সফটওয়্যারের সকল আপডেটেড ডাউনলোড লিঙ্ক পাবেন আমার সাইটে। www.hasanjubair.com
প্রথমেই বলে রাখি আমি মোটামুটি শান্ত এবং একটু বোকা টাইপের ছেলে। আবার এর উপর চশমা পরি। একবারে সোনায় সোহাগা। মানে যে কেউ একবার দেখলেই বুঝে নিতে পারে এই ছেলেকে কয়েকবার বিক্রি করা যাবে।
যাই হোক আমার এই ভয়াবহ অবস্থা নিয়া ভর্তি হলাম হোস্টেলে। মাত্র পঞ্চম শ্রেনীতে। হোস্টেলে নতুন ছাত্রদের সাথে মিশতে পারলেও পুরান ছাত্ররা আমাকে তেলে ভাজা করে ছাড়ল। এমনি বোকা থাকলেও পড়া-শুনায় ঠিক ছিলাম। তাই রেজাল্টের পর স্যারদের সহ সবার একটু সহানুভুতি পেলাম।
কিন্তু তারপরেও এ যাত্রা থেকে পুরাপুরি নিস্তার পাইনি।
ধীরে ধীরে বড় হলাম। তবে ঐদিক দিয়ে আগের মতই রয়ে গেলাম। মানে বুঝলেনই তো!। যখন নবম শ্রেনীতে পড়ি তখন মোবাইল নিলাম।
চোখের সামনে তখন রঙ্গিন দুনিয়া। যা দেখি তাই ভাল লাগে। বন্ধুরা মোবাইলে কথা বলে রাত পার করে দেয় আর আমি পাঁচ মিনিট কথা বলার পর খেই হারিয়ে ফেলি। আকাশ পাতাল খুজেও কথা খুজে পাই না। তারপরেও শখ হলো একটু ইয়ে করি।
বন্ধুরা তখন হাতেম তাই হিসেবে পদার্পন করলো। এ ঐ উপদেশ দেয় তো ও আরেক উপদেশ দেয়। আমি বলি উপদেশে কাজ হবে না তোরা একটা নাম্বার যোগার করে দে। তো এই কথা শুনে এক বন্ধুর মাথায় কূটনৈতিক বুদ্ধি খেলে গেল।
ঐ বন্ধু একটা নাম্বার দিয়ে বলল নে মেয়েটার নাম হলো এই আর খুব ভাল মেয়ে।
সহজেই পটাতে পারবি। তো আমিতো মহা খুশি। এইবার আমারে ঠেকায় কে। আমিও আদা জল খেয়ে লেগে গেলাম ঐ মেয়ের পিছনে। মানে ঐ নাম্বারের পিছনে।
একদিন সাহস করে ফোন দিলাম। অবশ্য বন্ধুটি আমার পাশেই ছিল। ফোন করে কিছুক্ষন কথা বললাম। মনে হলো কথা বলার জন্য মেয়েটি আগেই প্রস্তুত ছিল। এভাবে কিছু দিন চলল।
তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা দেখা করবো। তো সেই উপলক্ষে বন্ধুটি এক দল বন্ধু বান্ধব নিয়ে প্রস্তুত। আমি দেখে অবাক। দেখা করবো আমি তার জন্য এত বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কি হবে? সেই বন্ধুটি বলল আরে দোস্ত সবাই মিলে গেলে মজা হবে আরও ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি তখনও ওদের কুটচাল সম্পর্কে কিছুই জানি না।
যথারীতি সবার ভাড়া দিয়ে দল বেধে মেয়ের সাথে সাক্ষাত করতে গেলাম।
গিয়ে দেখি ইয়া মোটা হস্তি শাবক তুল্য একটা মেয়ে বসে আছে। যেখানে বসে আছে মানে গাছ তলা পুরা অন্ধকার করে রেখেছে। আমি পারলে তখনি দৌড়ে পালাই। বন্ধু মনের কথা বুঝতে পেরে বলল আরে এ মেয়ে না।
তুই যার সাথে কথা বলতি সেই মেয়ের খালা এনি। আর দূরে দাঁড়ানো ঐ মেয়েটি হলো তোর মোবাইল বন্ধু।
রঙ্গিন চোখে মেয়েটিকে তখন মোটামুটি ভালই লাগলো। কথা বার্তা বলে চলে আসলাম। কিন্তু ওদের ফাঁদ সম্পর্কে কিছুই আচ করতে পারলাম না।
সব বন্ধুদের খাওয়া-দাওয়া ভাড়ার খরচ চালিয়ে পকেট তখন মরুভুমি। তাও সব যদি বাস্তব হতো তাহলে দুঃখ ছিল না। আসলে বাস্তব বড়ই নির্মম।
কিছুদিন পর গোমর ফাক হয়। তখন জানতে পারি আমি যে মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলতাম আসলে সে মেয়ে ছিল না।
আমার বন্ধুর এক বড় ভাই মেয়ে সেজে কথা বলতো। শুধু তাই না আমি যে মেয়ের সাথে দেখা করেছিলাম সে মেয়েটি ছিল ঐ বড় ভাইয়ের কলেজ ফ্রেন্ড। অথচ আমি ছিলাম তখন নবম শ্রেনীর ছাত্র।
এরপরের কথা বুঝতেই পারছেন। সব বন্ধুদের চাপা হাসি ঠাট্টা বিদ্রুপ সহ্য করতে করতে আমার জান শেষ।
আর আমার সেই ফায়দা লুটকারি বন্ধু যার চক্রান্তে এত কিছু সেই বন্ধু যখনই এই কাহিনী অন্যদের মাঝে বর্ননা করে হাসতে হাসতে সে মাটিতে গড়াগড়ি করে। যেন আমি জীবন্ত দিলদার চরিত্র।
এ কাহিনী বেশ আগের। আমি এখন HSC পরীক্ষার্থী। ঐ ঘটনার পর থেকে আমি এতই সতর্ক হয়ে গিয়েছিলাম যে এখন পর্যন্ত আর কোন মেয়ে বন্ধু খোজার আশাও করিনি।
যদি এবারও আগের মতো হয়................................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।