No body is perfect I am no body বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে সাঈদীকে রাখা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায়।
আদালত কক্ষের কাঠগড়ায় নেয়ার আগে পর্যন্ত এক ঘণ্টার বেশি সময় তিনি সেখানেই ছিলেন।
পুরো সময় চেয়ারে বসে কখনো বই পড়ে সময় কাটান সাঈদী। ১১টা ৯মিনিটে তাকে আদালত কক্ষের কাঠগড়ায় এনে বসানো হয়।
মাথায় টুপি, মুখে লাল দাড়ির সাঈদীকে এ সময় বেশ স্বাভাবিক দেখাচ্ছিল।
ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা শুরুর পর জনাকীর্ণ আদালতের পিছনের কাঠগড়ায় থাকা সাঈদী বসা অবস্থায় মাথা খানিকটা উঁচু করে রায় শুনতে থাকেন। প্রায় ১২টা পর্যন্ত এভাবেই ছিলেন তিনি।
এ সময় তার দেখার সুবিধার্থে আদালতের কাঠগড়ার সামনে পুলিশ কাউকেই দাঁড়াতে দিচ্ছিল না।
শুরু থেকেই বেশ মনযোগ দিয়ে রায় শুনছিলেন সাঈদী।
রায় পড়ার এক পর্যায়ে বলা হয়, ‘একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী যে পিরোজপুরে রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন, প্রসিকিউশন তা সফলভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
’
তখন বেলা ১২টা পেরিয়ে কয়েক মিনিট।
রায়ের ওই অংশ শোনার পর থেকেই পরিবর্তন আসতে শুরু করে সাঈদীর চেহারায়। বিষণ্ন বদনে যেন কালো মেঘ ভর করেছে। এক সময় বিচারকের উপর থেকে সরিয়ে নেন দৃষ্টিও। তখন তার চাহনিতে এক ধরনের অস্থিরতা প্রকাশ পাচ্ছিল।
রায় পড়ার শেষ পর্যন্ত ওভাবেই ছিলেন তিনি। দণ্ড ঘোষণার পর আবার মুখ তুলে তাকান।
বেলা ২টা ২৫ মিনিটে মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে দাঁড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, এটা বিচারকদের শপথের বিবেচনা দ্বারা দেয়া রায় নয়। শাহবাগের আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত রায়। ’
এ সময় রায়ের শ্রোতারা উচ্চস্বরে চুপ.. চুপ বলে চিৎকার করতে থাকেন।
এরপরও সাঈদী কথা বলার চেষ্টা করলে উপস্থিত দর্শনার্থীরা ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’ বলে ওঠেন।
‘তুই রাজাকার’ কথাটি যার নাটকে টিয়া পাখির মুখ দিয়ে বের হয়ে এসেছিল একাত্তরে সেই হুমায়ূন আহমেদের বাবার হত্যায়ও জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল এই রাজাকারের বিরুদ্ধে।
রায়ের পুরো সময় সাঈদী যে কাঠগড়ায় ছিলেন, তার সামনেই দর্শক সারিতে বসে ছিলেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী। রায়ের পর বাবাকে দাঁড়াতে দেখে তিনিও দাঁড়িয়ে যান।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কথা বলতে গিয়ে ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়া বাবাকে রক্ষা করতে সে সময় তিনি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘উনাকে নিচে নিয়ে যান।
উনাকে নিচে নিয়ে যান। ’
এ সময় কাঠগড়ার আশেপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা ঘিরে ধরে সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতাদের মধ্যে দলটির নায়েবে আমির সাঈদীর বিরুদ্ধেই সবার আগে অভিযোগ গঠন হয়।
একাত্তরে ৩ হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাংচুর ও ধর্মান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ২০টি ঘটনায় ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
একই বছরের ৭ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনসহ মোট ২৮ জন রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন।
এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করে। আসামিপক্ষে ১৭ জনের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয় গত ২৩ অক্টোবর।
চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন বিচারক।
- See more at: Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।