আমি নতুন কিছু পড়তে ভালবাসি
যারা যাকাত দিবে ঃ
সালাত ফরজ হবার জন্যে যেমন কিছু শর্ত আছে, তেমনি যাকাত ফরজ হবার জন্যেও কিছু শর্ত আছে। শরীয়াহ বিশেষজ্ঞদের মতে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিরই উপর যাকাত ফরজ, যাদের মধ্যে নিম্নোক্ত শর্তাবলী পাওয়া যায়-১.মুসলিম ২. স্বাধীন ৩. আকেল হওয়া ৪. বালেগ হওয়া ৫. নিসাব পরিমান সম্পদ থাকা ৬. পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকা ৭. এক বছর অতিবাহিত হওয়া।
যারা যাকাত পাবে ঃ
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাকাত কাদের প্রাপ্ত অর্থাৎ কাদের মধ্যে যাকাতের অর্থ বন্টন করে দিতে হবে সে সম্পর্কে সু-স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন-"এসব সদাকাতো (যাকাত) কেবল নিস্ব, অভাবগ্রস্থ ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, ঋণ ভারাক্রান্তদের, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর বিধান।
আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। " সূরা তাওবা-৬০
উপরের আয়াত হতে আটটি উদ্দেশ্যে যাকাতের অর্থ ব্যবহারের জন্যে সু-স্পষ্টভাবে নির্দেশ পাওয়া যায়।
সেগুলি হচ্ছে-
১. দরিদ্র্য জনসাধারণ
২. অভাবী ব্যক্তি
৩. যে সকল ব্যক্তি/কর্মচারী যাকাত আদায়ে নিযুক্ত রয়েছেন
৪. নও মুসলিম
৫. ক্রীতদাস বা গোলাম মুক্তি
৬. ঋণগ্রস্থ ব্যক্তি
৭. আল্লাহর পথে মুজাহীদ এবং
৮. মুসাফির।
এই আটখাতের মধ্যে ছয়টাই দারিদ্র্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্য দুটি খাতও (৩,৭) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা যাকাত আদায় ও ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন ও শ্রমসাপেক্ষ কাজ। এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের এটাই সার্বক্ষনিক দায়িত্ব। সুতরাং তাদের বেতন এই উৎস থেকেই দেওয়া বাঞ্ছনিয়।
তাছাড়া যে সব ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রামে লিপ্ত তারাও অন্যকোনভাবে জীবিকা অর্জনের সুযোগ হতে বঞ্চিত। সুতরাং উপরে বর্ণিত আটটি খাতেই যদি যাকাতের অর্থ ব্যয় হয় তাহলে দরিদ্র্যতা দূর হবে।
বাংলাদেশে দারিদ্র্যের চিত্র ঃ
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠির প্রায় ৫০% লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৪ অনুযায়ী দেখা যায় জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্যের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৪৯.৮ শতাংশ। শহর অঞ্চলে এর পরিমান ৩৬.৬ শতাংশ হলেও পল্লী এলাকায় এর পরিমান ৫১.১ শতাংশ।
এই ভয়াবহ দারিদ্র্য বিমোচনের জন্যে সরকারের গৃহীত সাধারণ কর্মসূচী যেমন কোনক্রমেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে না, তেমনি একাজ বিদেশী সাহায্যপুষ্ট এনজিওদের উপরও ফেলে রাখা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি।
বাংলাদেশে যাকাতের চিত্র ঃ
আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় বাংলাদেশের মত একটি দরিদ্র্য দেশে তেমন কিই বা যাকাত আদায় হতে পারে। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার তার সম্পূর্ণ বিপরিত।
বেসরকারী এক হিসাবমতে দেখা গেছে বাংলাদেশে ১০,০০০এর ও বেশি কোটিপতি বাস করেন, এ দেশে আছে অনেক অনেক ব্যাংক ও বীমা কোম্পানী, অন্যান্য কোম্পানী, তাছাড়া গ্রাম ও শহরে আরও অনেক ব্যক্তি আছেন যারা সাহেবে নিসাব।
বাংলাদেশে সবধরনের উৎস মিলিয়ে প্রতি বছর "বার হাজার" কোটি টাকারও বেশী যাকাত আদায় হওয়া খুবই সম্ভব। যা দিয়ে দারিদ্র্য দূর করা খুব সহজেই সম্ভব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।