আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অধঃপতন যখন সবখানেই

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে.

চরম এক অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে দেশ যাচ্ছে । আর আমরা কাবাব মে হাড্ডি হচ্ছি প্রতিনিয়ত । জীবন এর সব চাওয়া পাওয়া সব কিছু তখন ফিকে হয়ে যায় যখন দেখি নানা রকম অরাজকতার মধ্যে বাস করছি । তখন নিজের কাছেই নিজে ছোট হয়ে যাই । মনের শান্তি বলে যে একটা কথা আছে তা তখন থাকে না ।

অথচ দেখেন, গত ১৫ বছর আগেও এরকম অবস্থা ছিল না । দেশ এর জনসংখ্যা এখন নাকি ১৬ কোটি ৪৪ লাখ । এত বিপুল জনসংখ্যার এই দেশ এ আমরা বাস করছি নানারকম সমস্যা নিয়ে । একটা শেষ হয় তো আর একটা এসে ধরা দেয় । মানুষ যত না বেড়ে চলছে দেশে ততই সুযোগ সুবিধা কমে যাচ্ছে ।

আজকাল পত্রিকা খুলতেই কেমন যানি লাগে । মনে হয় খামাকা কেন পড়বো । সব তো একই খবর । আসলেই তাই । এসব খবর পড়তে পড়তে এখন আর ভাল লাগে না ।

কোন বয়স্ক এক লোককে যদি জিজ্ঞেস করেন যে চাচা, এখনকার সময় ভাল নাকি আপনাদের সময় ভাল ছিল । সে নিঃসন্দেহে তাদের সময়কে ভাল বলবে । কারণ তখন দেশ এ সুযোগ সুবিধা কম থাকলেও শান্তি ছিল অনেক । এখন যেটা পাওয়াই যায় না । সময় এর সাথে সবকিছু বদলে যাচ্ছে আর সাথে আমরাও বদলাচ্ছি ।

আর এ বদলানোটা হচ্ছে বেশ তারাতারি । যেটা আমাদের জন্য এখন বিশাল সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে । একটা ব্যাপার ভেবে দেখেন - আগে কোন মুরুব্বি গোছের কেউ অথবা বাসায় শিক্ষক আসলে আমরা তার কুশলাদি বিনিময় করতাম । নানারকম খোজ খবর নিতাম । কিন্তু এখন কি হয়? তার সাথে সামান্য পরিমাণ সৌজন্যবোধ টাও আমরা এখন দেখাই না ।

তাদের সালাম দিয়ে কথাও বলি না । এ কেমন ভদ্রতা ? নাকি এটাই এখনকার ইস্টাইল !!! আর ভদ্রতা দেখালেও সেখানে লুকিয়ে থাকে হয়ত কোন উদ্দেশ্য হাসিল করার মন্ত্র । গত কয়েকদিনের পত্রিকা খুল্লেই হয়ত আপনাদের চভখ এ পড়বে কিছু কিছু ঘটনার কথা । যেমন চট্টগ্রাম এ খুন হয়েছে বেসরকারি ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী, আবার বেশ কিছু খুন হয়েছে পরকীয়াতে বাধাদানের কারণে । মানুষ এর মধ্যে যে একটা মনুষ্যবোধ থাকার কথা সেটা আসলেই হয়ত আমরা হারাতে বসেছি আমাদের নিজেদের ভুলেই ।

আগে মেয়েরা ঘর থেকে বের হতে পারত না রাতে । তাদের মধ্যে একটা সংকোচ কাজ করতো । বের হবে কি হবে না এটা ভাবতে ভাবতেই পার করে দিত সময় । কিন্তু এখন এই অবস্থা বদলে গিয়েছে । এখন বাবা আর মায়ের সামনে মিথ্যা কথা পর্যন্ত বলেও ছেলে মেয়েরা বের হচ্ছে ।

পরিবারের মধ্যে যে একটা শক্ত বন্ধন তৈরি হওয়ার কথা সেটা একদমই পাওয়া যাচ্ছে না এখন । পরিবারের সন্তানটিও কেমন বন্ধুদের সাথে মিশছে এসব দেখার দ্বায়িত্ব তাদেরই । সেই সন্তান নেশা করে কি না বা কোন অপরাধের সাথে জড়িত কি না এসব জানা একটা পরিবারের জন্য অবশ্য পালনীয় । পরিবারের সন্তান কই যাচ্ছে কে কি করছে কোন কিছুই বাবা মায়েরা জানছে না । এতে তার সন্তান কি করছে , কই যাচ্ছে , রাতে কোথায় আছে কেউ কিছু বুঝতে পারছে না ।

