= হ্যাঁলো..... হ্যাঁলো..... রাজীব......
= আব্বু..... কেমেন আছো?
= ভালো। কি করছিস?
= পড়ছিলাম আব্বু।
= তোর গলার স্বর এমন লাগে কেন? শরীর ভালো তো?
= ভালো আছে। ঘুমাচ্ছিলাম তো.... তাই....
= ও! ভালো করে পড় বাপ...... অনেক বড় হওয়া লাগবে। দোয়া করি অনেক বড় হ.....
= দোয়া করো আব্বু.....
মহব্বত আলী মিয়া।
মফস্বল শহরের একজন মুদি দোকানী।
রাজীব আলী মিয়া, মহব্বত আলীর বড়পুত্র। ছেলেক নিয়ে অনেক স্বপ্ন মহব্বত আলীর। এইস. এস. সি পাশের পর ছেলে জিদ ধরল শহরে গিয়ে পড়াশোনা করবে। মহব্বত আলীর তেমন সামর্থ্য না থাকা স্বত্তে ও তিনি কষ্ট করে ছেলেকে শহরে পাঠালেন পড়াশোনা করতে।
ছেলে শহরের নাম করা এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হল। সহপাঠিরা সব ধনীর দুলাল-দুলালী। কেউ কেউ নিজস্ব গাড়ী নিয়ে ক্লাস করতে আসে। কেউ কেউ আসে আড্ডা দিতে।
আড্ডাবাজ এক গ্রুপের সাথে পরিচয় হল রাজীব আলীর।
সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে ধুমসে আড্ডা। আড্ডায় বসে নতুন নতুন মুখের সাথে পরিচয় হয় রাজীবের, যে রাজীব সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারতোনা সে সিগারেট খাওয়া শিখে।
রিফাত, গ্রুপের সবচেয়ে ধনী বাপের ধনী ছেলে। আগামীকাল তার জন্মদিন। সবাই নিজের নিজের মত গিফট কিনছে।
রাজীব দুশ্চিন্তায়...... কি করবে, কি কিনবে, টাকা কোথায় পাবে?
অবশেষে মনে পড়লো বাবা বই কেনার জন্য ৩০০০ টাকা দিয়েছিল। বাসা থেকে তাড়াহুড়া করে টাকা নিয়ে সোজা এ্যালিফ্যান্ট রোড চলে গেল রাজীব। ১০০০ টাকা দিয়ে সিগারেট বক্স কিনলো একটা। বড়লোকের ছেলের পার্টি, দামী কাপড় পরতে হবে। ১০০০ টাকা দিয়ে নিজের জন্য একটা শার্ট কিনলো রাজীব।
পরদিন KFC তে-
রাজীব দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকছে রাজীব, কয়েকটি টেবিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু ছেলে মেয়ে বসা, পরিচিত কোন মুখ চোখে পড়লো না। চারপাশটা ভালো করে চোখে বুলিয়ে মোবাইলে রিফাতের নাম্বার ডায়াল করতে করতে ভেতর থেকে বের হয়ে এলো রাজীব।
রাজীব: হ্যালো রিফাত, তোমরা কই?
রিফাত: তুমি কই?
রাজীব: আমি তো KFC তে, এখানে হওয়ার কথা ছিল না পার্টি?
রিফাত: ছিল, but, ভ্যানু চেন্জ হইছে। আমার GF ওখানে যেতে চাই না। আমরা HELVASIA তে, তুমি চাইলে আসতে পারো।
রাজীব: ok, আমি আসছি।
HELVASIA কি, কোথায় কিছুই তো জানে না ও। এখন উপায়!
রিকশা ডাকলো রাজীব,
রাজীব: HELVASIA যাবা মামা?
রিকশাওয়ালা: এইডা কই?
রাজীব: (আরেক রিকশাওয়ালাকে) ওই খালি....... HELVASIA চিনো?
রিকশাওয়ালা: হ চিনি, ২০ টাকা ভাড়া লাগবো।
রাজীব: আসো তুমি মিয়া।
HELVASIA-র ভেতরে অনেক মানুষ।
কিছু কিছু পরিচিত মুখ, রাজীব চারপাশে তাকাচ্ছে, নিদৃষ্ট একটা মুখ খুজছে।
রিফাত, The Birthday Boy, অনেক গুলো সুন্দরীমন্ডিত হয়ে দাড়িয়ে। রাজীব এগিয়ে গেল। বুকের মধ্যে মৃদু কাঁপুনি, কেমন জানি ভয় ভয় লাগছে। এতগুলো সুন্দরী মেয়ে এত কাছ থেকে আগে কখনো দেখেনি ও।
রিফাতের জন্মদিনের পার্টিতে এন্যার সাথে পরিচিত হল রাজীব। কথায কথায় জানতে পারলো, কিছুদিন আগে ব্রেকআপ হয়েছে তার। কিছুটা সমবেদনা জানায় রাজীব। এ্যানা তাকে ফ্রেন্ডশীপের অফার দিল, মোবাইল নাম্বার ও আদান-প্রদান হলো।
বন্ধু, রাজীব এ্যানার খুব ভালো বন্ধু, এ্যানার কষ্টে সবসময় পাশে আছে রাজীব।
কোথাও যাওয়ার দরকার হলে রাজীবকে সাথে নেয় এ্যানা। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, এটা আমার BF।
এদিকে এই ভালো লাগার জন্য সে সেমিষ্টার ফি না দিয়ে, আজ আলমাস, কাল KFC তে ঘুরতে থাকে এন্যাকে নিয়ে।
মাস দুয়েক পরে, রাজীব জানতে পারে এ্যানার বাবা একজন রিটায়ার্ড অফিসার। সংসারের চাকা চলে তো চলেনা।
এ্যানার সম্পূর্ণ খরচ চালায় এ্যানার ছোট খালা। এবং শুধু রাজীব না. আরো BF আছে তার।
এতকিছু জানার পর ও এ্যানার কাছ থেকে সরে আসতে পারেনা রাজীব, কিজানি এক অদৃশ্য বাঁধন..... তার মনে হয় একদিন সব ভুল বুঝতে পেরে তার কাছে ফিরে আসবে এ্যানা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।