্ষার জন্য নয়। এটাকে বিচার করতে হবে ঐতিহাসিকভাবে। ঐতিহাসিকভাবে দুটো সম্প্রদায়ের গড়ে ওঠার ইতিহাস আলাদা।
তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা-সংকল্প এক নয় মোটেই।
পশ্চিম বাংলার মানুষ বাংলাকে কম ভালোবাসে, তা কি বলা যাবে? এটা তো সত্য নয়। কিন্তু তারা ভারতীয় বাঙালি, আমরা বাংলাদেশী বাঙালি। এই পার্থক্য তো অস্বীকার করা যাবে না। কংগ্রেসের তাত্ত্বিক ও রাজনীতিকদের সুরে আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদীরাও এখানে এক গান ধরেছেন দ্বিজাতিত্ত্ব ভুয়া জিনিস।
কিন্তু এই বাস্তবতা অস্বীকার করবেন কী করে?
অস্বীকার করে কি ভারতীয় বাঙালি ও বাংলাদেশী বাঙালির পার্থক্য মোচন করা যাবে?
শেষ পর্যন্ত একটা জাতি ইতিহাসের ধারায় গড়ে ওঠা একটি জনসমাজ ছাড়া কিছু নয়। যখন এই জনসমাজ একটি রাষ্ট্র গঠন করে, তখন তা পরিণত হয় একটা জাতিতে। যেমন আমরা। ইতিহাসের নানা ঘটনা ও উপাদান দিয়ে একটা জাতিসত্তা তৈরি হয়। আবার তার থেকে তৈরি হয় স্বাতন্ত্র্যবোধ।
আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা এই স্বাতন্ত্র্যবোধকে আজ অস্পষ্ট করে তুলতে চাইছেন। কিন্তু আমাদের জাতিসত্তার ব্যাপারে প্রয়োজন এই স্বাতন্ত্র্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি। বাঙালি হিন্দু বেদ উপনিষদের গৌরব করে। তারা চায় হিন্দু আর্য সভ্যতার ভিত্তিতে একদেশ, একজাতি গড়তে। এ জন্য বাঙালি হিন্দু মারাঠি, কানাড়ি, পাঞ্জাবি, রাজস্থানি হিন্দুর সঙ্গে একাত্ম হয়ে ভারতীয় জাতি গড়ে তুলতে দ্বিধা করেনি।
বাঙালি মুসলমানের সেই গৌরববোধ আদৌ ছিল না। ছিল না বলেই তারা একটা পৃথক রাষ্ট্র গড়েছে। বাঙালি মুসলমানের এই স্বাতন্ত্র্য চেতনাকে এখানকার বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা ‘সাম্প্রদায়িকতা’, ‘পাকিস্তানি চেতনা’ ইত্যাদি আ-কথা, কু-কথা বলে হেয় করতে চান। এতে কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়। ইতিহাসের নামেই তারা আজ করছে সবচেয়ে বেশি ইতিহাস বিকৃতি।
যারা আমাদের ১৯৫২ সাল থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ শেখাচ্ছেন, তারা আসলে ক্রমাগতভাবে আমাদের মিথ্যা বলছেন। তারা দ্বিজাতিতত্ত্বকে অস্বীকার করেন। তারা অস্বীকার করেন এই উপমহাদেশে দুটি সম্প্রদায় এক সঙ্গে থাকতে পারেনি। তারা এটাও অস্বীকার করেন হিন্দু জমিদার মহাজন শ্রেণী পূর্ব বাংলার কৃষকদের নির্যাতন, অত্যাচার, শোষণ করেছে। দরিদ্র, অশিক্ষিত কৃষকের দল দ্বিজাতিতত্ত্বের বোঝে কী? তারা দেখেছে হিন্দু জমিদার আর মহাজনদের অত্যাচার।
এই অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা পাকিস্তান চেয়েছিল। এ ইতিহাস আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের জন্য খুবই অপ্রীতিকর, কারণ তারা সীমান্তের ওপারের বন্ধুদের ইতিহাস ব্যাখ্যায় বেশি আগ্রহী।
২০০ বছর ধরে পূর্ব বাংলার বাঙালিরা স্বাধীনতার জন্য লড়েছে। নিজেদের প্রতিষ্ঠার জন্য লড়েছে। কিন্তু তাদের সেই লড়াইয়ের ইতিহাসকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে ঢেকে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
এটা শুধু ইতিহাস বিকৃতিই নয়, এটা ঘোরতর অপরাধ। এখন প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে ১৯৫২ সাল থেকে আমাদের ইতিহাসের শুরু হয়েছে। এরপরও তারা বলছেন, আবহমান বাঙালির কথা। হাজার বছরের বাঙালির কথা। এর চেয়ে বড় বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা আর হতে পারে না।
বাংলা ও বাঙালির নামে মাস্টারদাকে নিয়ে উত্সব করা হয়। মাস্টারদাকে নিয়ে কিছু হলে অসুবিধা নেই।
কারণ তিনি ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। কিন্তু আপনি তিতুমীরকে নিয়ে উত্সব করেন না কেন কিংবা ১৮৫৭-তে যারা ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়ল, যেসব আলেমকে ইংরেজরা গাছে ঝুলিয়ে ফাঁসিতে মারল, তাদের আপনি স্মরণ করেন না কেন? তারা মুসলমান বলে?
