অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট হচ্ছে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে কল্পনার শিল্পিত রূপ। নিখুঁত প্রকাশের এই ব্যতিক্রম সামান্য, আংশিক বা পুরোপুরি হতে পারে। এমনকি স্পষ্ট প্রকাশও অস্পষ্ট বা অ্যাবস্ট্রাক্ট হতে পারে, কারণ নিখুঁত প্রকাশও গোলকধাঁধা হতে পারে। আজকাল অনেকরকম অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট প্রচলিত আছে: জিওম্যাট্রিক অ্যাবস্ট্রাকশন, পার্শিয়াল অ্যাবস্ট্রাকশন (ফিগারেটিভ ও রিপ্রেজেনট্যাশনাল আর্টে পাওয়া যায়), লিরিক্যাল অ্যাবস্ট্রাকশন, কিউবিজম.....
ধুরর... এইসব আর্ট বা শিল্প হইল কেমনে? এর থেকে হাজার বছর আগে আঁকা গুহার দেয়ালের বাইসনের ছবি আমার কাছে বেশি শিল্পিত মনে হয়। অনেকটা আমাদের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের আঁকা 'বিদ্রোহ' ছবিটার ষাঁড়ের মত।
আপনাদের কেউ কেউতো বলবেন, ওগুলো আধা-বানর, আধা-মানব কিছু পশু জাতীয় মানুষের আঁকা। আপনার কাগজ বা কাঠের উপর আঁকা ছবি কয়শো বছর টিকবে বলেনতো দেখি। উনারা পাথরের দেয়ালে আঁকছিলেন বলেইতো এখন আপনারা হাজার বছর পরে উনাদের ছবি দেখে উনাদের জংগল বলতে পারছেন। উনাদের রংয়ের কম্পাউন্ড দেখছেন? হলুদ বেঁটে হলুদ রং, লাল ফুল ডলে লাল রং -- জ্বী না। উনাদের রং এমনি জটিল যৌগ, কেমিষ্ট্রির পোলাপানরে ল্যাবরেটরীতে কষ্ট কইরা বানাইতে হয়।
বুঝি না, উনারা গুহার দেয়ালে আঁকছিলেন বলেই উনাদের গুহাতে পশুর মত থাকতে হবে? আমাদের আর্টিস্ট ভাইয়েরা যে রাস্তায় ও টয়লেটের দেয়ালে ছবি আঁকে, উনারা কি রাস্তায় ও টয়লেটে থাকে?
আচ্ছা, অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট বাদ দেন। আমাদের কিছু বিখ্যাত শিল্পীর আঁকা ছবির কথা আলোচনা করি, গুয়ার্নিকা দেইখা আমার প্রথম কি মনে হইছিল, তা এখন আর আমার মনে নাই। তবে পরীক্ষার খাতায় লেখার জন্য চোথাবাজি রেডি আছে। স্প্যানিশ বিপ্লবের সময় গণহত্যা, ধর্ষণ ... সালভাদর ডালির আঁকা 'ফ্ল্যামিং জিরাফ' আর গুহার দেয়ালের নাম না জানা শিল্পীর আঁকা জিরাফের ছবির মাঝে আমি কোন পার্থক্য করি না। শিল্পীরাতো শিল্পীই।
তাদের মাঝে কম-বেশী করা আমার পক্ষে একটু বেশিই হয়ে যায়। তবে সালভাদর ডালির 'এক্সপ্লোডিং ক্লক' ছবিটা সেইরকম - একটা ঘড়ি ভাইঙা-চুইরা, কাইত হইয়া বাইকা ফাইটা যাইতাছে। সেইরকম!
আচ্ছা, ভবিষ্যতের লোকেরা যদি ডারউইনের বিবর্তনবাদের মত চিন্তা করে, তাহলে আমাদের বিখ্যাত পেইন্টারদের ছবি দেখে কি ভাবত? ক্লদ মনেতের ল্যান্ডস্ক্যাপ দেখে ভাবত, কল-কারখানার উন্নতি তেমন হয়নি, কৃষিকাজই এখনো মানুষের জীবনের প্রধান কাজ। (আমাদের স্কুলে আঁকা ধান কাঁটা, গ্রাম্য-মেলা, মাছ ধরা, গ্রামের ছবি দেখে আমাদের কি ভাবতো বলুন দেখি) হয়ত ওয়াসিলি কান্ডিস্কির অ্যাবস্ট্রাক্ট ছবি দেখে ভাবত, মানুষ এখনো লিখতে-পড়তে পারে না, বিভিন্ন রকম হিজিবিজি দিয়ে যোগাযোগ করে।
হুদাই ডারউইনরে পাবলিক এতো পাত্তা দেয়।
ও তার বিখ্যাত বইতে বলছিল, ভালুক পানিতে মাছ ধরতে ধরতে বিবর্তনের ফলে তিমি হয়ে গেছিলো (Charles Darwin, The Origin of Species: A Facsimile of the First Edition, Harvard University Press, 1964, p. 184.) ব্যাটা রামছাগল!
নাহ্, মানুষ কখনোই অর্ধেক বানর - অর্ধেক মানুষ ছিল না। অন্তত, আজকের দিনের থেকে বেশি পশু কখনোই ছিল না। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষের ছিল আজকের মত বুদ্ধিমত্তা, সৌন্দর্যবোধ ও অন্যান্য মানবীয় গুণাবলী। মানুষ যে সৃষ্টির সেরা জীব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।