পরিচালক: রবার্ট শোয়েন্টকে (টাইম ট্রাভেলার্স ওয়াইফ, ফ্লাইটপ্ল্যান)
কুশীলব: ব্রুস উইলিস, মেরি লুই পার্কার, মর্গ্যান ফ্রিম্যান, হেলেন মির্যান প্রমুখ।
আইএমডিবি রেটিং: ৭.৩/১০
ডিউরেশন: ১১১ মিনিট
আমি হিংস্র ধরণের মানুষ, নৃশংস মারপিটওয়ালা মুভি দেখতে ভালবাসি। আর এধরণের বিনোদনের জন্য ব্রুস উইলিস এক নির্ভরযোগ্য নাম, সেই ১৯৮০ সাল থেকে। ডাই হার্ড দেখে তার যে ফ্যান হলাম, তারপর সেভেন মাঙ্কি'স বা টিয়ার্স অফ দ্য সান, যাই দেখালো ব্যাটা (ফিফথ ইলিমেন্ট বাদে) সবই চোখ (মনের) বন্ধ করে গিললাম।
তো ভদ্রলোকের (?) নতুন মুভি হল এই 'রেড'।
সিআইএ'র ফাইলের উপরের ছাপ্পর অনু্যায়ী আরইডি 'রেড' মানে রিটায়ার্ড এন্ড এক্সট্রিমলি ডেঞ্জারাস। আমি একটা রিভিউতে এইটুকু পরেই দেখতে বসে গেলাম। বিনোদন গ্যারান্টিড।
সেই ডাই হার্ডের ব্রুস উইলিস। বেশ অনেকটা বুড়িয়ে গেছে।
অবশ্য চরিত্রটাও সেরকমই। ফ্রাঙ্ক মোযেস, রিটায়ার্ড সিআইএ অপারেটিভ, যৌবনকালে যে পুরো পৃথিবীকে নাচিয়ে ছেড়েছিল। আপাতত তার কাজ মাসে মাসে সরকারি চেক সংগ্রহ করা আর পেনশন অফিসের এজেন্ট সারাহ (মধ্যবয়স্ক অখ্যাত অভিনেত্রী )'র সাথে ফোনে গুটুরগুটুর করে রসালাপ করা। একদিন তারা ঠিক করে ফেলল কোথাও এক জায়গায় দেখা করবে।
তো ব্রুস উইলিস মুভিতে যা হয়, এই প্রথম মিনিট পাঁচেক সবই ভাল চলছিল, তারপর ঢিশা ঢিশা ঢিশা।
সিআইএর ভেতরের কেউ একজন ফ্রাঙ্ক মোযেসকে খুন করতে চায়। কিন্তু সিনেমা তো মাত্র শুরু। একা হাতেই এক প্লাটুন সোয়াট অফিসারকে শুইয়ে দিয়ে যথারীতি 'ব্রুস হিটস দ্য রোড'। সাথে সেই ফোনসঙ্গিনী সারাহ। আর দশটা নায়িকার মত সেও শুরুতে সামান্য হাতপা ছোঁড়াছুড়ি করে সব মেনে নিল।
শুধু তাই না মহিলা এই সত্তর বছর বয়স্ক ছিলাচান্দি পলাতক এজেন্টের প্রেমেও পড়ে গেল।
তারপর আর কি। নায়িকারে নিয়া মোযেসের ক্রসকান্ট্রি ড্রাইভ। পুরান বন্ধু আর পুরান শত্রুদের কাছে গিয়ে লবিং করে দল ভারী করা। পুরান বন্ধুগুলাও কিন্তু কম যায় না।
মর্গান ফ্রিম্যান আর হেলেন মির্যান মেশিনগান আর স্নাইপার রাইফেল নিয়ে ছুটাছুটি করছে, জাস্ট চিন্তা করেন অবস্থাটা! এদিকে সিআইএ-ও বসে নাই। তারা এক তরুণ ড্যাশিং অ্যাসাসিনকে (কার্ল আরবান) দায়িত্ব দিল মোজেসের কল্লা নামায় আনতে।
তারপর এখানে ওখানে মার খেতে খেতে আর সুযোগ মত মার দিতে দিতে মোজেসের দল উদঘাটন করে যে কেন সিআইএ হঠাৎ হন্যে হয়ে পড়লো তাদের নিজেদেরই পুরনো এজেন্টদের খতম করতে। শেষমেষ দেখা গেল, সব ঝামেলার মূলে এক রাজনৈতিক নেতা (হ্যাহ এটা যেন আমরা জানি না), যে মুছে ফেলতে চায় তার অতীতের এক কেলেঙ্কারিয়াস ইতিহাস।
মোটামুটি জমজমাট ফর্মুলা মুভি।
তবে চোখমুখ শক্ত করা অ্যাকশন মুভি না কিন্তু, অ্যাকশন-কমেডি যাকে বলে। ডায়লগগুলা মোটামুটি ক্লিশে, বিশেষ করে পাঞ্চগুলা প্রেডিক্টেবল, তয় এগুলা মুভিটাকে বোরিং লাগতে দেয় নাই। কিন্তু ক্লাইমেক্সটা যাকে বলে জমলোনা। পরিচালক ভদ্রলোক এটা করার আগে টারান্টিনোরে একটা ফোন মারলে কি তার জাত চলে যেত? ব্রুস উইলিসকে একটু কোল্ড লাগসে। নতুন করে কিছু বলার নাই।
সেই একই ডাই হার্ড মার্কা স্টিল বডি নায়ক। আর নাইকার চোখ বড় বড় করে তাকায় থাকা ছাড়া তেমন কোন রোল ছিল না। তবে তার একটা জিনিস ভাল, কথা কম বলে। আর সামান্য সুইটু আছে। তাই উদোর পিন্ডি টাইপ নাইকা হয়েও পেইন দিয়েছে কম।
হেলেন মির্যান ভাল করেছেন। বুড়ো রাশান এজেন্টের সাথে তার মিষ্টি মিষ্টি ভাব-ভালবাসা দেখতে ভালই লেগেছে। মর্গ্যান ফ্রিম্যানকেও ভালই লেগেছে, কিন্তু এই ক্যারেক্টারটাকে বাড়তে দেওয়া হয় নাই। আসলে বাড়ার মত জায়গাও ছিল না।
ট্রেলার দেখতে পারেন এখানে।
ভুয়া ট্রেলার।
মুভি দেখে আমি মজা পাইসি। ভাল টাইম পাস মুভি।
রেটিং দিলাম ৭/১০।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।