আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুড়িয়ে পাওয়া শাক : ৬: উষনি শাক/ ওজোন শাক/ কালানাগুনি/ উখলি পাতা/ দুরুখ বাকু

Someone become successful and someone not but man loves and will love
স্থানীয় নাম : বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় এই কুড়িয়ে পাওয়া শাকটির তেমন কোনো একক নাম নেই যে নামে সবাই একে চিনতে পারে। দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয়দের ভেতর এই শাকটি উষনি শাক নামে পরিচিত। ময়মনসিংহের হাজং আদিবাসীরা এই শাকটিকে কালানাগুনি, উখলিপাতা নামে ডাকেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের ভেতর অতি প্রিয় এই শাক ওজোন শাক নামে পরিচিত। মৌলভীবাজারের ওঁরাও আদিবাসীদের ভেতর শাকটি দুরুখ বাকু নামে পরিচিত।

বৈজ্ঞানিক নাম: Spilanthes acmella L. উদ্ভিদ পরিবার: Asteraceae ব্যবহার: মূলত: পাতা শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কোথায় পাওয়া যায় : উষনি শাক বাড়ীর আশে পাশের পতিত জায়গায়, বাঁশ ঝাড়ের আশেপাশে, স্যাঁতস্যাতে জায়গায়, কলার বাগানের ঝোপ ঝাড়ে পাওয়া যায়। পাহাড়ি এলাকায় জুমের জমিতে এই শাক বেশী দেখা যায়। যেখানে জন্মে সেখানেই বিস্তৃতি দেখা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই শাকের বিভিন্ন নাম আছে।

দেখতে কেমন : Asteraceae পরিবারভূক্ত সপুষ্পক এই উদ্ভিদের এক ধরনের ঝাঁঝালো গন্ধ বের হয়। এই শাক মাটি থেকে বারো আঙ্গুল প্রস্হ হয়। এর পাতার রং সবুজ যা আকৃতিতে চিকন লম্বাটে হয়ে থাকে। এর ফুলের রং হলুদ যা আকারে খুব ছোট ছোট হয়। ফুল থেকে খয়েরী রংয়ের দানা দানা বীজ হয়।

উষনি শাক কিছুটা ঝাঁঝালো স্বাদের হয়। বর্ষাকালে গাছের আকার বেশ বড়সড় হয় এবং পাতায় ঝাঁঝালো গন্ধ ও স্বাদ কম থাকে। শীতকালে গাছের আকার ছোট ও চিকন হয়ে যায় এবং শীতকালে ডালপালা অনেক চিকন হয়ে যায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে এমনিতেই জন্মানো এই শাক চাষ করার কোনো ঘটনা জানা যায় না। সাধারনত: বীজের মাধ্যমেই প্রাকৃতিকভাবে এর অংকুরোদগম ঘটে।

কখন পাওয়া যায় : প্রায় সারা বছরই দেখা যায়। পাহাড়ি এলাকায় জুমে ফসল বোনার পর পরই কচি চারা গুলো গজিয়ে উঠে এবং কচি শাক খেতে ভাল। কিভাবে খাওয়া যায় : শাক তোলার পর তাজা শাক ভাল করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এই শাক অন্যান্য শাকের মত তেল, মরিচ, পেয়াজ, লবন দিয়ে ভেজে খাওয়া হয়। এলাকাভেদে রান্নায় হলুদ-মরিচ বা অন্য মশলা স্বাদ মতো মেশানো যেতে পারে।

চাকমা আদিবাসীরা নাপ্পি নামের একধরনের শুঁটকি দিয়ে রান্না করে এই শাক খেয়ে থাকেন। উপকারিতা : সাধারনত শরীরে বিষ ব্যাথা হলে এই শাক খেলে উপকার পাওয়া যায়। এই শাক আতুঁর ঘরে সন্তান প্রসবের পরে মাকে খাওয়ানো হয় শরীরের ব্যাথা কমানোর জন্য। দাঁত ব্যাথা সারাতে এই শাকের ফুলের রস ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য : এই শাক ঝাঁঝালো স্বাদ বলে অনেক এলাকাতেই অন্য শাকের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়।

গ্রামীণ পর্যায়ে এই শাক মূলত নারী ও শিশুরাই সংগ্রহ করে থাকে। গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য এই শাক যেমন পরিবারের খাদ্য চাহিদা মেটায় একইভাবে তা পুষ্টি চাহিদাও দূর করে। সতর্কতা : • শাক তোলার পর বেশী সময় রাখা যায় না, তাজা থাকতে থাকতে রান্না করে ফেলতে হয়। • যেসব জমিতে রাসায়নিক সার এবং রাসায়নিক কীটনাশক দেয়া হয় সেসব জমির শাক না খাওয়াই ভাল। • রান্নার আগে শাক ভাল করে ধুয়ে নেয়া দরকার।

• শাক তোলার ক্ষেত্রে অবশ্যই এর বংশ যাতে একবারেই শেষ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। • ফুল আসার পর শাক রান্না করলে ঝাঁঝালো স্বাদ বেশী থাকে বলে তা কচি অবস্থায়ই খাওয়া ভাল। ======================================== কুড়িয়ে পাওয়া শাক : ১ শুষনি/শুনশুনি/আবুল ঘাস/ শুশুনি/শুনশুনিয়া শাক Click This Link কুড়িয়ে পাওয়া শাক : ২ = শ্বেতদ্রোণ/ দন্ডকলস/দল কলস/ ধুবরি/ দোর কলস/ কান শিশা/ কাউন শিশা/ ধুরপ/ দুলফি শাক : Click This Link কুড়িয়ে পাওয়া শাক : ৩ = মালঞ্চ শাক / শান্তি শাক Click This Link কুড়িয়ে পাওয়া শাক : ৪ -তেলাকুচা/ কুন্দ্রি শাক Click This Link কুড়িয়ে পাওয়া শাক : ৫ -তেলাকুচা/ কুন্দ্রি শাক Click This Link ----------------------------------------------------------------------------- তথ্যসূত্র : দিনাজপুর, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, ময়মনসিংহ এলাকার গ্রামীণ নারী এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম। United Nations Development Programme ----------------------------------------------------------------------------- ========================================== উৎসর্গ: সানজানা হক লিলি রুপালী ভবন ৬৭৬, হালিশহর রোড বড়পোল, আগ্রাবাদ চট্টগ্রাম। ===========================================
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।