আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাস্তবতার আলোকে সচেতনতার রম্যপ্রকাশ

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

আপার বাবুটার হাতে সেইদিন দুইটা ছোট্ট ছোট্ট গাড়ী দেখে মারাত্মক মাত্রায় লোভ হল। আপাকে জিজ্ঞাসা করলাম কোথা থেকে কেনা। আজকে তাই দুপুরের পর ওখানে গেলাম। হাতিরপুল কাঁচাবাজারের পর ইস্টার্ন প্লাজার আগে যে হল মার্কের দোকানটা ঢুকলাম গিয়ে সেখানে। এইসব খেলনাপাতির ভাণ্ডার হল দোতলায়।

গিয়ে দেখলাম মাত্র তিন রঙের পাঁচটা গাড়ী আছে মাত্র। একটা গাড়ীও আমার মনে ধরল না। আমি আর আছে কিনা জানতে চাইলে ওরা ডানে-বামে মাথা ঝাঁকাল। এইসব সেলসম্যানরা খালি জিনিস কোনরকমে গছিয়ে দিতে সদা তৎপর থাকে। একপর্যায়ে আমি বললাম, "ধরেন, আপনার এই পাঁচটা গাড়ী কেউ কিনে নিয়ে গেলো; তখন তো আরেকটা নতুন প্যাকেট ঠিকই বের করবেন।

তো এটা এখনই বের করে ফেলেন না, আর ধরে নিন এই পাঁচটা নাই। " ওরা বলল, "আরে ভাই, এই তিনটা কালারও তো সুন্দর, বাচ্চারা পছন্দ করবে। " আমি তখন ওদের কি করে বলি যে গাড়ীগুলো আমি নিজের জন্যই কিনতে আসছি। কি আর করা, গাড়ীগুলার কালার আমার 'কাল্পনিক' বাচ্চারা পছন্দ করবে না এই অজুহাত দেখায় একটা দুঃখ দুঃখ ভাব করে বের হয়ে আসলাম। আমার ৭ টাকা বাস ভাড়ার পুরোটাই বাসওয়ালার পকেটে গেলো।

আমার কোন লাভ হইলো না। ফেরার সময় শাহবাগ পর্যন্ত হেঁটে এসে বাসে উঠলাম। মাঝে একটু আজিজ মার্কেটের নিচতলার এক দোকানে ঢুঁ মারলাম একাত্তরের একটা বইয়ের খোঁজে। ওনারা দামী দামী বিদেশী বই রাখেন; এইসব দেশি, সস্তা দামের বইগুলো রাখেন না মনে হয়। দোকানের যতদূর চোখ যায় শুধু ভিনদেশী ভাষার সিরাম সিরাম সব বই।

যাইহোক, বাসে উঠে এক ছেলের পাশে বসলাম। "ঐ শোন, ওরে কাইলকা দেখলাম হৃদয় নামের এক পোলার লগে বেইলি রোডে। তাইতো কই কাইলকা অরে ফোনে পাই নাই ক্যান। আমি পরে ঐ পোলার লগে কথা কইছি। ওরে কইয়া দিছি যে, আমার গার্লফ্রেন্ডের আশেপাশে যেন না ঘুরে।

নাইলে অর খবর করুম কইয়া দিসি। আমারে চিনে না হালায়। " আরো অনেক কিছু বলতেছিল ছেলেটা। সব ফাঁপরটাইপ কথাবার্তা। বয়স কম, হয়তো কলেজে পড়ে।

আমার এখন নেমে পড়ার টাইম হইছে, হলের গেট কাছায় আসতেছে। ভাবলাম বলেই যাই তা না হলে ছেলেটা বিপদে পড়তে পারে। তাই ওকে ডেকে বললাম, "মোবাইলটা এই কানে (ওর আমার সাইডের কানে) দাও, জানালার বাইরে দিয়ে মোবাইল টান মেরে নিয়ে যেতে পারে। " ও পড়িমরি করে মোবাইলটা ঐ কান থেকে বাম কানে ঠেকাল। তারপর আবার সেই একই কাজ।

নেমে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ও ফাঁপর মেরেই যাচ্ছিলো। ফজলুল হক মুসলিম হলের ভিতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমি ভাবছিলাম, সম্পর্ক জিনিসটা আজকাল এতো সস্তা হয়ে গেছে! এইসব সস্তা সম্পর্ক কি আমাদের জীবনটাকে সস্তা বানিয়ে দিচ্ছে না? আমি না বললে হয়তো ছেলেটা জানালার পাশেই ফোনটা রেখে কথা বলতে থাকতো। ঈদ আর হরতালের আবহে ঢাকা শহর এখনো জন দ্বারা আকীর্ণ হই হই করেও পুরোপুরি হয়ে উঠতে পারেনি। এমন সময় ফাঁকা রাস্তার সুযোগে ছিনতাইকারীরা আরো বেশী তৎপর হয়ে উঠে। এমনও অনেক সময় হয়েছে আমি শুনেছি, জানালা দিয়ে টান মেরে নিয়ে যাওয়ার সময় নাকি কানসহ ছিঁড়ে নিয়ে গেছে।

তাই সবার প্রতি জ্ঞাতব্য, রাস্তা ফাঁকা হোক আর লোকে টইটুম্বুর থাকুক বাসের জানালার পাশের সিটে বসার ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। মেয়েরা তাদের কানের দুল আর সবাই তাদের মোবাইলকথনের ব্যাপারে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.