ইতিহাসের কাছে একটা প্রাপ্য যেমন মাস্টারদার আছে, তেমনি আছে তিতুমীরের। কিন্তু আপনি একজনের প্রাপ্য দেবেন, আরেকজনেরটা দেবেন না।
এটাই তো সাম্প্রদায়িকতা।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ মানে এখন দাঁড়িয়েছে, যে কোনোভাবেই হোক ইতিহাসের দিক দিয়ে মুসলমানদের অপাঙক্তেয় প্রমাণ করতে হবে। প্রমাণ করতে হবে ওরা গাদ্দার। বিশ্বাসঘাতক। যেন তারা ইংরেজের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেনি।
সবই করেছে কংগ্রেস, অনুশীলন, যুগান্তরের মতো দল। মুসলিম লীগ কিছুই করেনি। মুসলিম লীগ মানে হচ্ছে একটা সাম্প্রদায়িক সংগঠন আর ইংরেজের দালাল।
বাংলাদেশের মানুষ একদিন পাকিস্তান চেয়েছে আর মুসলিম লীগের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এটা হিন্দুদের পছন্দ হয়নি।
কারণ তারা অখণ্ড ভারত চেয়েছে। অখণ্ড বাংলা নয় কিন্তু। কারণ অখণ্ড বাংলায় মেজরিটি মুসলমান। মুসলমানদের ওপর এত গোস্বার কারণ তারা অখণ্ড ভারত চায়নি। মানে তারা মেজরিটির আধিপত্য চায়নি।
এই কারণেই তাদের বলা হলো সাম্প্রদায়িক, গাদ্দার, গরু খাওয়া মুসলমান।
এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে, উপমহাদেশের ঘোর সাম্প্রদায়িক শক্তিটি মজলুম একটি সম্প্রদায়কে পাল্টা সাম্প্রদায়িক বানিয়ে দিচ্ছে। এখন অবস্থা দাঁড়িয়েছে, সাম্প্রদায়িক বলতেই মুসলমানদের বুঝতে হবে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ এ দেশে এখন এই সাম্প্রদায়িক শক্তিটির প্রকাশ্য বরকন্দাজে পরিণত হয়েছে মাত্র।
বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে।
কিন্তু আসলে তারা ঘোর সাম্প্রদায়িক। কেন সাম্প্রদায়িক?
কারণ বাঙালি বলে আজকে যা বুঝানো হয়, তা ওই উনিশশতকী উচ্চবর্ণের হিন্দু বাঙালির সংজ্ঞা। বঙ্কিমের সংজ্ঞার কথা স্মরণ করুন। পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক সংজ্ঞা। এই উনিশশতকী সংজ্ঞার পুরোপুরি বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা না করে বাঙালির জাতিগত পরিচয় ও সংস্কৃতির দাবি ছিল পূর্ব বাংলার মজলুম জনগণের অসাম্প্রদায়িক ইচ্ছা ও কল্পনার ইতিহাসকে উড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সাম্প্রদায়িক কলকাতার বাঙালি তৈরির ইচ্ছা মাত্র।
প্রকাশ্যে এই সাম্প্রদায়িক কলকাতাইয়া বাঙালি তৈরি সম্ভব নয় বলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের শাড়ি পরানো হয়েছে। এখনো সেই চেষ্টাই চলছে। তবে এটি এখন বড় রকমের প্যারোডিতে পরিণত হয়েছে বলা চলে। কারণ পূর্ব বাংলার চাষাভুষোদের চোখ খুলতে শুরু করেছে। আর শাড়িও খসে পড়ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।