রাজনৈতিক ঢামাঢোলে কিছু লিখার চেয়ে পড়তে ভাল লাগে ........ তারপরও আবার বুয়া পর্ব নিয়ে বসলাম......
পত্রিকার পাতা খুললেই কাজের মেয়েদের নির্যাতনের নানা কাহিনী দেখি যা অবশ্যই ঘৃন্য কিন্তু তারা ও যে আমার মত আবুলদের পেলে দেখিয়ে দিতে পারে কত ধানে কত চাল তার বর্ননায় আমার এ পর্ব..... আশা করি ভবিষ্যতে সাবধানতার জন্য এ পর্বগুলো আপনাদের ভালো লাগবে।
পর্ব-৩
বুয়া শাশুড়ি আর বুয়া ননদ পর্ব সমাপ্তির পর আমার জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু হলো......আমার ছেলের জন্ম। এবার মা আর শাশুড়ি মা মহা টেনশানে পড়ে গেলেন.. কিভাবে বাচ্চা সামাল দিয়ে আমি অফিস করবো। নতুন বুয়া খোজার কাজে দুজনে লেগে পড়লেন আর এ বুয়া কাজে যেমন ভালো হবে তেমনি বাচ্চাকেও দেখাশুনা ঠিকভাবে করতে পারবে।
মা অনেক খুজে স্কুলের এক মধ্যবয়স্ক আয়াকে বের করলেন যে ঢাকায় চাকরী খুজছে..... যাহোক মাসিক ৩০০০ টাকার বিনিময়ে সে আমার বাসায় যোগদান পত্র দিল।
কিন্তু আমার মনে একটু সন্দেহ উকি দিল.... তার নিজের বাসা ছেলে মেয়ে ফেলে মাত্র ৩০০০ টাকা বেতনে ঢাকায় কেন যাবে? জিঙ্গাসা করতে বললো, তার ঢাকায় চাকরী করার অনেক দিনের শখ তাই। যাহোক আমার এতো ঘাটার কি দরকার.... কাজ হলেই হলো। আমিও তাকে যথারীতি কাজে এপয়েন্ট করলাম।
নতুন বুয়া ভালই কাজে কর্মে আমার ছেলের ও ভালই যত্ন নিচ্ছে কিন্তু সমস্যা হলো বাসায় যেহেতু টি এন্ড টি নাই আমি বাসায় আসা মাত্রই বুয়া আমার মোবাইল দখল নেয় এবং মোটামুটি সারারাতই কথা বলে। কার সাথে এতো কথা বলো জিঙ্গাসা করতেই খুব রেগে গেল....বললো , ছেলে মেয়ে স্বামী সবাইকে রেখে আসছি একটু কি খোজ ও নিতে পাবো না...!!!! আমি বললাম, তাই বলে প্রায় সারারাত কথা বল??? যাইহোক বেশী কথা বাড়ালাম না পাছে আবার বলে কাজ করবো না।
কয়দিন পর আমার কাছে মোবাইল নিয়ে এসে বললো, আমার এক ভাই আমার সাথে দেখা করতে আসবে আপনি তাকে মোবাইলে বাসার ঠিকানা বুঝিয়ে দেন। আমিও যথারীতি বাসার বিষদ বর্ননা সহকারে ঠিকানা দিলাম। একদিন বাসায় ফিরে দেখি বাসায় বিশাল আয়োজন.. রোস্ট.. পোলাউ.. .ফিরনি.... কি ব্যাপার বুয়া এতো আয়োজন কেন? আফা আমার ভাইটা অনেকদিন পরে আসলো তাই একটু ভালো মন্দ রাধলাম..। ঠিক আছে বলে এড়িয়ে গেলাম... কিন্তু না আমার সকল ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে তার সেই কথিত ভাইটি প্রতিদিন আসা শুরু করলো। এভাবেই চলছিল কয়দিন... আমি ও সহ্য করছি, এ দূর্মুল্যে বাজারে নতুন কাজের লোক কোথায় পাব??
এভাবে মাসখানেক যাওয়ার পর আমার হাজব্যান্ড অফিসের কাজে বাইরে গেছে এমন এক বৃহস্পতি বারে বুয়া এসে বললো ..... আফা, আমার ভাই রওনা দিছে সেই আইজ রাতে এখানে থাকবে।
মানে!!!! আমি আতকে উঠলাম.... আমার হাজব্যান্ড বাসায় নেই এখন সম্পূর্ন অপরিচিত লোককে কিভাবে থাকতে দেই বলতেই বুয়াকে মারাত্বক ক্রেজি হয়ে গেল। বুয়া তার যুক্তির ভান্ডার খুলে ধরলো..... তাতে আপনার অসুবিধা কই প্রতি বিস্বতবার রাতে আইবো আর শনিবার চইলা যাইবো। একয়দিন দিনে আইসা তার কামের মেলা খেতি হইছে, ভাইজান তো এখন নাই...আফনের সমস্যা কি... হেই আমি গেস্ট রুমে থাকুম...ইত্যাদি.... ইত্যাদি.... । হেই আমি গেস্ট রুমে থাকুম মানে !!!!!! ডালমে কুছ কালা হায়......... আস্তে আস্তে বুয়াকে মধুর আলাপে মুগ্ধ করে...কিছুটা জেরা করে ঘটনাটা জানতে চাইলাম.. লোকটি তার কেমন ভাই.. কি এমন দরদ বোনের প্রতি ...কেন প্রতিদিন দেখা চাই..... কেন এখন রাতেও থাকা চাই.....???
আস্তে আস্তে রহস্যের জট খুলতে লাগলো ..... আগে বুয়ার প্রতিবেশী ছিল এবং এখন বুয়ার এটি দ্বিতীয় স্বামী কিনতু কারও ফেমিলি জানে না। তাই বুয়া দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বুদ্ধি করে ঢাকায় এসেছে কারন সে লোক ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করে....।
আমি খুব ক্ষুদ্ধ হলাম.. ছি: বুয়া, তোমার ছেলে মেয়ে স্বামীর সাথে এভাবে প্রতারনা? আমার বাসায় এ অন্যায় করে যাচ্ছো দিনের পর দিন? বুয়া আমার সাথে তেড়ে আসলো... ইস্ কি এমন অন্যায় রে... আমরা কিছু করলেই দোষ..... আফনাগো কাহানি কি জানি না.. এই বলে তার অভিঙ্গতার ঝাপি খুলা শুরু করলো যাবতীয় নোংরা কাহিনী দিয়ে... ইত্যাদি.. ..ইত্যাদি.... .। আমি বুঝলাম এর বেশি কিছু বললে পরে না দুই প্রেম দেওয়ানা আমাকে কিছু করে বসে... বাসায় একা বাচ্চা নিয়ে আছি.....। তাই পত্রপাঠ বিদায় দিলাম আর ৪র্থ পর্বের শেষে আমার ৫ম পর্বের দিকে পা বাড়ালাম আর কি.....
আমার আগের পর্ব ৪র্থ ......
Click This Link
পরের বর্ননার অপেক্ষায় থাকুন...যদি ধৈর্য্য থাকে আরকি....
(বি:দ্র: পুরান ছবিটাই দিতে হলো কারন কেন যেন নতুন ছবি আপলোড করতে পারছিনা)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।