আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খুনী এখন বিচারপতি : উত্তপ্ত সুপ্রীমকোর্ট (রিপোষ্ট)



পুলিশ প্রহরায় হাইকোর্ট বিভাগের বিচাপতি হিসেবে বিতর্কিত দুই ব্যক্তি মো: রুহুল কুদ্দুস বাবু ও মো: খসরুজ্জামানকে শপথ পড়িয়েছেন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। মো: রুহুল কুদ্দুস বাবু ১৯৮৮ সালের ১৭ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আবদুল লতিফ হলের শিবির নেতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সম্মানে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্খান অধিকারকারী ছাত্র আসলাম হোসেনকে আসামি রুহুল কুদ্দস বাবুসহ অন্যরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার মামলা আছে। হত্যাকাণ্ডের পর এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নায়েব আলী বাদি হয়ে ১৯৮৮ সালের ১৮ নভেম্বর রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনায় দু’বার পুলিশ তদন্ত ও একবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি তদন্তে আসামি রুহুল কুদ্দুস বাবুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

এ হত্যা মামলা বিচারাধীন থাকাবস্খায় গত ৪ আগস্ট সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি রুহুল কুদ্দুস বাবুসহ নয়জনের নাম হত্যা মামলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির শপথ না পাওয়া বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস বাবুর হত্যা মামলায় প্রত্যাহারের আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিভিশন মামলা খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। মামলার ঘটনায় নিহত আসলাম হোসেনের পিতা মো: জিন্নাত আলীর পক্ষে অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল আবেদন করেন। বর্তমানে এ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ মো: খসরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে।

তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদের মেয়ের জামাতা। ঘটনার পর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ভাঙচুর করা অবস্খায় তার সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। তিনি লাথি মেরে আদালতের দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। অভিযুক্ত দুই বিচারপতিকে শপথ পড়ানোয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রধান বিচারপতির আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ দাবি করেছেন। পাশাপাশি তারা সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতিতে কালো পতাকা উত্তোলন করেন এবং দুই বিচারপতির বেঞ্চ বর্জনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।

আইনজীবীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করে দুই বিচারপতির এজলাসের সামনে অবস্খান নেন এবং তারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে শ্লোগান দেন। ওই সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য বিচারপতিদের শপথস্খল থেকে আইনজীবীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির প্রবেশপথে অবস্খান করে ‘খুনি কেন বিচারপতি, ছিছি লজ্জা লজ্জা; বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করো করতে হবে; বিচার বিভাগে দলীয়করণ বìধ করো করতে হবে’ এসব শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পুলিশের সাথে আইনজীবীদের ধ্বস্তাধস্তি চলতে থাকে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আইনজীবীদের সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন।

শ্লোগানমুখর আইনজীবীদের মধ্য দিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতিরা শপথ কক্ষ জাজেস লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন আইনজীবী ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, খুনের জন্য অভিযুক্ত রুহুল কুদ্দুস বাবুকে শপথ না দিতে আমি শেষ মুহূর্তেও অনুরোধ করছি। হাইকোর্টের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে হবে। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম দুই বিতর্কিত বিচারপতিকে শপথ দেননি। প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপিল বিভাগের দু’জন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে আপনাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছে।

হাইকোর্টের ভাবমূর্তি ক্ষুণí করবেন না। আদালত উত্তপ্ত করবেন না। এখনো বলছি বিতর্কিতদের শপথ পড়াবেন না। তাদের শপথ দেয়া হলে আপনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সুপ্রিম কোর্টকে কলঙ্কিত করবেন না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।