মানুষ আসে মানুষ যায় কিন্তু সময় যায় চিরতরে
সেদিন চৈত্রের আগুন ঝরা খরতাপ দুপুর-
ফসল শুন্য ফাঁকা মাঠ-ধু ধু বালুচর,জল শুন্য নদী
পোড়ামাটির গন্ধে ভরা রুক্ষ বাতাস বইছিলো নীরবে,
তৃষ্ণার্ত পাখিরা গাছের ডালা ছেড়ে উড়ে গেছে কোথায় কে জানে?
কৃষানের গরুগূলো ঘাসের আকালে চরছিলো আনমনে।
তীব্র তাপদাহে প্রানীকুল অতিষ্ঠ চারিধারে-তবু দেখা নেই
একফোটা মেঘ নেই বৃষ্টি নেই যেনো পুড়ে গেছে সমস্ত সভ্যতা
মানুষের গায়ের চামড়া ভ্যাপ্সা গরমে বিবর্ন তামাটে-
অবিরত ঘামঝরা শ্রমিকের উন্মুক্ত শরীরে ঘামাচির প্রাদুর্ভাব।
তুমি বসে ছিলে বকুলের তলে, রোদে পোড়া দুর্বার গালিচায়-
তালপাখাটা মৃদু দোলায়ে বাতাসের কোমল পরশ পেতে
অনেকটাই কষরত করছিলে তুমি-তপ্ত শরীরটা জুড়াতে।
কাঠফাটা রোদে ধুলা বালু মেখে একপায়ে চলা মেঠো পথ ধরে,
আমি এসেছিলাম অনেকটা দুরদেশ থেকে তোমার প্রেমের টানে।
তুমি এতোটাই আনমনা ছিলে-বুঝতেই পারনি আমি কখন নীরবে
তোমার অতি নিকটে,ঠিক পিছনে এসে দাঁড়িয়ে ছিলাম-
এতোটাই কাছে যে,তোমার নিশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছিলো।
হঠাৎ তোমার নাম ধরে ডাকতেই তুমি চমকে উঠেছিলে!
যেনো অশরীরি কোনো প্রেতাত্মা দেখার মত-উফফ শব্দ করে
অনেকটা সময় লেগেছিলো স্বাভাবিক হতে-ভয় আড়ষ্ঠতা কাটাতে
তারপর-তুমি কাঁদলে,মনে হল চৈত্রের দুপুরে দু-ফোটা বৃষ্টি ঝরে গেলো
অশ্রু হয়ে তোমার নয়নযুগলে!!আমি দাঁড়িয়ে রইলাম অপরাধীর মত।
সেবার দশ বছর পর দেখা হলো-তুমি চলে যাবার পরে।
আমি আসতে চাইনি-তোমার অনেক অনুরোধে আসতে হলো
তোমার সংসার-সন্তান আর সুখের ভুবন দেখব বলে। তবু-
যে দুটো দিন ছিলাম তোমার রাজত্বে সেইতো ছিলো আমার শ্রেষ্ঠ সময়!
হারাবার যত গ্লানি কষ্ট আর হাহাকার-কিছুটা হলেও লাঘব হলো
তোমার পতি দেবতার আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ হলাম।
তারচে বেশী পাওয়া তোমার চোখের দু-ফোটা জল
আমার বাকি জীবনের পাথেয় হয়ে রইলো।
আমি ফিরে এলাম-
আমার হারানো প্রেম,ব্যাথার পাহাড় দূরে ফেলে দিয়ে-
তোমার সুখের স্বপ্ন হৃদয়ে গেঁথে,আমি চিরতরে নিস্ব হলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।