অন্তহীন আমাদের পথচলা,জীবনের বাঁকে-বাঁকে গতির পরিবর্তন। আর চাওয়া - পাওয়ার অসম সমীকরণ। এই নিয়েই আমাদের জীবন
সিলেটে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ জানানোয় লাঞ্ছিত বাবা মুজিবুর রহমান হাব্বানের খোঁজ মেলেনি দুই মাসেও। মেয়ের মাদ্রাসায় যাওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে। বখাটেদের উৎপাত ও হুমকি আরো বেড়ে গেছে।
হাব্বানের মেয়ে তাসলিমা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ওরা এখন এমনভাবে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করছে, যা কারো কাছে বলার মতো নয়। ফলে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। '
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলাম ইউনিয়নের ডুংশ্রী গ্রামে দিনমজুর মুজিবুর রহমান হাব্বান তাঁর মাদ্রাসাপড়ুয়া মেয়ে তাসলিমা বেগমকে উত্ত্যক্ত করার বিচার চান মাতব্বরদের কাছে। এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর গলায় জুতার মালা পরিয়ে এলাকায় ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ায় বখাটেরা। এ ঘটনার পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এ ঘটনায় হাব্বানের স্ত্রী হাওয়ারুন নেছা দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। পুলিশ বলছে, আসামিরা সব পলাতক। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছে, আসামিরা নিজ বাড়িতেই থাকে। প্রকাশ্যেই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণ সুরমা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোবাশ্বির বলেন, 'আমরা খবর পেয়ে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে তো তাদের পাচ্ছি না। তারা পালিয়ে যাচ্ছে। '
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ মামলাটি গুরত্বের সঙ্গে দেখছে না। তারা বখাটেদের পক্ষে কাজ করছে।
জানা যায়, মুজিবুর রহমান হাব্বানের মেয়ে তাসলিমা বেগম স্থানীয় জালালপুর কামিল মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার সময় গ্রামের কিছু বখাটে প্রায়ই তাঁকে উত্ত্যক্ত করত। হাব্বান এর প্রতিকার চেয়ে গ্রামের মাতব্বরদের শরণাপন্ন হন।
তাসলিমার পরিবারের অভিযোগ, সমাজপতিদের কাছে বিচারপ্রার্থী হওয়ার পর একটি সাধারণ ঘটনাকে অসাধারণ করে বিচারের নামে উল্টো তাঁদের ওপর শাস্তির খড়গ নামিয়ে দেয়। তাসলিমার মা হাওয়ারুন নেছা বলেন, গত জুনে তাসলিমা একদিন স্থানীয় এক ছেলের মোটরসাইকেলে চড়ে। গ্রামের পঞ্চায়েতরা এ ঘটনাকে অপরাধ হিসবে চিহ্নিত করে।
বাবা হাব্বান ও মা হাওয়ারুন ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। এরপরও তাঁদের বিরুদ্ধে সালিস ডাকা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সালিসে সমাজপতিরা মেয়ের অপরাধের জন্য বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাদা স্ট্যাম্পে সই দেওয়ার কথা বলেন। হাব্বান তাতে সম্মত হননি। এরপর সমাজপতিরা ঘোষণা দেন, হাব্বান মিয়া যখন আমাদের সিদ্ধান্ত শোনেনি, তাঁকে যেখানে পাওয়া যাবে ধরে মসজিদে নিয়ে আসবে এবং তাঁর গলায় জুতোর মালা পরানো হবে।
এরপর বখাটেরা ৭০ বছর বয়সী হাব্বানের গলায় জুতার মালা পরায়, বেত্রাঘাত করে।
এ ঘটনায় হাব্বানের স্ত্রী গ্রামের শাহাব উদ্দিন, সাদিক, সালেহ আহমদ সালিক, সাজু, আলামীন, লুৎফুর রহমান, ফয়জুল, নোমান, মুকিত, চেরাগ আলীকে আসামি করে একটি এজাহার দাখিল করেন। পুলিশ সেটাকে অপহরণ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।
এসআই মোবাশ্বির বলেন, 'আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধার। সে প্রক্রিয়া আমরা চালাচ্ছি।
'
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।