সাধারণ মানুষ যার জানার কিছু ইচ্ছা আছে।
শ্বেত প্রদর। (Leucorrhoea)
প্রদর নারিদের একটি বিশ্রী স্ত্রীরোগ। জরায়ু থেকে সাদা ,হলদে এক প্রকার দুধের মত এক প্রকার তরল স্রাব র্নিগত হয়। আর উহাকে প্রদর স্রাব বা লিউকোরিয়া বলে।
এই স্রাব যদি সাদা হয় তবে তাকে সাদা স্রাব বা শ্বেত প্রদর বলে। গন্ডমালা ধাতু গ্রস্ত অল্প বয়স্ক বালিকদের অনেক সময় এই রোগ হয়ে থাকে।
কারণঃ-
এই জাতীয় রোগ সাধারণত মণিলিয়্যাল বা ট্রিপানোস নামক জীবানু দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। তাছাড়া জীবন যাপনের ক্ষেত্রে অপরিস্কার অপরিচ্ছন্নতা,উপযুক্ত পরিবেশের অভাব এর কারনে ইহা দেখা দিতে পারে। কোন কোন সময় জনন যন্ত্রে জীবানুর সংক্রামন দ্বারা এই রোগ হতে পারে।
গনরিয়া বা সিফিলিস থেকেও ইহা হতে পারে। যোনি বা জরায়ু প্রাচীর প্রদাহ হতেপারে। এছারা বার বার গর্ভপাত ইহার একটি প্রধান কারন । হৃদপিন্ড বা ফুসফুসের কোন পিড়ায় যথারীতি রক্তসঞ্চালন ক্রয়ার ব্যাঘাত হলে ,পুরাতন কোষ্ঠ কাঠিন্য,অত্যাধিক রতিক্রিয়া,হস্ত মৈথন,জরায়ুতে পেশারী প্রয়োগ ,স্বাস্থের অবনতি,দূর্বলতা,রক্তহীনতা,জরায়ু স্থানচ্যুতি, অনিয়মিত ঋতুস্রাব ইত্যাদি কারনে এই প্রদর স্রাব দেখা দিতে পারে। ক্লোরোসিস,স্কুফুলা টিউবারকউলোসিস প্রভৃতি কারনে হতে এই প্রদর রোগটির লক্ষন প্রকাশ পেতেপারে।
অতিরিক্ত ক্ষুদ্র,ক্ষুদ্র কৃমির জন্য ছোট ছোট বালিকাদের শ্বত প্রদর হতে পারে।
লক্ষনঃ-
এই রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে কত গুলি লক্ষন প্রকাশ পায়।
প্রথাবস্থা থেকেই এই রোগের চিকিয়ৎসা করা অতি জরুরী। তা না হলে ধীরে ধীরে জরায়ু থেকে অধিক পরিমানে পুজের ন্যায় স্রাব নিসৃত হয় এবং এর কারনে যোনির অভ্যন্তরে ও মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এই জাতীয় রোগীর কোষ্ঠ কাঠিন্য,মাথা ধরা ,পেট ফাপা ,পরিপাক ক্রিয়ার গোলযোগ এবং মুখ মন্ডলে রক্তহীনতার ভাব দেখা দেয়।
জরায়ু গ্রীবার অভ্যন্তরে এবং যোনিপথে যে আবরক ঝিল্লী আছে তাহতে সুস্থাবস্থায় অতি অল্প পরিমান লালার ন্যায এক প্রকার শ্লেষ্মা র্নিগত হয়। জরায়ু গ্রীবা ও যোনি পথের অস্বাভাবিক শুস্কতা নিবারন করাই ইহার প্রধান কারন। বালিকাদের যৌবনাগমনের কালে অথবা যে কোন রমনীর অন্তসত্ত্বাবস্থায় এবং কোন কোন রমনীর প্রত্যেক ঋতুর ঠিক পূর্বে এই শ্লেষ্মার পরিমান কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে কিন্তু সেই অবস্থায় ইহাকে প্রদর বলা হয়না। যদি কোন কারন বশত এই শ্লেষ্মার মাত্রা বৃদ্ধি পায় তবেই তা প্রদর লক্ষন। জরায়ু হতে সাদা সাদা স্রাব বের হতে থাকে,তা কখনো ঋতু বন্ধ হবার পর সাদা স্রাব ক্রমাগত চলতে থাকে এবং তার সাথে দু-চার ফোটা লালচে স্রাব বের হতে পারে।
