আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রিকেট খেলতে গিয়ে কিছু ভীতিকর অভিজ্ঞতা

No more will my green sea go turn a deeper blue I could not foresee this thing happening to you

ছোটবেলা খেলতে গিয়ে অনেক ধরনের অভিজ্ঞতারই সম্মুখীন হতে হয় আমাদের ৷ এগুলো থেকে অনেক সময় রক্তারক্তি কাহিনীরও সূত্রপাত হয় ৷ আমার ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতে গিয়ে হওয়া কিছু না ভুলতে পারা স্মৃতিই তুলে ধরব আমি যখন চথুর্থ শ্রেণীতে পড়ি তখন একদিন আমাদের বাসার সামনে ক্রিকেট খেলছিলাম ৷ মনে পরে ঐদিন বৃষ্টি হওয়ায় মাঠটা আগে থেকেই পিচ্ছিল ছিল ৷ আমি ছিলাম বোলার,ক্যাচ উঠেছে ঐদিকে আমি মোটামুটি হাফ ক্রিজে চলে আসছি ৷ বজ্জাত ব্যাটসম্যান যে ছিল সে আউট হচ্ছে দেখে সে রান নিতে যাচ্ছে এমন ভঙ্গি করে আমাকে দিলে সজোড়ে ধাক্কা,ধপাস করে মাটিতে পরলাম ৷ তারপর আমি দেখি আমার একটা হাত অনেকটা সাপ ছোবল দেয়ার আগে যেমন করে ওই রকম অবস্থা ! আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, এমনকি যতদুর মনে পরে কোন ব্যথাও অনুভব করছিলাম না ৷ যাইহোক একটু দূরেই আমাদের মসজিদের হুজুর দাড়িয়ে ছিলেন,উনি আমাকে উনার কাছে ডাক দিলেন ৷ কাছে যেতেই উনি উনার গামছাটা আমার হাতে পেচিয়ে ধরে হাতটা টেনে ধরে সোজা করলেন ৷সেদিন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে আমি আমার হাত ভাঙ্গি ! আমাদের পাশের পাড়ার সাথে ক্রিকেট নিয়ে আমাদের সবসময়ই গোলমাল লেগে থাকত ৷ ওরা কখনই আমাদের সাথে পারত না,ছোট-বড় কোন দলেই আমাদের সাথে কখনো পারেনি ৷ পারবে কি করে,ওই পাড়াটা এখনকার মত সবসময়ই ছিল সব মাস্তানদের ব্রিডিং গ্রাউন্ড ! একবার ওদের সাথে আমাদের খেলা চলছে,ওদের পরাজয় বরাবরের মতই নিশ্চিত ৷ এমন সময় ওদের একটা প্লেয়ারের আউট নিয়ে খেলা বন্ধ করে দিল,যিনি আম্পায়ার ছিলেন উনার সাথে ওদের আগে থেকেই গ্যাঞ্জাম ছিল ৷ তো ওই পাড়ার একটা মাস্তান নাপিতদের ব্যবহৃত খুর নিয়ে আম্পায়ারকে আক্রমন করে বসলো ৷ সবাই প্রথমে ভয় পেলেও পরে যখন আমরা আম্পায়ারকে উদ্ধার করলাম ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে ৷ ওই আম্পায়ারকে সে খুর দিয়ে অলরেডি বেশ কয়েকটা আচড় দিয়ে ফেলেছে ! এই ঘটনাটাও ওই পাড়া এবং ওই মাস্তানটাকে নিয়েই ৷ তবে এবারের ভিকটিম আমার ভাইয়া,ভাইয়া ছিল আমাদের এলকার এক সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান ৷ আমরা সাধারনত টেনিস বলের টুর্নামেন্ট গুলোতেই অংশ নিতাম,কিন্তু আমাদের পাশের পাড়ার ওরা ক্রিকেট বলের লিগেও অংশ নিত ৷ তো ওদের দলে খেলার জন্য ওরা আমার ভাইয়াকে থ্রেট দেয়,কিন্তু আমার ভাইয়া তখন খেলত সেরা দলেই আর স্বাভাবিকভাবেই তাদের ব্যাকআপও ভালো থাকায় ওরা বেশি সুবিধা করতে পারেনি এটা নিয়ে ৷ ভাইয়া সাধারণত আমাদের দুই পাড়ার খেলায় অংশ নিত না,তবে একবার একটা বেশ বড় বাজেটের খেলায় আমরা তাকে খেলতে বলি,ভাইয়া বলতে গেলে একাই বড় স্কোর করে যখন আমাদের দলকে জিতিয়ে দিচ্ছে তখন হঠাৎ করেই ওই মাস্তানটা মাঠে ঢুকে পরে ৷ তার হাতে ছিল রামদা,সে দৌড়ে ক্রিজে গিয়ে ভাইয়ার পা লক্ষ্য করে রামদা চালায়,কিন্তু ভাইয়া লাফ দিয়ে সরে যাওয়াতে সে যাত্রায় রক্ষা পায় ৷ খেলা সেখানেই পন্ড,আর ভাইয়ার উপর আঘাত আসায় ব্যাপারটা নিয়ে অনেক হইচই হয় ৷ পরে ওদের এলাকার সিনিয়ররা সহ ওই মাস্তানটা আমাদের বাসায় এসে ভাইয়ার কাছে মাফ চায় ৷ আজও মাঝে মাঝে চমকে উঠি যদি তখন তার আঘাতটা ঠিকমত ভাইয়ার পায়ে লাগত ! তবে এই ঘটনার পর আমার বাবা ভাইয়ার ক্রিকেট খেলাতে কড়াকড়ি আরোপ করেন,ফলে একটা অনেক সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারের অকাল মৃত্যু হয় কেননা ভাইয়াকে অন্য অনেক জেলাতেও খ্যাপ খেলার জন্য নেয়া হত ৷ লেখাটা শেষ করব একটা অন্যরকম ঘটনা দিয়ে,যেই মাস্তানকে নিয়ে দুটো ঘটনা বললাম বেশ কয়েক বছর পর সে তার এলাকাতেই অনেকের মতে তার লোকদের হাতেই মারা যায় !

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.