<<মধ্যরাতের হাইওয়ে>>
মিজান স্যার চলে গেছেন , বেশি দিন হয়নি। আমরা তাকে বাচাতে পারিনি, কোন মায়ার বাধনেই তিনি আটকাননি।
স্যার , আপনাকে ভুলে গেছি আমরা। কত দিন মনে রাখব বলুন? কি দায় পড়েছে আপনাকে মনে রাখার? আমরা তো সব স্বর্থপর। আমরাতো প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি।
আমরা এখন নপংসুক এক জাতিতে পরিণত হচ্ছি। আমরা হয়েছি ভীরু-কাপুরূষ। সেই ৫২, ৭১ কিংবা ৯০ এর ছিটেফোটাও আমাদের মাঝে আর অবশিষ্ট নেই।
কেন স্যার নিজের ছাত্রীদের বাচাতে গিয়ে অযথাই প্রাণটা খোয়ালেন ? কেন আমাদেরকে প্রতিবাদ করতে শিখিয়ে গেলেন? এমন দু-একটা মা-বোন প্রতিদিন ধর্ষিতা হলে কিংবা আত্মহত্যা করলে আমাদের কিইবা আসে যায়? কতটুকুই আর ক্ষতি হবে দু-একজন লাঞ্ছিত হলে?? যেখানে ৪০টি বসন্ত পার করে দেয়ার পরও দু-লক্ষ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিচার পেলাম না।
এ এমন এক জায়গা, যেখানে ধর্ষিতার বিচার হয়, ধর্ষকের নয়।
এখানে ধর্ষিতাকে বার বার ধর্ষণ করা হয়, কাগজে-কলমে, আইন-আদালতে, সমাজে , পাড়ায় -মহল্লায়। আর অপরদিকে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় মানুষরুপী কুকুরের বাচ্চাগুলি। এ দেশে ধর্ষণে সেঞ্চুরী করে গর্বে বুক ফুলিয়ে বেড়ানো যায়, রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে পুরস্কৃতও করা হয়।
আপনিতো এসব জানতেন। জানতেন না? তবে কেন গেলেন স্যার ?? কেন ??
"মিজান স্যার এর মা"
স্যার , আপনার মা এখন নির্বাক।
তিনি নির্বাক , কারণ তার ছেলে মিজান তাকে আর কোন দিন "মা" বলে ডাকবে না। তিনি নির্বাক, কেননা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিয়তি তার সাথে এত বড় প্রতারণা করবে, তিনি ঘুণাক্ষরেও কোন দিন ভাবেননি।
সবশেষে একটি কথা বলে যাই স্যার আপনাকে। আপনি আমাকে প্রতিবাদী হওয়ার প্রেরণা দিয়ে গেছেন। শুধু আমাকেই নয়, আমার মত আরও অনেককেই।
আমি বিশ্বাস করতে চাই, যে আগুন আপনি জ্বালিয়ে গেলেন, তা যেন নিভে না যায়।
(মিজান স্যারের মায়ের ছবিটি আমার এক বন্ধুর ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।