যদি ক্ষতের সৃষ্টি হয় তবে যোনি চুল কাতে পারে। এর সাথে পেটের গোলযোগ ও অল্ম ভাব দেখাদিতে পারে। মাথা ধরা,মাথার যন্ত্রনা,মাথার ব্যাথা ইত্যাদি থাকে। উদারাময় ও কোষ্ঠ কাঠিন্য পর্যায় ক্রমে দেখা দেয়,শরীর খুব রোগা এবং শুকিয়ে কৃশ হয়। অনেক সময় রোগী মোটা হতে পারে।
কোন কোন ক্ষেত্রে স্রাবে যোনিদার হেজেযায়,ঘা হয়,জ্বালা পোড়া করে এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি লাভ করে পুরাতন বা ক্রনিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। আর এই অবস্থায় রোগী দীর্ঘদিন কষ্ট ভোগ করে। স্রাব প্রথেমে তরল,স্বচ্ছ ওআঠার মত চট চটে থাকে,কাপড়ে সাদা দাগ পড়ে এবংধীরে ধীরে ঘন পুজের আকির ধারন করে।
সামান্য ক্ষত হতে প্রচুর পরিমানে রক্তপাত হতে পারে;স্রাব ক্ষতকর;জ্বলাকর এবং দূর্গন্ধযুক্ত এবং এমন কি ক্যানসার হতে পারে। স্রাব দড়ির ন্যায় লম্বা লম্বা হতে পারে ।
হতে পারে চুলকানি যুক্ত ,সবুজাভ স্রাব, তাছাড়া কোমর ভিষন ব্যাথা করতে পারে।
পথ্য ও সেবাযত্নঃ-
১)রোগীকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
২)অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে।
৩)প্রত্যহ গোসল দেওয়া,দিনে তিনচার বার পিচকারী দ্বারা ঠান্ডা পানিতে ইন্দিয় ধৌত করলে উপকার পাওয়া যায় কিন্তু গর্ভাবস্থায় পিচকারী ব্যবহার ক্ষতিকর।
৪)অতিরিক্ত প্ররিশ্রম,স্বামী সহবাস,মানষিক উত্তজনা প্রভৃতি পরিত্যাগ করতে হবে।
৫)এই জাতীয় রোগীর খাদ্য পানিওর প্রতি বিশেষ লক্ষ দিতে হবে।
৬)গরম মসলা ও বেশী উত্তজক দ্রব্য আহার একদম নিষেধ।
৭)পুষ্টিকর ও সহজ খাদ্য গ্রহন করতে হবে ও কোন রকম অনিয়ম করা যাবে না ।
৮)শরীর ঠিকরাখার জন্য পালনিয় বিধিবিধানের দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
৯)শ্লেষ্মাযুক্ত পুজ স্রাব সাধারণতঃপীতাভ এবং উহাতে পুজের ভাগ বেশী থাকে বলে উহা একখানি সরের ন্যায় দেখা যায়।
জরায়ু গ্রীবা নালী পথ Cervical canal আক্রন্ত হলে উক্ত পরিস্কার স্বচ্ছ শ্লেষ্মা টক অস্বচ্ছ পদার্থ সহ মিশ্রত হয়ে সুত্রকারে বা রজবৎ র্নিগত হতে থাকে আবার কখনো কখনো রক্ত সহ র্নিগত হতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।