নিজের সম্পর্কে আমি যা খুশি মনে করতে পারি...
রিকসা নিতে গেলাম... হাতিরপুল থেকে পলাশী যাব... সাথে এক বড়ভাই। ভাড়া নরমালি পনের টা্কা। যাহোক রিক্সাওয়ালার জন্য অপেক্ষা করছি। হটাৎ বেশ জোয়ান একজন রিক্সাওয়ালা চোখে পড়লো...
আমিঃ এই যে ভাই যাবেন?
(রিক্সাওয়ালা বুঝে উঠতে পারলো না কাকে ডাকি, আফটার অল 'এই খালি' বা 'অ্যাই রিকসা' বলি নাই)
(পুনরায়) আমিঃ এই খালি- পলাশী যাবেন নাকি?
(রিকসাওয়ালা ভাই বুঝতে পারলেন তাকেই ডাকা হচ্ছিল)
রিকসাওয়ালাঃ হ যামুতোঁ। ২৫ টেকা দিয়েন।
আমিঃ ১৫ টাকায় যাবেন?
রিকসাওয়ালাঃ কইলামতো... ২৫ টেকা...
আমিঃ ২০ টাকা নিয়েন?
রিকসাওয়ালাঃ নাহ... ২৫ টেকা...
আমিঃ আচ্ছা যান...
(রিক্সাওয়ালা একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ায়, হয়তো যদি যাই, অথবা অন্য প্যাসেঞ্জারের অপেক্ষায়...)
আমার সাথের অন্য বড়ভাই এতক্ষণ কিছু বলেন নি। হটাৎ বেশ বৃদ্ধ মতন একজন রিক্সাওয়ালা আসলেন। যাহোক উনিই ডাকলেন তাকে। বেশ উচু স্বরেই ডাকলেন।
বড়ভাইঃ ওই রিকসা যাইবোনি?
রিকসাওয়ালাঃ কই যাইবেন মামা?
বড়ভাইঃ পলাশী কত নিবা?
রিকসাওয়ালাঃ ২০ টেকা দিয়েন মামা
বড়ভাইঃ ১৫ টাকায় যাইবা?
রিকসাওয়ালাঃ ওঠেন মামা... কি আর করুম... চলেন যাই...
মামা রিক্সায় উঠলেন।
আমাকেও ইঙ্গিত করলেন। সুতরাং আমিও উঠলাম। যাবার সময় আড়চোখে আগের রিকসাওয়ালার দিকে একটু তাকালাম। বিড়বিড় করে কি জানি বলল মনে হল...
পাঠক কি অনুমান পারেন সে কি বলতে পারে? প্রশ্নটা অবান্তর কিনা জানি না। তবে আমি কিন্ত মনে মনে একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছি।
বৃদ্ধ মানুষটিকেতো আমরা ন্যায্য ভাড়া দিলাম। একটুও ছাড় দিলাম না কিন্তু বলতে পারেন জোয়ান ঐ লোকটাকে আমি ৫ টাকা বেশি দিতে রাজি হয়েছিলাম কেন? মানবতা কি বলবে জানি না, তবে আমি হয়তো বলবো- জোয়ান ঐ লোকটির বোধহয় আমাদের তাড়াতাড়ি গন্তব্যে নিয়ে যাবার ক্ষমতা ছিল। সময়েরতো একটা দাম আছে, তাই না?
পরে বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম... আমরা সময়কে কতটা ভ্যালু দিতে পারি জানি না কিন্তু কখনো কখনো সময় আমাদের অমানুষ করে ফেলে... তাই প্রশ্ন হয়, “সময়টাকে মূল্য দিতে যেয়ে আমরা নিজেদেরকেই আন্ডারভ্যালুড করে ফেলছি নাতো?”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।