আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চরিত্রের আসল ভিত্তি গড়ে উঠে ছাত্রজীবন থেকেই

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে.

এই কথাটা আপনারা কতটুকু বিশ্বাস করবেন তা জানি না তবে এটা সত্যি, যে একটা মানুষের চারিত্রীক যত গুণাবলী আছে তা গড়ে ওঠে সেই ছোটবেলা থেকেই। শুধু পড়াশুনা করলেই যে জগৎ জয় করা হয়ে গেল তা কিন্তু না। এর সাথে জরুরি একটা মানুষের চারিত্রিক গুনাবলী যা তার মানসিক ভিত্তিটাকে মজবুত করে। এরকম ও দেখা যায় যে উচ্চ ডিগ্রীধারী কোন ব্যক্তির আচার আচরণ, চারিত্রীক গুনাবলী ভাল না। এতে সে যতই পড়াশুনার জন্য সম্মানী লোক হয়ে থাকুক না কেন, তার এই সব নেগেটিভিটির কারণে সে কখনই মানুষ জনের কদর পান না।

দিন কে দিন এখন মানুষের মধ্যে এইসব গুনাবলী হ্রাশ পেতে শুরু করেছে। যা যার মত আচরণ করছে। শোধরানোর যেন কেউ নেই। আর এরই কারণে সমাজে তৈরি হচ্ছে অস্থিরতা। যারা এর সম্মুখীন হচ্ছেন তারা বিব্রতবোধ করছেন।

যুগ যুগ ধরে চলে আসা সামাজিক রীতিনীতি কে পায়ে মাড়িয়ে দিয়ে নতুন এর আহবানে সারা দিয়ে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু একবার ও ভেবে দেখছি না যে এটা আমাদের জন্য ভাল ফল বয়ে আনবে কি না। বা আমরা আমাদের সন্তান দের সর্ব শিক্ষায়ন শিক্ষীত করে তুলতে পারছি না। এখন যাদের সন্তান স্কুলে পড়ছে তাদের দিকে একটু ভাল মত খেয়াল করে দেখলেই বুঝবেন তাদের সীমাবদ্ধতার ব্যাপারটা। আগে যেমন দেখা যেত কারো সাথে দেখা হলেই আমরা সালাম দিতাম কিংবা কুশোলাদি বিনিময় করতাম।

কিন্তু এখন এর চল বলতে গেলে উঠেই যাচ্ছে। বিন্ধু মাত্র সৌজন্যবোধটা তারা হাড়িয়ে ফেলছে। আমি এটা সবার ক্ষেত্রে বলছি না তবে এখন এসব বেশি দেখা যায়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সবার সামনে সিগারেট খাওয়াটা এখন তারা দোষের কিছু মনে করা হয় না। বা স্কুল কলেজ ফাকি দিয়ে ইদানিং সিনেমা দেখতে যাওয়া টাকে তারা নরমাল মনে করে।

আর তারা আড়ালে আবডালে কোথায় কি করছে না করছে এসব আমাদের অজানা হলেও তাদের কাছে অজানা নয়। এসব এর জন্য আসলে দায়ী কে? আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন প্রায়ই আমাদের একটা কথা বলা হত আর তা হল ভাল ছেলেদের সাথে মিশবা। খারাপ কিছু করবা না। এখন এসব ছোট খাটো বিষয় গুলো আছে কি না আমার জানা নেই তবে থাকলেও ঠিক মত আছে কি না তা সন্দেহ। আর যদি থেকেও থাকে তাহলেও আমার মনে হয় না এখনকার জেনারেশন এর পোলাপাইন সে গুলা মেনে চলে।

আর যদি মেনেই চলতো তাহলে সমাজে এতই অস্থিরতা বিরাজ করত না। তারা এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আর কান দিয়ে হয়ত বের করে দেয়। ইদানিং এও দেখা যায় যেসন বাচ্চা কাচ্চা কে শাষন বেশি করা হয় তারা চরম বিল্লা পোলাপাইন হয়ে যায়। আবার শাষন না করলেও সমস্যা যায় না। তখন তারা কাউকে মানে না।

এমন কি বাবা আর মাকে তো নাই। সেই বাচ্চা আরো যখন বড় হয় তখন বাবা মা কে গালি দিতেও কুন্ঠাবোধ করে না। গায়ে হাত তুলতেও তাদের কোন সমস্যা নাই। এই সব ডিজুস ছেলে পেলেরা এক সময় বড় হবে এবং তখন আরো ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে এটা বলাই যায়। আর স্কুল এ পড়া অবস্থাতেই এখন তাদের হাতে মোবাইল চলে এসেছে।

একটা ছোট ঘটনা বলে লেখাটা শেষ করতে চাই। এই ১ দিন আগেই বারিধারা যাবো বলে বাস কাউন্টারে দাঁড়িয়ে ছিলাম। যেখান থেকে বাস উঠেছিলাম সেইখান থেকেই পিছন এর দরজা দিয়ে কলেজ এর কিছু ছেলে ও উঠেছিল। তারা কেউ কেউ বাস এ সিট পেয়েছিল আর কেউ কেউ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। যারা দাঁড়িয়ে ছিল তাদের যন্ত্রনায় তখন পুরো বাস এর যাত্রীরা বিব্রতবোধ করছিল কিন্তু তাদের সে দিকে কোন খেয়াল নাই।

তারা পিছনের দরজা তে দাঁড়িয়ে উচ্চ স্বরে কোন কারণ ছাড়াই চিল্লাপাল্লা করা, গালিগালাজ করা অনবরত, বাস এর হেল্পারি করা, পুলিশ এর সাথে ফাজলামী করা এসব চালায় যাচ্ছিল। আবার শুনলাম মোবাইলে কোন একজনের বন্ধু ফোন দিয়ে জানাল কোন এক কলেজ এর ছেলেরা তাদের কলেজ এ এসে কাকে যেন মাইর দিয়েছে। এরকম পরিবেশ বাস এ চলেছিল প্রায় ১ ঘন্টার মত। তারা তাদের কলেজ এর যে নাম বলেছিল তা শুনে আমি তখন লজ্জিত হচ্ছিলাম বার বার। আমরা যখন পড়েছিলাম তখন তো এমন ছিল না; আমার তখন বার বার শুধু এই কথাটাই মনে হচ্ছিল।

কোন পথে আমরা যাচ্ছি আর এই পরিনতি যে কি হবে তা এখন ভাবলেই গা শিয়রে উঠে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.