হঠাৎ কোন অঘটন ঘটলে তখন এদের হাহুতাস করা ছাড়া আর কোন গতি থাকে না । আসলে আমরা আমাদের ছোট ভাই বোনকে কি শিক্ষা দিচ্ছি ? তাদের মুল্যবোধ টাই বা কি ভাবে গড়ে উইছে ? এসব এর খবর ও আমরা এখন রাখি না । এত অধঃপতন হওয়ার কি কারণ হতে পারে ?? বাসা থেকে যখন কোন মেয়ে বা ছেলে বের হচ্ছে বাহিরে তখন কেউ খেয়াল করছে না যে তারা কি ভাবে বের হচ্ছে । একটা মেয়ে যদি গলায় ওড়না কোন মতে দিয়ে (ওড়না পড়ে যায় এমন ভাব), টাইট জিন্স পড়ে, মহা মাঞ্জা মেরে বাসা থেকে বের হয় তখন আমাদের মা বাবাদেরই উচিত তাদের কে ভাল খারাপ এর দিকটা সুন্দর ভাবে তুলে ধরা । কিন্তু মহা অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে যে অনুকরণ করতে করতে আমরা এমন পর্যায় গিয়েছি যে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ সেই বিচার কয়ার ক্ষমতা আমাদের এখন বলতে গেলে নাই ।

সবকিছু যদি indian দের মত কপি করতে যাই তাহলে আমাদের বলে তো কিছু থাকবে না । আমরা হয়ত বুজতেই পারি না যে, তাদের কাছে সেটা সহজ সেটা আমাদের কাছে সেটা সহজ নাও হতে পারে না । একটা ছেলের কথা ধরেন এখন । তাদের এখন প্যাণ্ট পড়ার ধরন দেখলেই নিজের কাছে অবাক লাগে । যেন পিছন দিক থেকে পরে যাচ্ছে এমন অবস্থা ।

একটা সভ্য দেশ এ এভাবে চলতে পারে না । এমন কি আমি এটা অ দেখেছি এক ছেলে T – shirt পরেছে একটা । সেখানে লেখা ৪ অক্ষরে (f.......k ) !!! সেই ছেলে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কি কেউ দেখে নাই তাকে বা দেখলেও তাকে এ ব্যাপারে সাবধান করে দেয় নাই ??? generation gap এখন যেই পর্যায় গিয়েছে এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সামনে মহা বিপদ আসন্ন । ইদানিং দেখা যাচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক নিয়ে অনেক কাহিনি । সম্পর্ক ভাংতে যেয়ে এখন খুন পর্যন্ত করা হচ্ছে ! এসব এর দায়ভার কে নেবে ? আবার তাদের নিজেদের শারীরিক মেলামেশার ভিডিও করে প্রচার করে দেয়া হচ্ছে ।

অথচ এসব হওয়ার আগে বিন্দু মাত্র সেই মেয়েটা জানতে পারছে না আবার অনেকে জেনেও কিছু বলছে না । কোন এক ম্যাগাজিনে এ পড়েছিলাম এক ইউনিভার্সিটির সুন্দরী ছাত্রী কি ভাবে এসব ফ্রী সেক্স এ জড়িয়ে যায় তার সহপাঠির সাথে । তাও আবার সেই সহপাঠির কাছ থেকে নোট পাবে এই আশায় । চিন্তা করেন , কোথায় যাচ্ছি আমরা ??? ইদানিং ছেলের হাতে বাবা খুব হচ্ছে । এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে ।

সেই ছেলে তার পরিবার থেকে কি শিক্ষা পেল ছোটবেলা থেকে । কি এমন দরকার ছিল যে তাকে এমন পাশবিক কাজ বেছে নিতে হবে?? খুন করে আবার তারা ক্যামেরার সামনে নায়ক বেশে দাঁড়িয়ে অকপটে স্বীকার করে নিচ্ছে যে সে খুন করেছে । কোন অনুশোনাও নাই তাদের মধ্যে । অনেকদিন থেকেই মাথায় একটা কথা ঘুড়পাক খাচ্ছে । না বলেও পারছি না ।

সেটা হল - আমাদের মধ্যে কি সেক্স করার প্রবনতা বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন কে দিন ? তাই যদি হয় তাহলে এমন অনেক ছেলে আছে যারা বিয়ের পর তার স্ত্রী কে সুখ দিতে পারে না । তাদের নাকি ক্ষমতা থাকে না দেয়ার । অথচ সেই ছেলেই বিয়ের আগেই হয়ত সমানে অন্য মেয়েদের সুখ দিয়ে বেড়িয়েছে । তাহলে কেন এরা বিয়ের পর পারে না ?? এটা কি আল্লাহ এর পক্ষ থেকে শাস্তি ? দেশ নাকি উন্নয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে । এমন কথা শোনা যায় প্রতিনিয়ত ।

কিন্তু কোথায় আছে সেই উন্নয়ন ? সব কিছুতেই যেখানে কিছু না কিছু নষ্ট একটা ব্যাপার কাজ করছে সেখানে উন্নয়ন হবে কি করে ? কেউ কারো ভাল তো দেখতেই পারে না এখন । সবাই শুধু অপরের দোষ ধরতেই যেন ব্যস্ত । দেশ এর সবাই যদি একসাথে একজোট হয়ে কাজ করত দেশ এর স্বার্থেই তাহলে হয়ত দেশ এর জন্য ভাল কিছু করা অসম্ভব ছিল না । কিন্তু আফসস আর হতাশা নিয়েই বলতে হয় কেউ নিজের উন্নয়ন করা ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবে না যে একটা স্বাধীন দেশ এ কখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.