আমাদের শহুরে জীবনে পরিবারে এক অপরিহার্য সদস্য, বুয়া। তাকে ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব। বুয়া দুই রকম: ছুটা বুয়া এবং বান্দা/স্হায়ী বুয়া । বুয়া নিয়ে বেশ পোস্ট ও আছে। গত সন্ধ্যায় আমার বাসায় দরজায় ঘন্টা বাজতেই দরজা খুলি।
দেখি, প্রতিবেশী মহিলা। অনেক মাস উনার কোমরে ব্যথায় শয্যাশায়ী ছিলেন। দোয়া করেছি। ইদানীং সুস্হ হয়েছেন, দেখেছি, জানি। দরকার ছাড়া আসেন না।
স্বাগত জানিয়ে আসুন আসুন বলে ঘরে নিয়ে এলাম। বসতে বললাম, বসবেন না। বললেন নীচে গিয়েছিলাম। আমার তো বুয়া নেই। শুনলাম, আপনার বাসার খোঁজখবর, তাই দেখতে এলাম।
(ভাল কথা) জানলাম, আপনার বুয়া নাকি পরিস্কার। আমি বললাম, আমার তো ছুটা বুয়া। ওরা ওদের মতো, ওদের বলে বলে যতটা পারা যায় কাজে সাহায্য নেয়া, এই আর কি। (বুয়ার মোবাইল আছে। দরকার হলে ডেকে নিতে পারি, তবে ডাকি না।
নিজেই চেষ্টা করি যথাসম্ভব সারতে)। বললাম, বসেন, নাস্তা আনি। বললেন না, এখন বাসায় যেয়ে বাচ্চাদের পড়াবো। চলেন রান্নাঘরে যাই দেখি। (আমি সংকুচিত, কি দেখবেন!) যাক, নিয়ে গেলাম।
ওখানে নাস্তা রেডী করে দিলাম। বললেন- একটা বান্দা বুয়ার জন্য কত দিকে লোক লাগিয়েছি। কতজনকে টাকা দিয়েছি। যা বলে তা করছি, কিন্তু পাচ্ছি না। নিজেও এখনো কিছু অসুস্হ।
বাসায় ছোট ছোট দুইটা মেয়ে বাবু। এদের সাথে সময় দিতে হয়। পড়াতে হয়, বাসার কত রকম কাজ!
ভাবলাম, কেন বুয়া চাই-
১। আমরা নিজের কাজ নিজে স ব করতে পারি না। চাই না, অভ্যস্ত না।
বাপের বাড়ী অনেক কাজই করি নাই। অনেক সময় আলস্য লাগে।
২। ময়লা-আবর্জনা ধরতে, ঝাড়ু দিতে ভাল লাগে না।
৩।
বাসার সদস্য সংখ্যা বেশী, একা পারা যায় না।
৪। ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, তোলা, পারা যায় না।
৫। তরকারী কোটা, খাবার শেষে থালা বাসন ধোয়া ইচ্ছা হয় না।
৬। দরজা খোলা, বন্ধ করা, পিয়ন, লোক আসলে কথা কে শোনে।
৭। টুকটাক দোকানে যাওয়া, কে করে।
৮।
নিরবিচ্ছিন্ন টিভি /সিরিয়াল/নাটক দেখা।
৯। ছোট বাচ্চা, মুরুব্বী থাকলে তাদের সহায়তার জন্য।
১০। অফিসে, কাজে যেতে হয়।
নিজে অসুস্হ থাকলে তো কথাই নেই। আরো কত কাজ.......।
এই সকালে নাস্তা লাগবে। রুটি বানাতে হবে- ওহ, বুয়া, বুয়া.....।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।